শ্রীমঙ্গলে মসজিদে হেফাজতের কমিটিকে কেন্দ্র করে আহত-১,থানায় অভিযোগ

0
1313
শ্রীমঙ্গলে মসজিদে হেফাজতের কমিটিকে কেন্দ্র করে আহত-১,থানায় অভিযোগ
শ্রীমঙ্গলে মসজিদে হেফাজতের কমিটিকে কেন্দ্র করে আহত-১,থানায় অভিযোগ

নিজস্ব প্রতিনিধিঃ মৌলভীবাজার জেলার শ্রীমঙ্গল উপজেলার দক্ষিণ কালাপুর শাহজালাল জামে মসজিদে গত শুক্রবার ১৬ এপ্রিল জুমার নামাজের সময় মসজিদে হেফাজতে ইসলামের কমিটি গঠনকে কেন্দ্র করে একজন আহত হয়ে থানায় অভিযোগ দায়ের করার সংবাদ পাওয়া গেছে।
জানা যায় শ্রীমঙ্গল উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি মরহুম এম এ মনিরের ছেলে যুবলীগ কর্মী মোঃ শামীম আহম্মদ এ ঘটনায় আহত হয়ে চিকিৎসা শেষে থানায় মামলা দায়ের করেন। তিনি বলেন,তার বাবার প্রতিষ্ঠিত মসজিদটি বাংলাদেশ সরকারের ইসলামিক ফাউন্ডেশন কর্তৃক পরিচালিত হয়ে আসছে। সম্প্রতি মসজিদে গোপনে হেফাজত ইসলামের কমিটি গঠন করা হয়েছে।এই সংবাদ শুনে তিনি এর বিরোধিতা করলে নামাজ শেষে উৎপেতে থাকা হেফাজত সমর্থকরা এক জোট হয়ে তাকে বেধড়ক মারপীঠ করে এমন কি মাটিতে ফেলেও বিভিন্ন ভাবে আঘাত করে আহত করে বলে তিনি অভিযোগ করেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায় নিম্নোক্ত ব্যক্তিবর্গের নামে থানায় অভিযোগ করা হয়েছে, মোঃ গোলাম মোস্তফা (৬৫) পিতা- মৃত রইছ মিয়া।মোঃ সুমন আহম্মদ (৩৫) পিতা মোঃ গোলাম মোস্তফা। মোঃ লুৎফুর রহমান(নোমানী) (৩০) পিতা মোঃ গোলাম মোস্তফা। মোঃ লিমন মিয়া (২৭) পিতা- মৃত সাজিদ মিয়া। লোকমান মিয়া (৩০) পিতা মৃত মনির মিয়া সাং পূর্ব ভাগলপুর। মোঃ রুমান মিয়া (৩৭) পিতা মৃত সাজিদ মিয়া। মোঃ লিটন আহম্মদ (৩২) পিতা মৃত সাজিদ মিয়া। মোঃ হারুন মিয়া (৪২) পিতা মৃত সাজিদ মিয়া সর্বসাং-দক্ষিণ কালাপুর, ৫ নং কালাপুর ইউনিয়ন,শ্রীমঙ্গল,মৌলভীবাজারসহ অজ্ঞাত আরও ২০-২৫ জন আসামী।
সংক্ষিপ্ত বিবরণঃ ঘটনার দিন ও সময়ে দক্ষিণ কালাপুর শাহজালাল জামে মসজিদে সুন্নত নমাজ শেষে খুতবার পূর্বে বিবাদী গোলাম মোস্তফা মসজিদে অবস্থান করিয়া হেফাজত ইসলামীর কমিটি ঘোষণা করে এবং নাশকতা মূলক কর্মকান্ডের পরিকল্পনা করতে থাকে ।আমি অত্র মসজিদের একজন মুসল্লি হিসেবে বিবাদীগনের মসজিদের ভিতরে হেফাজত ইসলামের কমিটি গঠন ও নাশকতা মূলক কাজের পরিকল্পনায় বাঁধা দেওয়ায় জুম্মার নামাজ শেষে আমি মসজিদ থেকে বের হওয়ার পথে উৎ পেতে থাকা লোকজন গোলাম মোস্তফার হুকুমে আমাকে এলোপাথাড়ি ভাবে পিটাইয়া শরীরের বিভিন্ন স্থানে জখম করে। অপর বিবাদী আমাকে প্রাণে হত্যার উদ্দেশ্যে একটি লোহার রড দিয়া আমার মাথায় আঘাত করতে চাইলে রডের আঘাত আমার ঘাড়ের বাঁ পাশে লাগিয়া মারাত্মক হাড়ভাঙ্গা জখম হয়। এ সময় বাকিরা আমার পেটে লাথি আঘাত করিলে মারাত্মক ব্যথা যুক্ত জখম হয় । তাদের আঘাতে এক সময় আমি মাটিতে পড়িয়া গেলে অপর বিবাদী দা দিয়া পা কাঁটার উদ্দেশ্যে আঘাত করলে উভয় পায়ের পাতা কাটিয়া জখম হয় বলে মামলার এজহারে উল্লেখ করা হয়।

মসজিদ এলাকার কয়েকজন মুসল্লিদের সাথে মারপিটের বিষয়ে কথা হলে তারা জানান “এতিম ছেলেটিকে তারা সবাই মিলে মারপিট করেছে।আজ তার বাবা বেঁচে থাকলে এত বড় ঘটনা ঘটতোনা ।“
তাছাড়া তারা আরও বলেন,”সাবেক আওয়ামী লীগ নেতা এম এ মনির এই মসজিদের প্রতিষ্ঠাতা।মৃত্যুর আগে তিনি ওসিয়ত করে গিয়েছিলেন যে, তার মৃত্যুর পরে জানাজা শেষে যেন দোয়া ও মোনাজাত করা হয়। কিন্তু এম এ মনিরের মৃত্যুর পরে হেফাজতের কর্মীদের কারণে জানাজা শেষে দোয়া করতে বাধাগ্রস্ত হয় এবং এলাকাবাসী এই ঘটনায় মারাক্তক ক্ষুদ্ধহন। সে থেকে এম এ মনিরের পরিবার হেফাজতের কর্মকাণ্ডের প্রতি শ্রদ্ধাশীল নয়, তাদের কথা হচ্ছে জীবনের শেষে একটু সময় আমি আমার আল্লাহ্‌র কাছে দোয়া করতে চাইলে তারা তা করতে দেয়নি বরং অছিয়ত পালনের সুযোগ না দিয়ে মৃতলাশ নিয়ে টানাটানি শুরু করে তারা। এটা কি ধর্মের কাজ ? অতচ তারা আওয়ামীলীগের ছায়াতলে থেকে সরকার বিরোধী যা ইচ্ছা তা করে যাচ্ছে! তাছাড়া সম্প্রতি দেশব্যাপী হেফাজতে ইসলামের হামলা-ভাঙচুরের কর্মকাণ্ড কোন আওয়ামী লীগ পরিবার মেনে নিবে না।
অপর দিকে এই মামলার ২ নং বিবাদী মোঃ সুমন আহাম্মদ এর সাথে ফোনে কথা হলে তিনি বলেন বিষয়টি আমাদের পারাবারিক তিনি মোঃ শামিম আহাম্মদ আমার চাচাত তিনি আমার বাবার সাথে খারাপ ব্যবহার করে আসছেন তার বাবার মৃত্যুর পর থেকেই। ওই দিন মসজিদে কথা কাটাকাটি হয়েছে পরে নামাজ শেষে তিনি আমার বাবাকে আটক করে অসম্মান করলে সামান্য হাতাহাতি হয়েছে। হেফাজতের কমিটি গঠন সংক্রান্ত বিষয়ে সুমন বলেন, এখানে আঞ্জুমানে হেফাজতের পক্ষথেকে লোকজন এসে সুরা কেরাত শিক্ষা দেওয়ার কথা বলেছে, মুল হেফাজতের সাথে আমাদের পরিবারের কোন সম্পর্ক নেই এবং ভবিষ্যতে ও থাকার সম্ভাবনা নেই,আমরা বঙ্গবন্ধুর আদর্শের রাজনীতি করি।জানাজা শেষে মোনাজাত নিয়ে কওমিদের একটি গ্রুপ দোয়া করেনা এর সাথে আমাদের কোন সম্পর্ক নেই এটি ভুল তথ্য দিয়েছে আপনাদেরকে।“

এ ব্যাপারে এই মামলার আইও শ্রীমঙ্গল থানার এস আই রাকিবুল হাছান এর সাথে আমার সিলেট প্রতিনিধির কথা হলে তিনি বলেন,মামলা রেকর্ড হয়েছে আইনি প্রক্রিয়া চলছে। প্রক্রিয়া শেষে দ্রুত আসামিদের গ্রেপ্তার করা হবে।