রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমান রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় বনানী কবরস্থানে সমাহিত

    0
    448
    রাষ্ট্রপতির দ্বিতীয় নামাজে জানাযায় লাখো মানুষের ঢল।
    রাষ্ট্রপতির দ্বিতীয় নামাজে জানাযায় লাখো মানুষের ঢল।

    রাষ্ট্রপতির দ্বিতীয় নামাজে জানাযায় লাখো মানুষের ঢল

    প্রবীণ রাজনীতিক, আওয়ামী লীগের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও বাংলাদেশের মহামান্য রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমানকে বনানী কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে। দাফনের আগে ২ মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। এ সময় অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদ অ্যাডভোকেট, মন্ত্রী পরিষদের সদস্যবৃন্দ,আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দসহ সামরিক বাহিনীর কর্মকর্তা  এবং আত্বীয় স্বজনেরা উপস্থিত ছিলেন। পরে মরদেহ কবরে নামিয়ে সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরা গান স্যালুট প্রদান করেন। বিউগলের করুণ সুর বেজে ওঠে। শুক্রবার বিকেল ৪টার কিছু আগে তাকে দাফন করার প্রক্রিয়া শুরু হয়। এর আগে বেলা ৩টা ২৫ মিনিটে মরদেহ বহনকারী যান বনানী কবরস্থানে গেটে পৌঁছায়। পরে ৩ বাহিনীর জেনারেলবৃন্দ মরদেহ বহন করে কবরের পাশে নিয়ে আসেন।

    এর আগে বেলা ৩টার দিকে অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদ অ্যাডভোকেট কবরস্থানে এসে পৌঁছান। চলে আসেন প্রধানমন্ত্রীর প্রতিরক্ষা উপদেষ্টাসহ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতাসহ সামরিক কর্মকর্তারাও। এছাড়া সোয়া ৩টার দিকে প্রয়াত রাষ্ট্রপতির ছেলে নাজমুল হাসান পাপনের নেতৃত্বে পরিবারের সদস্যরা কবরস্থানে এসে পৌঁছান।

    প্রথম জানাজার জন্য রাষ্ট্রপতির মরদেহ শুক্রবার সকালে বিশেষ হেলিকপ্টার যোগে তার জন্মস্থান ভৈরবে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে জানাজা শেষে হেলিকপ্টারটি আবার ঢাকার উদ্দেশে ভৈরব ত্যাগ করে। এ সময় ভৈরবের হাজার হাজার মানুষ হাত নেড়ে শেষ বিদায় জানায় তাদের প্রিয় নেতা জিল্লুর রহমানকে।

    ঢাকার জাতীয় ঈদগাহ ময়দানে দুপুর ২টা ৩০ মিনিটে অনুষ্ঠিত হয় তার দ্বিতীয় নামাজে জানাজা। মাঝে সাড়ে ১২টার কিছু পর থেকে ১টা ৪৫ মিনিট পর্যন্ত বঙ্গভবনে রাখা হয় রাষ্ট্রপতির কফিন। সেখানে বিদেশি কূটনীতিকরা রাষ্ট্রপতির প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।

    বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি কমরেড রাশেদ খান মেনন এমপি ওয়ার্কার্স পার্টির পক্ষ থেকে প্রয়াত মহামান্য রাষ্ট্রপতি মোঃ জিল্লুর রহমানের প্রতি পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। এ সময় তার সাথে ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক কমরেড আনিসুর রহমান মল্লিক, পলিটব্যুরোর সদস্য কমরেড বিমল বিশ্বাস, কমরেড নুরুল হাসান, কমরেড মাহমুদুল হাসান মানিক, কমরেড কামরূল আহসান প্রমুখ নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

    রাষ্ট্রপতিরদ্বিতীয়নামাজেজানাযায়লাখোমানুষেরঢল

    প্রায়ত রাষ্ট্রপতি মো. জিল্লুর রহমানের দ্বিতীয় নামাজে জানাযা আজ শুক্রবার দুপুরে জাতীয় ঈদগাহ ময়দানে অনুষ্ঠিত হয়েছে। জানাযায় অংশ নিতে দুপুরে জাতীয় ঈদগাহ ময়দানে লাখো মানুষের ঢল নামে। জানাযায় অংশ নিয়ে তারা রাষ্ট্রপতির রুহের মাগফিরাত কামনা করেন।

    প্রবীণ এই রাজনীতিবিদের জানাযায় অংশ নিতে সকাল থেকেই দূর দূরান্ত থেকে নানা শ্রেণী-পেশার মানুষ জাতীয় ঈদগাহে জড়ো হন। জানাজার আগে সেখানেই জুমার নামারজ আদায় করেন তারা।

    জাতীয় ঈদগাহ ময়দানে শুক্রবার দুপুর আড়াইটার দিকে এ জানাযায় অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি, রাষ্ট্রপতির আত্মীয়স্বজন, সরকারি কর্মকর্তা, সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী ও বিমাবাহিনীর কর্মকর্তা, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ অংশ গ্রহণ করেন।

    জানাযার কারণে শাহবাগ মোড়, মিন্টো রোডের প্রধান বিচারপতির বাসভবনের সামনের রাস্তা এবং পল্টন মোড় থেকে জাতীয় ঈদগাহমুখী সড়কে যান চলাচল বন্ধ করে দেয়া হয়। তারপরও হাজার হাজার মানুষ পায়ে হেঁটে জাতীয় ঈদগাহ ময়দানে গিয়ে জানাযায় অংশ গ্রহণ করেন।

    বেলা ২টা ১২ মিনিটে রাষ্ট্রপতির মরদেহ ঈদগাহ ময়দানে নিয়ে আসার পর রীতি অনুযায়ী সমবেতদের কাছে বাবার জন্য ক্ষমা চেয়ে নেন রাষ্ট্রপতির ছেলে সংসদ সদস্য নাজমুল হাসান পাপন।

    তিনি বলেন, আপনারা আমার বাবার প্রতি যে ভালবাসা দেখিয়েছেন আমি এবং আমার পরিবার সারাজীবন আপনাদের প্রতি কৃতজ্ঞ থাকব। সারা দেশের মানুষ তার জন্য দোয়া করছেন। তিনি জেনে শুনে কারো সঙ্গে কখনো খারাপ ব্যবহার করেননি। যদি মনের অজান্তে কাউকে দুঃখ দিয়ে থাকেন, আমি তার পক্ষ থেকে আপনাদের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করছি।
    জানাযার নামাজ পরিচালনা করেন বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের খতিব মাওলানা মোহাম্মদ সালাহউদ্দিন। এর আগে রাষ্ট্রপতির রুহের মাগফেরাত কামনা করে দোয়া করা হয়।

    জানাজার পর সশস্ত্র বাহিনী ও ঢাকার জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে মুক্তিযোদ্ধা জিল্লুর রহমানকে গার্ড অব অনার দেয়া হয়।