যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের মধ্য দিয়েই দেশ অভিশাপমুক্ত হবে :প্রধানমন্ত্রী

    0
    407

    আমার সিলেট ডেস্ক,২৫ আগস্ট : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বিএনপি ক্ষমতা পেলে দেশের চলমান উন্নয়ন বন্ধ হয়ে যাবে, শুরু হবে দুর্নীতি। গতকাল শনিবার নারায়ণগঞ্জে বেশ কয়েকটি উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন শেষে আড়াইহাজারে এক সমাবেশে তিনি বলেন, তারা ক্ষমতায় গেলে আবার হাওয়া ভবন করে, হাওয়া ভবনের পরিবর্তে নতুন ভবন করে, দেশের চলমান উন্নয়নগুলো বন্ধ করে নতুনভাবে দুর্নীতি শুরু করবেন।

    বিরোধীদলীয় নেত্রীর ‘নতুন ধারার সরকার গড়ার’ বক্তব্যেরও সমালোচনা করেন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার এবং উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে ভোট চেয়ে শেখ হাসিনা বলেন, যুদ্ধাপরাধীদের কেউ রক্ষা করতে পারবে না। যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের মধ্য দিয়েই দেশ অভিশাপমুক্ত হবে। ঠিক যেমন জাতির পিতার হত্যাকারীদের বিচার হয়েছে। তিনি বলেন, নৌকা মার্কায় ভোট চাই। আবারো নির্বাচিত করলে উন্নয়ন সচল থাকবে। উন্নয়নের দাবি-দাওয়া করতে হবে না, আওয়ামী লীগ জানে কোথায় উন্নয়ন করতে হয়।

    সমাবেশে প্রধানমন্ত্রী তার সরকারের বিভিন্ন উন্নয়নের তথ্য জানানোর পাশাপাশি বিগত জামাত-বিএনপি সরকারের বিভিন্ন দুর্নীতির তথ্য তুলে ধরেন। তিনি বলেন, চারদলীয় জোট ক্ষমতায় এলেই তারা জনগণের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলে। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলেই দেশের উন্নয়ন হয়। সমাবেশে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ

    আশরাফুল ইসলাম, মতিয়া চৌধুরী, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা তৌফিক-ই-এলাহী, পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান হোসেন মনসুর, স্থানীয় সাংসদ নজরুল ইসলাম বাবু, শামীম ওসমান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

    সমাবেশে শেখ হাসিনা বলেন, ২০০১ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত ক্ষমতায় থেকে বিএনপি দেশে প্রতিহিংসা, দুর্নীতি, জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসবাদের নতুন ধারার রাজনীতি চালু করেছিল। তারা আবার ক্ষমতায় এলে সেই রাজনীতি ফিরে আসবে। তিনি বলেন, অতীতে বিএনপি শাসনামলে বাংলাদেশ অর্থনীতি ও সামাজিক ক্ষেত্রে পিছিয়ে পড়েছিল। বিরোধীদলীয় নেত্রী ইতোমধ্যে হুমকি দিয়েছেন- আমাদের চলমান উন্নয়ন বন্ধ করে দেবেন।

    শেখ হাসিনা বলেন, বিএনপি এবং এর মিত্র জামাত ও হেফাজত ক্ষমতায় এলে কী করবে ইতোমধ্যে দেশের কিছু অংশে তার মহড়া শুরু হয়েছে। তারা নতুন করে হাওয়া ভবন চালু এবং রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের ওপর হামলা, সংখ্যালঘু নির্যাতন, নারী ধর্ষণ ও চাঁদাবাজি শুরু করবে।

    বিএনপি বর্তমান সরকার গৃহীত বিনামূল্যে পাঠ্যপুস্তক বিতরণ, বৃত্তি, কমিউনিটি ক্লিনিকসহ শিক্ষার জন্য নেয়া বিভিন্ন কর্মসূচি বন্ধ করে দেবে।

    ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট ঢাকায় আওয়ামী লীগের সমাবেশে গ্রেনেড হামলার ঘটনা স্মরণ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, বঙ্গবন্ধু হত্যাকা-ের পর বাংলাদেশে ষড়যন্ত্রের রাজনীতি শুরু হয়। তিনি আরো বলেন, জনগণের ভাত ও ভোটের অধিকার হরণ এবং বাংলাদেশকে সন্ত্রাসবাদ ও জঙ্গিবাদের দেশে পরিণত করা হয়েছিল। তিনি বলেন, বাংলাদেশ বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে স্বাধীনতা লাভ করে। বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতা লাভের পর স্বল্প সময়ের মধ্যে বিধ্বস্ত দেশটি পুনর্গঠন করেছিলেন। কিন্তু বঙ্গবন্ধু যখন দেশকে অর্থনৈতিক অগ্রগতির পথে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছিলেন ঠিক তখনই তাকে হত্যা করা হয়।

    তিনি বলেন, বিগত সাত বছরেও বিএনপির চরিত্র একটুও বদলায়নি। বেসরকারি খাতে বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য তার সরকারের উদ্যোগ গ্রহণের উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তার সরকার ১৯৯৬ সালে ক্ষমতা গ্রহণের পর হরিপুর ও মেঘনাঘাটে প্রথম এ ধরনের উদ্যোগ নিয়েছিল। বিগত সাধারণ নির্বাচনে মহাজোটের পাঁচজন প্রার্থীর সকলকেই নির্বাচিত করায় নারায়ণগঞ্জের জনসাধারণকে ধন্যবাদ জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, জনগণের রায় নারায়ণগঞ্জের ব্যাপক উন্নয়ন সাধনে তার সরকারের জন্য সহায়ক হয়েছে।

    এর আগে প্রধানমন্ত্রী সোনারগাঁওয়ে বেশ কয়েকটি উন্নয়ন প্রকল্প, ৪১২ মেগাওয়াট কম্বাইন্ড সাইকেল পাওয়ার প্ল্যান্ট, মুক্তিদ্ধোদ্ধা এসএম মাজহারুল হক অডিটরিয়াম ও কম্যুনিটি সেন্টার, নারায়ণগঞ্জ সার্কিট হাউজ ও স্যার জ্যোতি বসু পাঠাগার ও সেমিনার হলের উদ্বোধন করেন। তিনি বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব রিসার্চ এন্ড ট্রেনিং অন অ্যাপলাইড নিউট্রেশন, প্রাইমারি টিচার্স ট্রেনিং ইনস্টিটিউট, আড়াইহাজার উপজেলা কমপ্লেক্স, মুড়াপাড়ায় শীতলক্ষ্যার ওপর পিসি গার্ডার ব্রিজ ও আড়াইহাজারে দয়াকান্দা খালের ওপর ব্রিজ, এগ্রিকালচার ট্রেনিং ইনস্টিটিউট, বন্দর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও সিদ্ধিরগঞ্জে ৩৩৫ মেগাওয়াট কম্বাইন্ড সাইকেল পাওয়ার প্ল্যান্টের উদ্বোধন করেন।

    প্রধানমন্ত্রী বলেন, বর্তমান সরকারের আমলে নারায়গঞ্জের প্রতিটি আনাচে কানাচে উন্নয়নের ছোঁয়া লেগেছে। তিনি বলেন, বর্তমান সরকারের আমলে ২১ হাজার কিলোমিটার সড়ক এবং ৪ হাজারেরও বেশি ব্রিজ-কালভার্ট নির্মিত হয়েছে। বিডিনিউজ,বাসস