রাজধানীতে শনিবার হেফাজতের মহাসমাবেশ চলাকালে একুশে টিভির স্টাফ রিপোর্টার নাদিয়া শারমিনসহ বিভিন্ন গণমাধ্যম কর্মীদের ওপর হামলার প্রতিবাদে রোববার মানববন্ধন করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের ছাত্রছাত্রী ও শিক্ষকরা।
অপরাজেয় বাংলাদেশের পাদদেশে রোববার সকাল ১০টা থেকে প্রায় ঘণ্টাব্যাপী মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
এ সময় ‘বিভাগের প্রাক্তন শিক্ষার্থী ও একুশে টেলিভিশনের স্টাফ রিপোর্টার নাদিয়া শারমিনসহ গণমাধ্যম কর্মীদের উপর হেফাজতে ইসলাম ও মৌলবাদীদের পৈশাচিক হামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ সমাবেশ’ শিরোনামে কালো ব্যানার বহন করা হয়।
মানববন্ধনে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা কালো ব্যাজও পরিধান করেন।
সাংবাদিক নাদিয়া শারমিনসহ বিভিন্ন গণমাধ্যম কর্মীদের ওপর হামলার প্রতিবাদে সাংবাদিক সমাবেশ মঙ্গলবার
একুশে টিভির নারী সাংবাদিক নাদিয়া শারমিনের ওপর হেফাজতের হামলার প্রতিবাদে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন ও ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন মঙ্গলবার প্রতিবাদী সমাবেশের ডাক দিয়েছে।
মঙ্গলবার সকাল ১১টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এ প্রতিবাদী সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে।
রোববার সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বাংলাদেশ নারী সাংবাদিক কেন্দ্রের ‘সাংবাদিক নাদিয়া শারমিনের ওপর হেফাজতে ইসলামের হামলার প্রতিবাদে’ আয়োজিত মানববন্ধনে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি ইকবাল সোবহান চৌধুরী এ ঘোষণা দেন।
এ সময় তিনি হামলার নিন্দা জানান।
ইকবাল সোবহান চৌধুরী বলেন, “কোনো রাজনৈতিক সংবাদ পরিবেশন করতে গিয়ে যদি আমরা রাজনৈতিক নেতাদের কাছ থেকে নিরাপত্তা না পাই, তবে তাদের সংবাদ পরিবেশন বর্জন করবো। আমরা যদি নিজেদের নিরাপত্তা না পাই, তবে আমরা সংবাদ পরিবেশন করতে বাধ্য নই।”
তিনি বলেন, “হেফাজতে ইসলাম যেভাবে নারী সাংবাদিকদের ওপর হামলা করেছে, তা কোনো সভ্য সমাজে হতে পারেনা। তাদের আচরণে আমরা ক্ষুব্ধ। আমরা উদ্বিগ্ন যে, আমাদের নারী সাংবাদিকদের অধিকার থাকবে কিনা। তারা আজ নারী সাংবাদিকের ওপর তালেবানি আচরণ করেছে।”
তিনি আরও বলেন, “আমাদের নবীজী (দ.) কোরান ও নারীকে বেশি মর্যাদা দিয়েছেন। যে দেশ নারীদের সম্মান দিতে জানেনা, সে দেশ সভ্য দেশ হিসেবে দাবি করতে পারেনা।”
সাংবাদিক ইউনিয়ন সভাপতি ইকবাল সোবহান চৌধুরী বলেন, “হেফাজতে ইসলাম একটি রাজনৈতিক আর্দশের সঙ্গে মিশে গেছে। তারা আজ ধর্মকে রাজনীতিতে ব্যবহার করছে।”
বিএফইউজের সাবেক সভাপতি মঞ্জুরুল আহসান বুলবুল হেফাজতে ইসলামকে উদ্দেশ করে বলেন, “তাদের আচরণে আজকে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে, আমাদের মা-বোনেরা মর্যাদার সঙ্গে টিকে থাকতে পারবে কিনা। তারা চায় না আমাদের বোনেরা এই পেশায় আসুক।”
তিনি বলেন, “হেফাজতে ইসলামের সব দাবি আমাদের স্বাধীনতার বিরুদ্ধে। তারা আমাদের বোনেদের ঘরের ভেতর ঢুকিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছে।”
সংগঠনের সভাপতি নাসিমুন আরা হকের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন, বিএফইউজের মহাসচিব আব্দুল জলিল ভূঁইয়া, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক শাবান মাহমুদ প্রমুখ।