সকল সম্পত্তি লিখে নিয়ে শতবর্ষী মা’কে বের করে দিয়েছে ছেলে!

0
87

নূরুজ্জামান ফারুকী,বিশেষ প্রতিনিধিঃ মায়ের পায়ের নিচে সন্তানের বেহশত এ কথাটুকু ঐ সমস্ত কুলাঙ্গারদের কাছে শুধুই কথার কথা। যে মা ১০ মাস ১০ দিন গর্ভে ধারন করে সন্তানকে পৃথিবীর আলো দেখালো আজ সেই পুত্রই সহায় সম্পত্তি নিজের নামে লিখে ঘর থেকে বের করে দিলো গর্ভধারিনী মাকে!
এ ঘটনায় কোথাও কোনো বিচার না পেয়ে অবশেষে সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমল-১ আদালতে পুত্রের বিরুদ্ধে গত ১১ জানুয়ারি মামলা করলে বিচারক মামলা আমলে নিয়ে তাদেরকে আদালতে হাজির হওয়ার নির্দেশ দেন।
হবিগঞ্জ শহরের শায়েস্তানগরে শতবর্ষী মা আঙ্গুরা খাতুনকে ঘর থেকে বের করে দিয়েছে পুত্র ও পুত্রবধূ। দুই তিন দিন মানুষের দ্বারে দ্বারে ঘুরে ভিক্ষা করেও জীবিকা নির্বাহ করতে না পেরে অসুস্থ হয়ে শেষ আশ্রয়স্থল হিসেবে স্থান হলো হবিগঞ্জ সদর হাসপাতালে।

জানা যায়, হবিগঞ্জ পৌরসভার ৯নং ওয়ার্ড শায়েস্তানগরের বাসিন্দা মৃত জিতু মিয়ার স্ত্রী আঙ্গুরা খাতুন তার স্বামী মারা যাবার আগে প্রায় অর্ধকোটি টাকার বসতভিটা স্ত্রীকে লিখে দিয়ে যান। কিন্তু তাদের একমাত্র ছেলে ফরিদ মিয়া ও তার স্ত্রী ঝর্না আক্তার কিছুদিন লালন পালন করে কৌশলে তার বসতভিটা তাদের নামে লিখে নেয়। এক পর্যায়ে বোঝা ভেবে গত ৩ জানুয়ারি আঙ্গুরাকে ফরিদ ও তার স্ত্রী ঘর থেকে বের করে দেয়। প্রচন্ড ঠান্ডার মাঝে বিভিন্ন লোকের কাছে ভিক্ষা করে জীবিকা নির্বাহ করে বৃদ্ধা মহিলা। এক পর্যায়ে সে অসুস্থ হলে পথচারীরা তাকে সদর হাসপাতালে ভর্তি করে। কিন্তু হাসপাতাল থেকে ওষুধ না দেয়ায় সমাজসেবা অফিস থেকে ওষুধ দেয়া হয়।

এ ঘটনায় আঙ্গুরা খাতুন সদর থানায় গিয়ে ফরিদ মিয়া ও তার স্ত্রী ঝর্ণার বিরুদ্ধে অভিযোগ দিলে পুলিশ কোনো প্রতিকার নেয়নি। পরে প্রবীণ হিতৈষী সংঘ ওই বৃদ্ধার পাশে দাড়ায়। পাশাপাশি সদর হাসপাতাল প্রশাসন ও মহিলার খবরাখবর নেয়।

এ রিপোর্ট লেখাকালে ওই মহিলা সদর হাসপাতালে মেডিসিন ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন রয়েছে। এক সাংবাদিককে দেখে তিনি কেঁদে বলেন, তার একমাত্র ছেলে ও পুত্রবধূ সবকিছু লিখে নিয়ে বোঝা ভেবে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেয়। এখন হাসপাতাল ছাড়া আর কোনো ঠিকানা নেই। এ বিষয়ে সদর থানার ওসি জানান, অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত চলছে। প্রবীণ হিতৈষী সংঘের সাধারণ সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার সামসুদ্দিন জানান, আমরা বিষয়টি শুনে ওই মহিলার পাশে দাড়িয়েছি। যতটুকু করার করছিও। কিন্তু তার পুত্র কেনো বের করে দিয়েছে তা আইন দেখবে। আমরা কেবল সহযোগিতা করবো।
এ বিষয়ে তত্ত্বাবধায়ক আমিনুল ইসলাম সরকার সাংবাদিকদের জানান, বিষয়টি দুঃখজনক। তবুও আমরা যতটুকু পারছি, ওই মহিলার খবর নিচ্ছি। এ সংবাদের মাধ্যমে সকলকেই মানবিক দৃষ্টি দেয়ার জন্য প্রশাসনের কাছে দাবি জানিয়েছেন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here