যুগান্তরের বিরুদ্ধে ১১০০শ’কোটি টাকার মানহানি মামলা

    0
    227

    আমারসিলেট24ডটকম,ফেব্রুয়ারীঃ মিথ্যা ও মানহানিকর সংবাদ প্রকাশের অভিযোগে দৈনিক যুগান্তর পত্রিকার বিরুদ্ধে এক হাজার ১০০ কোটি টাকার মানহানি মামলা করেছে বসুন্ধরা গ্রুপের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান ইস্ট-ওয়েস্ট প্রপার্টিজ ডেভেলপমেন্ট লিমিটেড ও তার চেয়ারম্যান আলহাজ আহমেদ আকবর সোবহান। আজ সোমবার সকালে ঢাকার প্রথম যুগ্ম জেলা জজ আদালতে তিনি হাজির হয়ে মামলাটি দায়ের করেন। মামলায় দৈনিক যুগান্তর পত্রিকার মালিক ও যমুনা গ্রুপের চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম বাবুল, পত্রিকাটির প্রকাশক ও সম্পাদক সালমা ইসলাম, তাদের ছেলে শামীম ইসলাম এবং পত্রিকার নির্বাহী সম্পাদক সাইফুল আলমসহ সাতজনকে বিবাদী করা হয়েছে।

    সংশ্লিষ্ট আদালতের বিচারক মোঃ ফজলে এলাহী ভুঁইয়া বাদীর মামলাটি গ্রহণ করে বিবাদীদের প্রতি সমন জারি করেছেন। আগামী ৩১ মার্চ সমন-সংক্রান্ত প্রতিবেদনের জন্য দিন ধার্য করা হয়েছে।
    মামলায় বলা হয়, আসামিরা নিজেদের ব্যবসায়িক স্বার্থ হাসিলের জন্য সমাজের সম্মানিত ব্যক্তিবর্গ, ব্যবসায়ী, রাজনীতিবিদ, সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী, বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, বিভিন্ন স্বনামধন্য ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান ও শিল্পপ্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে তাদের মালিকানাধীন দৈনিক যুগান্তর পত্রিকার মাধ্যমে কুৎসামূলক মিথ্যা, বিভ্রান্তিকর ও মানহানিকর রিপোর্ট প্রকাশ করে দীর্ঘদিন যাবৎ বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে হয়রানি করে আসছে।
    ইস্ট-ওয়েস্ট প্রপার্টিজ ডেভেলপমেন্ট লিমিটেড বসুন্ধরা গ্রুপের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান হিসেবে ১৯৮৭ সাল থেকে বেসরকারি আবাসন খাতে সততা, আন্তরিকতা, দক্ষতা ও পেশাদারত্বের সঙ্গে ব্যবসা করে গ্রাহকের আস্থা অর্জন করে। ইস্ট-ওয়েস্ট প্রপার্টিজ ডেভেলপমেন্ট লিমিটেডের প্রকল্পগুলো বসুন্ধরা হাউজিং হিসেবে সর্বাধিক পরিচিত।
    এ ছাড়া বসুন্ধরা গ্রুপ সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে আবাসন, কাগজ, সিমেন্ট, লৌহ, খাদ্য, প্রিন্টিং, শিপিংসহ বিভিন্ন খাতে অত্যন্ত সুনামের সঙ্গে ব্যবসা পরিচালনা করে আসছে। বসুন্ধরা গ্রুপের সঙ্গে ৩০ হাজার শ্রমিক-কর্মচারী ও প্রায় দুই লাখ লোক প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িত।
    গত বছরের ২৮ অক্টোবর আসামিদের মালিকানাধীন দৈনিক যুগান্তর পত্রিকার প্রথম পৃষ্ঠায় ‘বসুন্ধরা হাতিয়ে নিয়েছে ৫০ হাজার কোটি টাকার সম্পত্তিঃ মন্ত্রী, সচিবের বিরুদ্ধে তিন হাজার কোটি টাকার ঘুষ গ্রহণের অভিযোগঃ দ্রুত তদন্ত দাবি করে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা-ড্যাপ উপকমিটির সর্ববৃহৎ দুর্নীতি’ শিরোনামে একটি খবর ছাপা হয়।
    মামলায় বাদী অভিযোগ করেন,  বসুন্ধরা গ্রুপকে প্রতিদ্বন্দ্বী ভেবে যমুনা গ্রুপের মালিকানাধীন দৈনিক যুগান্তর পত্রিকায় বসুন্ধরা গ্রুপ ও তার অঙ্গপ্রতিষ্ঠান ইস্ট-ওয়েস্ট প্রপার্টিজ ডেভেলপমেন্ট লিমিটেডের সুনাম নষ্ট ও ব্যবসায়িক ক্ষতি সাধনের জন্য একটি চরম মিথ্যা, বিভ্রান্তিকর ও মানহানিকর এ প্রতিবেদন করে। এর ফলে বাদী প্রতিষ্ঠানটির ব্যাপক মানহানি হয়েছে।
    দৈনিক যুগান্তর এ বিভ্রান্তিকর সংবাদ প্রকাশ করে শুধু বাদী প্রতিষ্ঠানের ব্যবসায়িক ক্ষত করেনি বরং আগামি জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ঠিক পূর্ব মূহূর্তে একটি বিশেষ গোষ্ঠীর অবৈধ স্বার্থ হাসিলের জন্য মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের শক্তির সরকারের মন্ত্রী, এমপি, সরকারি কর্মকর্তা, কর্মচারীকে জাতির নিকট হেয় প্রতিপন্ন করেছে।
    মামলায় বলা হয়, দৈনিক যুগান্তর পত্রিকায় উক্ত সংবাদ প্রকাশের পর ওই দিনই একটি প্রতিবাদলিপি পাঠানো হয়। কিন্তু তা যথাযথভাবে প্রকাশ না করে পরের দিন ২৯ অক্টোবর একই বিষয় নিয়ে আরো একটি মনগড়া মানহানিকর সংবাদ প্রকাশ করে। মামলায় দৃঢ়ভাবে দাবি করা হয়, বাদী প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে কোনো মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী, সচিব বা সরকারি কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সঙ্গে কোনো প্রকার সম্পর্ক ছিল না, বর্তমানেও নেই। ২০১০ সালের ২২ জুন ড্যাপের গেজেট প্রকাশ হওয়ার বহু আগে থেকেই ইস্ট ওয়েস্ট প্রপার্টিজ ডেভেলপমেন্ট লিমিটেড বিভিন্ন ব্যক্তি ও গোষ্ঠীর কাছ থেকে ক্রয়, বিনিময় ও পাওয়ার অব এটর্নিমূলে বেশ কিছু জমির মালিকানা অর্জন করে। বসুন্ধরা গ্রুপ কোনো সরকারি সম্পত্তি বেআইনিভাবে দখল করেনি। কোনো সরকারি জলাশয়, খাল বা নদীও ভরাট করেনি।
    আসামিদের প্রকাশিত রিপোর্টটিকে সম্পূর্ণ মিথ্যা, কাল্পনিক ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে।