সিলেটের শমশেরকে বিএনপির দ্বায়িত্ব থেকে সরানো হচ্ছে!

    0
    226

    আমারসিলেট24ডটকম,ফেব্রুয়ারীঃ সিলেটে ইলিয়াস গ্রুপকে দুর্বল করে নিজের হাতে কর্তৃত্ব নিতে গিয়ে উল্টো সবকিছু হারাতে বসেছেন শমসের মবিন চৌধুরী। সিলেট সদর উপজেলায় “অপরিচিতদের” দিয়ে “পকেট” কমিটি গঠনের জেরে তাকে প্রত্যাহারের দাবিতে সিলেটে কয়েকদিন ধরে আন্দোলন চলছে।
    গত কয়েকদিন আগেই কেন্দ্র থেকে “বিতর্কিত” ওই আহ্বায়ক কমিটি স্থগিতের সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে জানা গেছে। দলের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বিদেশে থাকায় তাৎক্ষণিকভাবে এ সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়নি।

    মির্জা ফখরুল দেশে ফেরার পর এখন শমসের মবিন নানা টালবাহানা করে সিদ্ধান্ত বিলম্বিত করতে চাইছেন বলে সূত্র জানায়। এক্ষেত্রে সিলেট সদর উপজেলা নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা হয়ে যাওয়ায় বিষয়টি ঢাল হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

    গত ৪ ফেব্রুয়ারি সিলেট সদর উপজেলার ১৩৬ সদস্যের আহ্বায়ক কমিটি গঠনের পর থেকে শমসের মবিনের বিরুদ্ধে ক্ষোভ দেখা দেয় বিএনপিতে। শমসের মবিনের বিরুদ্ধে সদর উপজেলার সদ্য সাবেক কমিটি প্রকাশ্যে মিছিল-সমাবেশ করে তাকে প্রত্যাহারের দাবি তোলে। তারপরও আগে উপজেলা নির্বাচনে দলের প্রার্থী বাছাই নিয়ে তাকে নিয়ে সিলেট বিএনপিতে অসন্তোষ দেখা দেয়।

    এছাড়া তারেক রহমানের সঙ্গে টেলিসংলাপের বিস্তারিত প্রকাশ হয়ে যাওয়ার পেছনেও তার হাত ছিল বলে অভিযোগ রয়েছে। অবশ্য পরিস্থিতি নিজের নিয়ন্ত্রণে নিতে শমসের মবিন এখনও চেষ্টা করছেন বলে তার ঘনিষ্ঠ সূত্র জানিয়েছে।

    এর অংশ হিসেবে ‘কেন্দ্রীয় নেতার বিরুদ্ধে কটূক্তির প্রতিবাদে’র আড়ালে দলের সহযোগী সংগঠনের কিছু নেতাকর্মীকে মাঠে নামিয়েছেন। জেলা বিএনপির কয়েকজন নেতা শমসের মবিনের হয়ে মাঠে নামলেও অধিকাংশ নেতাই নিশ্চুপ রয়েছেন।

    এ ব্যাপারে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জেলা বিএনপির এক নেতা বলেন, ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের আগে আন্দোলনের সময় সিলেট বিএনপির দীর্ঘদিনের বিভেদ ক্রমাগত কমে আসছিল। প্রায় সবক’টি গ্রুপ ও উপ-গ্রুপ সাধ্যমতো ঐক্যবদ্ধভাবেই রাস্তায় নামে। সদর উপজেলা কমিটি নিয়ে ফের বিভেদ চাঙা হয়েছে।

    মহানগর বিএনপির এক নেতা  বলেন, সিলেট-১ (সদর) আসনে বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে তার (শমসের মবিন) নাম রয়েছে। এ অবস্থায় তিনি এ আসনের অন্তর্ভুক্ত মহানগর ও সদর উপজেলা কমিটি নিয়ে ভাববেন, এটাই স্বাভাবিক।

    এটা করতে গিয়ে তিনি উল্টো দলের ত্যাগী ও নিবেদিত নেতাকর্মীদের দূরে ঠেলে দিলেন। এ অবস্থায় তার বিরুদ্ধে আন্দোলনে দলের নীতিনির্ধারণী পর্যায় থেকে স্থানীয় পর্যায়ের অনেকেরই সম্মতি রয়েছে বলে জানান ওই নেতা। জেলা ও মহানগর বিএনপির একাধিক নেতা জানান, দু’দিন আগে দলীয় শীর্ষ পর্যায় থেকে সিলেটে দলের সাংগঠনিক কার্যক্রম থেকে দূরে সরে থাকতে শমসের মবিনকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

    এদিকে শমসের মবিনের বিরুদ্ধে চলমান প্রকাশ্য আন্দোলনে নেতৃত্বদানের জন্য সদর উপজেলার সদ্য সাবেক ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শহীদ আহমদ ও সাধারণ সম্পাদক তারেক কালামকে শো-কজ করা হয়েছে বলে জানা গেছে। জেলা বিএনপির পক্ষ থেকে তাদের শো-কজ করে তিনদিনের মধ্যে জবাব দিতে বলা হয়েছে।

    এর মধ্যে গত বৃহস্পতিবার বিকেলে নগরীর কোর্ট পয়েন্টে সদর উপজেলার বিক্ষোভ সমাবেশে যথারীতি উপস্থিত থেকে বক্তব্য রেখেছেন তারা দু’জনে। যুক্তরাজ্য থেকে ফিরে এদিন সদর উপজেলা বিএনপির বিলুপ্ত কমিটির সভাপতি শাহ জামাল নুরুল হুদা এ সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন। অবশ্য এর আগে পুলিশি পাহারায় শমসের অনুসারী সদর উপজেলার নবগঠিত আহ্বায়ক কমিটি নগরীতে আনন্দ মিছিল করে।

    শমসের মবিনবিরোধী বিলুপ্ত কমিটির নেতারা বলছেন, দলের দুর্দিনের পরীক্ষিত ও মামলা-হামলায় জর্জরিত নেতাকর্মীদের বাদ দিয়ে তিনি বসন্তের কোকিল দলছুট ও সদরের বাসিন্দা নয় এমন ব্যক্তিদের সমন্বয়ে পকেট কমিটি গঠন করে দলকে ধ্বংসের পথে ঠেলে দিয়েছেন।

    এতে আসন্ন উপজেলা নির্বাচনসহ সরকারবিরোধী আন্দোলনে নেতিবাচক প্রভাব পড়ার আশঙ্কায় দায়িত্ব পালনে নিরপেক্ষ ভূমিকা পালনে ব্যর্থতার অভিযোগ তুলে তারা ফের শমসের মবিনকে সিলেটের দায়িত্ব থেকে প্রত্যাহারের দাবি জানান বলে জানায় সমকাল পত্রিকা।