দেশের সাম্প্রতিক রাজনৈতিক সহিংসতা আর হরতালে উদ্বিগ্ন ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন বাংলাদেশ শিল্প ও বণিক সমিতিগুলোর ফেডারেশন এবার মাঠে নামছেন। বিদ্যমান পরিস্থিতিতে বেশ কিছু কর্মসূচি ঘোষণা করতে যাচ্ছেন এফবিসিসিআই।
এফবিসিসিআই এরই মধ্যে কয়েকটি কর্মসূচি নিয়ে নিজেরা আলোচনা করেছেন। এসব কর্মসূচি চূড়ান্ত করতে আজ বুধবার পরিচালনা পর্ষদের জরুরি সভা ডাকা হয়েছে। সভা শেষে সংবাদ সম্মেলন করে বোর্ডের সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেবে এফবিসিসিআই। হরতাল ও সহিংসতায় এ পর্যন্ত ব্যবসায়ীদের কী পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে, তা-ও এতে তুলে ধরা হবে।
এফবিসিসিআইয়ের সহসভাপতি মো. হেলাল উদ্দিন বলেন, ‘এফবিসিসিআইয়ের পরিচালকেরা কয়েকটি কর্মসূচির কথা প্রস্তাব আকারে দিয়েছেন। জরুরি বোর্ড সভায় এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’
বর্তমান অস্থিতিশীল রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে গত সোমবার সন্ধ্যায় হেলাল উদ্দিনের নেতৃত্বে সংগঠনের পরিচালকেরা আলোচনায় বসেছিলেন। করণীয় নিয়ে বিভিন্ন ধরনের প্রস্তাব দেন পরিচালকেরা।
সূত্র জানায়, পরিচালকদের আলোচনায় কয়েকটি কর্মসূচির কথা উঠে এসেছে। বেশির ভাগই মতিঝিলে ফেডারেশন ভবনের সামনে ব্যবসায়ীদের মানববন্ধন করার পক্ষে মত দিয়েছেন। এফবিসিসিআই কিংবা অন্য কোনো স্থানে ব্যবসায়ীদের সম্মেলন করার প্রস্তাব দিয়েছেন তাঁরা। আরেকটি প্রস্তাবিত কর্মসূচি হচ্ছে সাদা পতাকা মিছিল। প্রাথমিকভাবে ঢাকায় এমন মিছিল করা হবে, পরবর্তী সময়ে সারা দেশের জেলা পর্যায়ে সাদা পতাকা মিছিল করা হবে। এসব কর্মসূচি নিয়ে আলোচনা হলেও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি। চূড়ান্ত করতেই জরুরি বোর্ড সভা ডাকা হয়েছে।
সাক্ষাৎ চেয়ে ১০ মার্চ বিরোধীদলীয় নেতা খালেদা জিয়াকে এফবিসিসিআই চিঠি দিলেও এখনো সাড়া পাওয়া যায়নি। তাই পরিচালকদের বৈঠকে আবারও চিঠি দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল সন্ধ্যায় বিরোধীদলীয় নেতার গুলশানের কার্যালয়ে আরেকটি চিঠি দেওয়া হয়েছে।
এফবিসিসিআই সূত্রে জানা গেছে, গত সোমবার গুলশানে একটি ব্যাংকের কার্যালয়ে বৈঠকে বসেছিলেন সংগঠনটির সাবেক ও বর্তমান সভাপতিরাও। এতে উপস্থিত ছিলেন বর্তমান সভাপতি কাজী আকরাম উদ্দিন আহেমদ, সাবেক সভাপতি আকরাম হোসেন, সালমান এফ রহমান, আবদুল আউয়াল মিন্টু, ইউসুফ আবদুল্লাহ হারুন, মীর নাসির হোসেন, আনিসুল হক, এ কে আজাদ, ঢাকা চেম্বার সভাপতি সবুর খান প্রমুখ।
এ কে আজাদ বলেন, ‘আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, এফবিসিসিআইয়ের নেতৃত্বে বড় বড় চেম্বার নেতারা প্রধানমন্ত্রী ও বিরোধীদলীয় নেতার সঙ্গে দেখা করে আমাদের সমস্যার কথাগুলো তাঁদের বলব। দুই দলের মধ্যে সংলাপ করার যে প্রস্তাব আমরা দিয়েছিলাম, তা যেন কার্যকর করা হয়, সে বিষয়টি বোঝাব।’
এ কে আজাদ আরও বলেন, ‘এ রকম হরতাল-সহিংসতায় ব্যবসা করা সম্ভব নয়। গার্মেন্টসের বেশ কিছু অর্ডার ইতিমধ্যে বাতিল হয়ে গেছে। মিয়ানমারসহ কয়েকটি দেশে এসব চলে গেছে। সহিংস কার্যক্রম এখন দেশের জন্য আত্মঘাতী হয়ে দাঁড়িয়েছে।’