আমারসিলেট24ডটকম,২৮ডিসেম্বরঃ রাজধানীতে শুক্রবার রাত ১২টা থেকে আজ শনিবার সকাল ৬টা পর্যন্ত যৌথবাহিনীর বিশেষ অভিযানে আটক হয়েছে ১৬২ জন। নাশকতার পরিকল্পনা ও নাশকতায় জড়িত থাকার অভিযোগে তাদের আটক করা হয়েছে বলে জানা যায়। এদিকে গতরাতে যৌথবাহিনী রাজধানীর তেজগাঁও, ধানমন্ডি, কলাবাগানসহ বিভিন্ন স্থানে বিশেষ অভিযান পরিচালনা করেন। এ অভিযানে ১৬২ জনকে আটক করা হয। আটককৃতদের রাজধানীর বিভিন্ন থানায় আটক রাখা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও জানা যায়।সকালে সিলেটের কদমতলী কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল থেকে কোনো বাস ছাড়েনি। ‘সূচি বিপর্যয়কে’ অজুহাত দেখিয়ে সকাল থেকে ট্রেন চলাচলও বন্ধ করে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
অপরদিকে,রাজধানীর ভেতরেও চলছে অঘোষিত অবরোধ। চলাচল করছে না অভ্যন্তরীণ বাস সার্ভিসগুলো। এমনকি সিটি সার্ভিস বাসের পাশাপাশি সমস্ত লোকাল বাসও চলাচল বন্ধ রয়েছে। তবে গাবতলী থেকে সদরঘাট পর্যন্ত দু একটি লোকাল বাস চলাচল করতে দেখা গেছে। মিরপুর থেকে মতিঝিল, পোস্তগোলা, চিটাগাং রোডেও খুবই সীমিত পরিসরে বাস চলছে।
গাজীপুর আজিমপুর রুটে চলাচলকারী ভিআইপি বাস মিনিটে ২ টা ৩ টা যায় সেখানে এক থেকে দুই ঘন্টা দাঁড়িয়ে থেকেও বাস পাওয়া যাচ্ছে না এমনটাই অভিযোগ করেছেন যাত্রীরা। তবে প্রাইভেট কার, মাইক্রোবাস, সিএনজি যথারীতি চলাচল করছে। রাজধানীর কোনো দিক থেকেই সায়েদাবাদ, যাত্রাবাড়ীগামী বাস চলাচল নেই বলে জানা গেছে।
সকাল সোয়া ৯টার দিকে সেখানে অফিসগামী শত শত যাত্রী অপেক্ষা করলেও কোন রুটের বাস আসছে না বলে জানা যায়। হঠাৎ করে দু-একটি বাস আসলে সেটাতে উঠা নিয়ে বচসা শুরু হয়ে যাচ্ছে। তেজগাঁও, কুড়িল, উত্তরা এইসব রুটে তেমন কোন বাস চলাচল চোখে পড়ছে না। প্রগতি সরণি হয়ে সায়েদাবাদ রুটে চলাচলকারী সুপ্রভাত বাস বন্ধ করে কুড়িল ফ্লাইওভারের পাশে সারিবদ্ধ করে রাখা হয়েছে। বাস কেন বন্ধ জানতে চাইলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক চালক জানান, মালিকের নিষেধ, আর কিছু জানিনা।নাশকতা ও পুলিশি ঝামেলা এড়াতে অনেক পরিবহন মালিক নিজে থেকেই বাস না চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে জানা যায়।
বিএনপি নেতৃত্বাধীন ১৮ দলীয় জোটের সমাবেশ আগামীকাল রবিবার ঢাকার নয়াপল্টনে দলীয় কার্যালয়ের সামনে। এ কর্মসূচির আগে গতকাল শুক্রবার ঢাকার পথে কোনো বাস ছাড়েনি বিভিন্ন জেলা থেকে। দক্ষিণের বিভিন্ন জেলা থেকে ঢাকার উদ্দেশে লঞ্চ ছাড়েনি। কোনো কোনো স্থান থেকে ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে আসা কয়েকটি লঞ্চ পুলিশ মাঝপথ থেকে ফেরত পাঠিয়েছে। এর মধ্যে গতকাল ঢাকায় কিছু যান এলেও আজ শনিবার সকাল থেকে রবিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত ঢাকার সঙ্গে সারা দেশের বাস ও লঞ্চ চলাচল সীমিত রয়েছে। অন্যদিকে কর্মসূচির অংশ হিসেবে আগামীকাল নয়াপল্টনে সমাবেশ করার অনুমতি দেয়নি ঢাকা মহানগর পুলিশ(ডিএমপি)।
এদিকে বৃহত্তর চট্টগ্রামের বিভিন্ন রুটে ঢাকামুখী যান চলাচল গতকালই অর্ধেকের নিচে নেমে আসে। আজ থেকে ঢাকা-চট্টগ্রামসহ আন্তজেলার ৬০টি দূরপাল্লার রুটে গাড়ি চলাচল বন্ধ থাকবে বলে জানিয়েছেন মালিক সংগঠনের নেতারা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পরিবহন মালিক সমিতির কয়েকজন নেতা জানান, চট্টগ্রাম মহানগর ও জেলা, কক্সবাজার, তিন পার্বত্য জেলা, ফেনী, নোয়াখালী ও লক্ষ্মীপুরের বিভিন্ন রুটে মালিক সমিতির কাছে বিএনপি-জামায়াত জোটের নেতারা ঢাকায় যাওয়ার জন্য শতাধিক গণপরিবহন (বাস) ভাড়া চেয়েছিলেন। কিন্তু মালিকরা গাড়ির ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কায় একটি বাসও ভাড়া দেননি।
মালিক সমিতির নেতা গোলাম রসুল বাবুল বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, বিএনপির কর্মসূচিতে ভাড়ায় গিয়ে যানবাহন ভাঙচুর ও অগ্নিদগ্ধের শিকার হলে এর দায়ভার কে বহন করবে? তাই মালিকরা বাধ্য হয়ে রাস্তায় গাড়ি নামাতে সাহস করছেন না। এদিকে দৌলতদিয়া ঘাটের ঈগল পরিবহণের চালক গতরাতে জানান, গতকাল বেলা ৩টার পরে ঢাকাগামী কোনো বাস খুলনা অঞ্চল থেকে ছেড়ে আসেনি।
এদিকে সিলেট থেকে ঢাকাগামী উপবন সকাল ৮টায় ছাড়ার কথা থাকলেও তা স্থগিত করে রেল কর্তৃপক্ষ।সিলেট রেলওয়ে স্টেশনের মাস্টার মুহিবুর রহমান জানান, সিডিউল বিপর্যয়ের কারণে ট্রেন ছাড়তে দেরি হচ্ছে।তবে কখন নাগাদ ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হবে সে বিষয়ে স্পষ্ট করে কিছু বলতে পারেননি তিনি। সিলেট থেকে ঢাকাগামী যানবাহন চলছেনা বলে ও জানা গেছে।