শেখ হাসিনাকে দেখার অন্তিম ইচ্ছা পূরণ হল না শতায়ু সখিনার

    0
    240

    আমারসিলেট24ডটকম,০ডিসেম্বরঃ জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর  কন্যা শেখ হাসিনাকে এক নজর দেখার অন্তিম ইচ্ছা বুকে ধারণ করেই শেষ পর্যন্ত মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়লেন আলোচিত শতায়ু নারী সখিনা খাতুন। আজ সোমবার ভোররাতের দিকে এই বৃদ্ধা নারী কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলার সাগর পাড়ের অরণ্যঘেরা ইনানী চেনছরি গ্রামে বার্ধক্যজনিত রোগে ইন্তেকাল করেন ইন্নালিল্লাহি ওয়া  ইন্না ইলাইহি রাজিউন। আজ মরহুমা সখিনা খাতুনের একমাত্র পুত্র আবদুল হামিদ তার মায়ের মৃত্য সংবাদ জানান সংবাদ মাধ্যমকে। তিনি এ প্রসঙ্গে বলেন কালের কণ্ঠ পত্রিকা সচিত্র সংবাদ প্রকাশের মাধ্যমে দেশ-বিদেশে আমার মাকে পরিচিত করে তুলে। আমার মা জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে রান্না করে খাইয়েছিলেন। কালের কণ্ঠের সেই সংবাদের পর থেকেই আমার মা হয়ে উঠেন একজন অনন্য নারী। সেই থেকে অনেকেই দেখতে আসতেন মাকে।

    সেই ১৯৫৮ সালে জেনারেল আইউব খানের সামরিক শাষনের সময়কালে তদানীন্তন পূর্ব বাংলার রাজনৈতিক অঙ্গনের রাজপুত্র শেখ মুজিবুর রহমান কক্সবাজারের ইনানীর গহীন অরণ্য ঘেরা চেনছড়ি গ্রামে অজ্ঞাতবাসে এসেছিলেন। এ সময় বঙ্গবন্ধু সেই পাহাড়ী এলাকার দাপুটে উপজাতি নেতা ফেলোরাম রোয়াজা চাকমার আশ্রয়ে ছিলেন। অর্ধ শতাধিক বছর আগেকার সেই দিনের এসব কাহিনীরি বিবরণ দিতে গিয়ে উখিয়ার সোনারপাড়া গ্রামের বাসিন্দা এবং মুক্তিযোদ্ধা লোকমান হাকিম মাস্টার (৭৫) জানান পাহাড়ী উপজাতিদের রান্না খেতে না পেরে সেই সময় স্থানীয় গৃহবধু সখিনা খাতুনকে দিয়ে বঙ্গবন্ধুর জন্য রান্না করা হত। মুক্তিযোদ্ধা লোকমান হাকিম ছিলেন তখন কক্সবাজার জেলা ছাত্রলীগের একজন নেতা। বঙ্গবন্ধুর সেদিনের এসব ঘটনার স্বাক্ষী হিসাবে এখনো বেঁচে আছেন আরও একজন শতায়ু আবদুল খালেক। উখিয়ার খয়রাতি গ্রামের বাসিন্দা এবং মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগটক আবদুল খালেকের ঘরেও একরাত কাটিয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু। বঙ্গবন্ধুর জীবনের এই অজানা কাহিনী দৈনিক কালের কণ্ঠ পত্রিকা  ২০১০ সালের ১৭ মার্চ তাঁর (বঙ্গবন্ধু) ৯০ তম জন্মদিনে প্রকাশিত হয়েছিল । মরহুমা নারী সখিনার ছবি সহকারে। সেই থেকেই ইতিহাসের একটি অংশ হয়ে পড়ে ইনানীর সেই ঐতিহাসিক উপজাতি ফেলোরামের বসতভিটা ও সখিনার বাড়িটি।পরে প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের উর্ধতন কর্মকর্তারাও বহুবার পরিদর্শন করেন ওই এলাকা। পরিকল্পনাও নেওয়া হয় এলাকাটিকে একটি আকর্ষণীয় পর্যটন কেন্দ্র হিসাবে গড়ে তোলার। অপরদিকে বঙ্গবন্ধুকে রান্না করে যিনি খাইয়েছিলেন সেই শতায়ু নারী সখিনাকেও দেওয়া হয় অনেক সাহায্য-সহযোগিতা।

    শতায়ু নারী সখিনার সন্তান আবদুল হামিদ জানান-আমার মায়ের অনি্তম ইচ্ছাটুকু পুরণ হলোনা। আমার মা দেখতে চেয়েছিলেন শেখ সাহেবের কন্যা শেখ হাসিনাকে, কিন্তু তার আগেই তিনি চলে গেলেন।সুত্রঃ কালের কণ্ঠ।