মামুনুলের রিসোর্ট কাহিনীর বিতর্ক ক্রমেই বাড়ছে,পুলিশের স্থাপনায় হামলার গুজব

0
990
মামুনুলের রিসোর্ট কাহিনীর বিতর্ক ক্রমেই বাড়ছে,পুলিশের স্থাপনায় হামলার গুজব
মামুনুলের রিসোর্ট কাহিনীর বিতর্ক ক্রমেই বাড়ছে,পুলিশের স্থাপনায় হামলার গুজব

নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয় রিসোর্টে হেফাজতে ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মোহাম্মদ মামুনুল হককে অবরুদ্ধ করার ঘটনা নিয়ে ক্রমেই বাড়ছে বিতর্ক। সঙ্গে থাকা নারী জান্নাত আরা ঝর্ণাকে মামুনুল দ্বিতীয় স্ত্রী বলে দাবি করলেও ডজনখানেক অডিও-ভিডিও ফাঁস হওয়ায় এ সম্পর্ক নিয়ে নানা বিতর্ক ছড়িয়েছে। সর্বশেষ ঝর্ণার তিনটি ডায়েরি প্রকাশ পেয়েছে। ওই ডায়েরিগুলোতে তিনি মামুনুলের বিরুদ্ধে আক্ষেপ প্রকাশ করে লিখেছেন, বিয়ে না করে একটি বাসায় মামুনুল তাঁকে রেখেছেন। টাকা দিলেও আশ্বাস ভঙ্গ করেছেন। ঝর্ণার বড় ছেলে ডায়েরিগুলো তাঁর মায়ের বলে দাবি করেছেন। এদিকে গতকাল শুক্রবার পর্যন্ত মামুনুলকে গ্রেপ্তারের বিভিন্ন গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়ে। তবে দায়িত্বশীল পুলিশ কর্মকর্তারা বলছেন, পর্যাপ্ত প্রমাণ ও হাইকমান্ডের নির্দেশনা পেলে ০মামুনুলকে গ্রেপ্তার করা হবে।

মামুনুলের রিসোর্টকাণ্ডে বিব্রত হেফাজত নতুন কর্মসূচি না দিয়ে কৌশলী অবস্থান নিয়েছে। তবে হেফাজতের ধারাবাহিক নাশকতার কারণে দেশজুড়ে সতর্ক অবস্থান নিয়েছে পুলিশ। গুজব ছড়িয়ে পুলিশের স্থাপনায় হামলার কারণে দেশের কিছু থানা ও ফাঁড়ির নিরাপত্তায় লাইট মেশিনগান পোস্ট (এলএমজি) স্থাপন করা হয়েছে। একাধিক সূত্র জানিয়েছে, চট্টগ্রাম ও খুলনার পর ব্রাহ্মণবাড়িয়া, সিলেট ও ঢাকার কিছু গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় এমন নিরাপত্তা বসানো হয়েছে। হেফাজত নেতাদের কর্মকাণ্ড ও গতিবিধির ওপর নজরদারি বাড়ানো হয়েছে।

এদিকে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে করা মামলায় ‘শিশু বক্তা’ রফিকুল ইসলাম মাদানীর বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য আগামী ৩০ মে দিন ধার্য করেছেন ঢাকা মহানগর হাকিম আদালত। গত বৃহস্পতিবার আদনান শান্ত নামে এক ব্যক্তি মতিঝিল থানায় মামলা করার পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল আদালত এ নির্দেশনা দেন।

গতকাল মামুনুলের দ্বিতীয় স্ত্রী ঝর্ণার ২০০ পৃষ্ঠার একটি ডায়েরি দেখে সেটি তাঁর মায়ের বলে নিশ্চিত করেন ছেলে আব্দুর রহমান। তিনি একটি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলকে সাক্ষাৎকারও দিয়েছেন। ঝর্ণার ডায়েরিতে লেখা, ‘আমাকে বিয়ে না করেই গ্রিন রোডের একটি বাসায় রাখেন মামুনুল হক। আমাকে খরচের টাকাও দিতেন; কিন্তু বিয়ে করে স্ত্রী বানাননি।’ ডায়েরির বর্ণনা অনুযায়ী, বিয়ের আশ্বাসের বিনিময়ে অবৈধ মেলামেশা করতেন মামুনুল, যা মেনে নিতে পারেননি ঝর্ণা। ডায়েরিতে ঝর্ণা লেখেন, ‘আমি তাঁকে ভালোবাসি, না ঘৃণা করি, বুঝতে পারছি না। কিন্তু তিনি আমার জীবনকে নরক বানিয়ে ফেলছেন।’ মামুনুল হক প্রায় দুই বছর আগে বিয়ের কথা বললেও ডায়েরির বর্ণনা মতে, কয়েক মাস আগেও তাঁদের বিয়ে হয়নি।

হেফাজত ইসলামের নেতারা মামুনুলের ব্যক্তিগত জীবনের এই বিতর্ক নিয়ে বিব্রত। এ কারণে কৌশল পাল্টে কোনো কর্মসূচি না দিয়ে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছেন তাঁরা।

এদিকে গতকাল ঢাকায় হেফাজতের কোনো কর্মসূচি না থাকলেও বায়তুল মোকাররম এলাকায় সতর্ক অবস্থানে ছিল পুলিশ। মতিঝিল জোনের জ্যেষ্ঠ সহকারী পুলিশ কমিশনার জাহিদুল ইসলাম বলেন, এর আগেও পূর্বঘোষিত কর্মসূচি ছাড়াই জুমার নামাজ শেষে কর্মসূচির নামে অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটিয়েছেন হেফাজতকর্মীরা। এ জন্য সতর্ক অবস্থানে আছে পুলিশ।

অপর দিকে যুগান্তর সুত্রে জানা যায়, সরকারদলীয় নেতাদের হত্যা পরিকল্পনা, হেফাজতের ৩ নেতা গ্রেফতার

হেফাজত নেতা মামুনুল হককে অবরুদ্ধ করার ইস্যুতে সোনারগাঁয়ের কয়েকজন সরকারদলীয় নেতাকে হত্যার পরিকল্পনা করায় হেফাজতে ইসলামের তিন নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। শুক্রবার অভিযান চালিয়ে নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন এলাকা থেকে তাদের গ্রেফতার করে জেলা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) একাধিক টিম।

ওই তিন নেতাকে হত্যা করতে ইতোমধ্যেই হেফাজতের কয়েকজন তাদের ফেসবুকের মাধ্যমে নিজেদের গ্রুপ পোস্টে বার্তাও ছড়িয়ে দিয়েছিলেন বলে নিশ্চিত করেছেন জেলা পুলিশের শীর্ষ কর্মকর্তারা।

তারা জানিয়েছেন, ছাত্রলীগের নেতা সোহাগ রনিকে হত্যার করতে নিজেদের মধ্যে পরিকল্পনার কথোপকথনের অডিও রেকর্ডও হাতে এসেছে তাদের। সুনির্দিষ্ট এসব প্রমাণের ভিত্তিতে গ্রেফতার করা হয়েছে এই পরিকল্পনার মূল হোতা হেফাজতে ইসলামের নেতা খালেদ সাইফুল্লাহ সাইফ, হেফাজতে ইসলামের কর্মী কাজি সমির ও তাবলীগ জামাতের সদস্য আব্দুল অহিদকে।