রিজার্ভের টাকা চুরি,অর্থমন্ত্রী দায় এড়াতে পারেন নাঃসুরঞ্জিত সেন

    0
    251

    আমারসিলেট টুয়েন্টিফোর ডটকম,মার্চঃ বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভের টাকা চুরির ঘটনায় অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত দায় এড়াতে পারেন না এবং তিনিও সন্দেহের ঊর্ধ্বে নয় বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত।

    বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর ঢাকেশ্বরী মন্দিরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মদিন উপলক্ষে আয়োজিত প্রার্থনাসভা অনুষ্ঠানে অর্থমন্ত্রীকে উদ্দেশ করে সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত বলেছেন, ‘আপনি দায়িত্বশীল পদে থাকলে, দায়িত্ব নিয়েই কথা বলতে হবে। আপনাকেও দায়-দায়িত্ব নিতে হবে। এটা আপনার টাকা না। এটা আপনার আমার বাবার টাকা না। এটা জনগণের অর্থ।’

    ২০১২ সালের ১৬ এপ্রিল নিয়োগ বাণিজ্যের ‘অর্থ কেলেঙ্কারির’ দায় নিজের কাঁধে নিয়ে রেলমন্ত্রীর পদ থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়েছিলেন সুরঞ্জিত।

    বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরির ঘটনা গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করার আহ্বান জানিয়ে সুরঞ্জিত বলেন, ‘আমাদের রাষ্ট্রীয় খাতের অর্থে হাত পড়েছে। আমি আরও স্পষ্ট করে বলতে চাই-অর্থমন্ত্রী, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তা, সে যেই হোক, কেউ সন্দেহের ঊর্ধ্বে নয়।,

    অনুষ্ঠানে গণমাধ্যমে অর্থমন্ত্রীর হরহামেশা কথা বলারও কঠোর সমালোচনা করেন সুরঞ্জিত। তিনি বলেন, ‘কখনো ইংরেজিতে কয়, বাংলা কয়। কী যে কয় বোঝার উপায় নাই। এ সমস্ত জাতীয় বিষয়, রাষ্ট্রীয় বিষয়, হালকা করে দেখার কোনো সুযোগ নাই।’

    তিনি বলেন, ‘সব কাজ করবেন শেখ হাসিনা। আর আমরা ইংরেজি কমু, প্রেসের সঙ্গে কথা কমু। কী কয় রাবিশ-খবিশ। এগুলো কোনো কথা হলো?’

    আগে জানালেও অবস্থা একই হতো বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর আতিউর রহমানের এমন বক্তব্যের কঠোর সমালোচনা করেন সুরঞ্জিত। তিনি বলেন, ‘এগুলো কোনো কথা হইল? নিশ্চয় আগে জানালেই টাকা পাওয়া যেত। এগুলো সাধারণ ঘটনা না।’

    গভর্নরের পদ থেকে আতিউরের পদত্যাগের বিষয়ে সুরঞ্জিত বলেন, ‘সবাইকে একসঙ্গে খুশি করা যায় না। এটা বিরল আত্মত্যাগ এটাও যেমন ঠিক, আবার তাঁকে গভর্নর রাখা যাবে না এটাও ঠিক। দুইটা একসঙ্গে ঠিক হতে পারে না।’

    এ প্রসঙ্গে জাতীয় মুক্তি কাউন্সিলের সাধারণ সম্পাদক ডা. ফায়েজুল হাকিম রেডিও তেহরানকে বলেন, প্রথম থেকেই ঘটনাটা ধামাচাপা দেবার চেষ্টা করা হয়েছে। এক্ষেত্রে অর্থমন্ত্রী তার দায় এড়াতে পারেন না।

    তবে তিনি মনে করেন, রেলের “কালো বিড়াল” যেমনটি ধরা ছোঁয়ার বাইরে রয়ে গেছে, বাংলাদেশ ব্যাংক কেলেঙ্কারির বেলাও তেমনটি হবার আশংকা রয়েছে।

    এই বাম রাজনৈতিক নেতা মনে করেন, দেশে ব্যাপক লুটপাট, সন্ত্রাস এবং চেপে বসা নির্যাতনকারী সরকারের বিরুদ্ধে জনগণ সোচ্চার না হলে সার্বিক অবস্থার আরো অবনতি ঘটবে।

    গত ৫ ফেব্রুয়ারি রাত ১২টার দিকে ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক অব নিউইয়র্কে রক্ষিত বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ থেকে ৮ কোটি ১০ লাখ ডলার চুরি হয়। ফিলিপাইনের একটি পত্রিকায় এ নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশিত হলে বিষয়টি জানাজানি হয়।

    ওদিকে, বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ থেকে ৮ কোটি ১০ লাখ ডলার চুরির ঘটনায় ফিলিপাইনে দ্বিতীয় দিনের শুনানিতে ব্যাংক কর্মকর্তা রোমাল্ডো অগার্ডো সিনেটরদের জানান, রিজাল ব্যাংকের জুপিটার শাখায় টাকা হস্তান্তরের সময় ঝুঁকির মধ্যে থাকার কথা জানিয়েছিলেন রিজাল ব্যাংকিং করপোরেশনের শাখা ব্যবস্থাপক মায়া সান্তোস দেগুইতো।

    অগার্ডো আরও বলেন, ৫ ফেব্রুয়ারি একটি ব্যাগে করে দেগুইতোর গাড়িতে যে ২০ মিলিয়ন ডলার তোলা হয়েছিল সেগুলো বাংলাদেশ ব্যাংকের চুরি যাওয়া টাকা বলে তাঁর ধারণা।  সুত্রঃআইআরাইবি