শ্রীমঙ্গলে যুবক ছুরিকাঘাতের ঘটনায় তাৎক্ষনিক পুলিশের গ্রেপ্তার প্রক্রিয়ায় নেটিজেনদের প্রতিক্রিয়া

0
554
শ্রীমঙ্গলে যুবক ছুরিকাঘাতের ঘটনায় তাৎক্ষনিক পুলিশের গ্রেপ্তার প্রক্রিয়ায় নেটিজেনদের প্রতিক্রিয়া
প্রেসব্রিফিং-এ ওসি শামীম অর রশীদ তালুকদারসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা

“শ্রীমঙ্গল থানা পুলিশের এরূপ সাহসিকতার ব্যাপারে হাজারো নেটিজেন পুলিশের প্রশংসায় পঞ্চমুখ।সামাজিক যোগাযোগ এর বিভিন্ন মাধ্যমে হাজারো নেটিজেন পুলিশকে ধন্যবাদ ও সাধুবাদ জানাচ্ছে”

নিজস্ব প্রতিনিধি: মৌলভীবাজার জেলার শ্রীমঙ্গল থানা সংলগ্ন দক্ষিণাংশে জামে মসজিদের রাস্তায় একটি সঙ্ঘবদ্ধ দুর্বৃত্তদের ছুরিকাঘাতে এক যুবক গুরুত্বর আহত হয়ে সিলেটের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।একই সময়ে ১০ মিনিটের মধ্যে ৪ জনকে পুলিশের আটক। আহত যুবক উপজেলার লাংলিয়াছড়ার আনারস বাগানের মালিক আব্দুর রহমানের ছেলে আরাফাত হোসেন (৩৫)।
এ ঘটনার শোরগোল শুনে থানা থেকে বেড়িয়ে পুলিশ তাদের পিছনে তাৎক্ষণিক তাড়া করে তাৎক্ষণিকভাবে ৪ জনকে এবং পরে আরও একজনসহ মোট ৫ জনকে আটক করেছে।
এ ব্যাপারে শ্রীমঙ্গল থানার অফিসার্জ ইনচার্জ সাংবাদিকদের প্রেসব্রিফিং করে ঘটনার সাথে তাৎক্ষনিক তাড়া করে অপরাধীদের গ্রেপ্তারের বর্ণনা দেন।
প্রেসব্রিফিং-এ ওসি শামীম অর রশীদ তালুকদার জানান,মঙ্গলরবার ২২ মার্চ দুপুর প্রায় পৌনে ১ টায় ভিকটিম আরাফাত হোসেন ও সঙ্গীয় ডালিম নামে এক যুবক মটরসাইকেল যোগে থানার পাশে জামে মসজিদ এর গলির রাস্তা ধরে মোটরবাইকে যাচ্ছিলেন। এ সময় আব্দুর রউফ (৪২),বেলাল মিয়া (৩০),মোঃ বিল্লাল (৩২) ও রুমন মিয়া (৩৫),সর্ব পিতা মহব্বত আলি,গ্রাম উত্তর উত্তরসুর,শ্রীমঙ্গলসহ অজ্ঞাত আরো কয়েকজন মিলে আরাফাতের মোটরসাইকেল রোধ করে চাকু দিয়ে পিঠে উপর্যুপুরি আঘাত করে মাটিতে ফেলে দেয়। এমন সময় থানা থেকে ভিকটিমের হাল্লা চিৎকার শুনে ফোর্স নিয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে প্রথমে তিনি নিজে অন্যান্যদের সহযোগিতায় সিএনজি অটোরিক্সা যোগে ভিকটিমকে স্থানীয় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রেরণ করেন এবং উপস্থিত অন্যান্য এসআই ও পুলিশ কনস্টেবলদেরকে দ্রুত পলাতকদের আটক করতে নির্দেশ দিলে তাদের আটক করতে সক্ষম হয়।
পুলিশের একশন সম্পর্কে একটি সুত্রে জানা যায়, ওসি শামীম অর রশীদ তালুকদার এর নেতৃত্বে পুলিশ পরিদর্শক অপারেশন নয়ন কারকুনসহ কয়েকজন পুলিশের কর্মকর্তা দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে ভিকটিমকে হাসপাতালে প্রেরণ করেন ওসি শামীম অর রশীদ তালুকদার ও অন্যান্যরা এবং এসআই আনোয়ার হোসেন পাঠান দৌড়ে প্রথমে তাদের পিছু নেয় তাৎক্ষনিক মোটর সাইকেল নিয়ে এসআই রাকিবুল হাসান ও তাদের পিছু নেই,পরে পুলিশ পরিদর্শক অপারেশন নয়ন কারকুনসহ, এস আই সাইফুল ইসলাম, এসআই মুখলেসুর রহমান লস্কর, এএসআই শামসুজ্জামান, এএসআই আব্দুল হান্নান, এ এস আই মিজানুর রহমান, এ এস আই ইলিয়াস সোহেল, কনস্টেবল শুভ,মিজান, গাড়িচালক কনকন, অপারেটর মিনহাজ, অপারেটর নুর আলম, কনস্টেবল গিয়াস উদ্দিন ক্রমান্বয়ে আসামীদের পেছনে ধাওয়া করে কলেজ রোড থেকে উল্লেখিত চারজন আসামীকে ধরতে সক্ষম হন। ভিকটিমের অবস্থা আশংকাজনক হওয়ায় ওসি শামীম অর রশীদ তালুকদার ও অন্যান্যদের সহযোগিতায় প্রথমে শ্রীমঙ্গল সদর হাসপাতাল,পরবর্তীতে মৌলভীবাজার সদর হাসপাতাল পরে সেখান থেকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে বলে জানা যায়। ভিকটিম বর্তমানে সিলেট ওসমানী চিকিৎসাধীন।
মামলার আইও এস আই প্রদীপ এর সুত্রে জানা যায়, “এ ঘটনায় ভিকটিমের ভাই জামাল হোসেন উল্লেখিত চার আসামীসহ ৬ জনের নামে এবং অজ্ঞাত আরও দুই জনকে আসামী করে থানায় মামলা দায়ের করেছেন.৫ জনকে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে এবং একজন পলাতক রয়েছে।পলাতক আসামিকে ধরতে অভিযান অব্যাহত।এই ঘটনার মামলা নাম্বার-৪০ তারিখ ২২ মার্চ ২০২২।
এই হামলার ব্যাপারে শ্রীমঙ্গল থানার অফিসার্জ ইনচার্জ শামিম অর রশিদ তালুকদার এলাকাবাসীর উদ্দ্যেশে আরও বলেন,”এই রূপ ঘটনায় সাধারণ মানুষের আরও সতর্ক হওয়া উচিত,যে কোন অপরাধীদের ধরার ব্যাপারে আপনারা পুলিশকে সহযোগিতা করবেন,তাহলে অপরাধীরা অপরাধ করতে সাহস পাবেনা।“
অপরদিকে শ্রীমঙ্গল থানা পুলিশের এরূপ সাহসিকতার ব্যাপারে হাজারো নেটিজেন পুলিশের প্রশংসায় পঞ্চমুখ।সামাজিক যোগাযোগ এর বিভিন্ন মাধ্যমে হাজারো নেটিজেন পুলিশকে ধন্যবাদ ও সাধুবাদ জানাচ্ছে।
এ ব্যাপারে সংবাদ লেখা পর্যন্ত আসামীদের এক আত্মীয় মীর রাজা মিয়া ‘আমারসিলেট টুয়েন্টিফোর’ প্রতিনিধিকে জানান,উপজেলার লাংলিয়া ছড়া এলাকায় লেবু বাগানের লিজকৃত জমি বিক্রি সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে গত সোমবার ভিকটিম আরাফাতসহ তার বড় ভাই ও তাদের লোকজন মিলে আসামীদের বড় ভাই হেলাল মিয়াকে মারপিট করে।
এ ঘটনায় গতকাল ২১ মার্চ রাতেই আরাফাতসহ অন্যান্যদের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়। পরের দিন বুধবার ২২ শে মার্চ সকালে হেলাল মিয়া লাংলিয়া ছড়া তার লেবু বাগানে গেলে আরাফাতের ভাই জামাল মিয়ার পিতাসহ অন্যান্যরা হেলাল মিয়াকে আটক করে রাখেন বলে সংবাদ হেলাল মিয়ার ভাইদের কাছে এসে পৌঁছালে এই অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনাটি ঘটে।
তিনি আরও বলেন আমি তখন ছিলাম না পরবর্তীতে শুনেছি। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, নিশ্চয়ই আইন হাতে নেওয়া অন্যায়।আইন বিরোধী কাজ যেই করুক সেই অপরাধী তবে আমরা এই জমিজমার বিষয়ে বার বার এলাকার গণ্যমান্যদের নিয়ে বিচারে বসেছি। মাত্র তিন শতক জায়গার সমস্যা নিয়ে বারবার বিচারে বসেও কোন সমাধান তারা মানেনি।বিচারকদের মধ্যে কামাল মিয়া,মিসির আলি,ইউসুফ আলী,মীর এম এ সালামসহ অনেক গুরুত্বপূর্ণ স্থানীয় ময় মুরুব্বিরা অবস্থিত থেকে মীমাংসার ব্যবস্থা করে দিলেও আরাফাতের পরিবার সেটি মানেনি,পরে আবারও থানায় বসা হয় সেখানেও কর্তব্যরত এক কর্মকর্তা দশজনকে কমিটি করে বিষয়টি স্থানীয়ভাবে সুরাহার সুযোগ দেন এটি ও তারা মানেনি।