রাষ্ট্রপতি মো. জিল্লুর রহমান আর নেই। — ইন্না লিল্লাহি…রাজিউন। আগামী তিন দিন রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা

    0
    432

    সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে আজ বাংলাদেশ সময় বিকেল চারটা ৪৭ মিনিটে রাষ্ট্রপতি মো. জিল্লুর রহমান ইন্তেকাল করেছেন — ইন্না লিল্লাহি…রাজিউন। তাঁর মৃত্যুতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, রাষ্ট্রপতির দায়িত্বে থাকা স্পিকার আবদুল হামিদ গভীর শোক প্রকাশ করে শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন। আরো শোক প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন এমপি ও সাধারণ সম্পাদক আনিসুর রহমান মল্লিক। জিল্লুর রহমানের মৃত্যুতে আগামী তিন দিন রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করা হয়েছে।
    জিল্লুর রহমান শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যায় ৯ মার্চ রাতে ঢাকা সেনানিবাসের সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। কিন্তু চিকিৎসকদের পরামর্শ অনুযায়ী উন্নত চিকিৎসার জন্য তাঁকে ১০ মার্চ রাতে সিঙ্গাপুরে পাঠানো হয়। ১১ মার্চ সকালে সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে তাঁকে ভর্তি করা হয়।
    জিল্লুর রহমানকে সিঙ্গাপুরে নেওয়ার পর সংবিধান অনুযায়ী স্পিকার আবদুল হামিদ ১৪ মার্চ থেকে রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালন করছেন।
    জিল্লুর রহমান ১৯২৯ সালের ৯ মার্চ কিশোরগঞ্জ জেলার ভৈরবে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইতিহাসে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন। একই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিনি আইন বিষয়ে স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন।
    ১৯৫২ সালের ভাষা-আন্দোলন থেকে শুরু করে এ পর্যন্ত দেশের সবকটি আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন জিল্লুর রহমান। তিনি মুক্তিযুদ্ধে সক্রিয় অংশগ্রহণ করেন।
    জিল্লুর রহমান ১৯৭০ সালে পাকিস্তান জাতীয় পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হন। ২০০৮ সালের নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনসহ ১৯৭৩, ১৯৮৬, ১৯৯৬ ও ২০০১ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কিশোরগঞ্জের কুলিয়ারচর-ভৈরব আসন থেকে তিনি সাংসদ নির্বাচিত হন। ১৯৯৬ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করলে তিনি স্থানীয় সরকার মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
    ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট রাজধানী ঢাকার বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের সমাবেশে গ্রেনেড হামলায় জিল্লুর রহমান তাঁর সহধর্মিণী ও মহিলা আওয়ামী লীগের তত্কালীন সভানেত্রী আইভি রহমানকে হারান।
    ফখরুদ্দীন আহমদের তত্ত্বাবধায়ক সরকার দায়িত্ব নিলে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা গ্রেপ্তার হন। তখন আওয়ামী লীগের হাল ধরেন জিল্লুর রহমান।
    ২০০৮ সালের নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন মহাজোট সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে। নবম জাতীয় সংসদে জিল্লুর রহমান প্রথমে সংসদ উপনেতা নির্বাচিত হন। পরে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ তাঁকে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন দেয়। তিনি বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ২০০৯ সালে বাংলাদেশের ১৯তম রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হন। ২০০৯ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি শপথ গ্রহণের মাধ্যমে রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব গ্রহণ করেন তিনি।
    কিশোরগঞ্জ আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ছাড়াও জিল্লুর রহমান আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্যসহ বিভিন্ন সময় দলের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে ছিলেন। পারিবারিক জীবনে তিনি এক ছেলে ও দুই মেয়ের বাবা।

    জিল্লুর রহমানের মৃত্যুতে আগামী তিন দিন রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করা হয়েছে।
    রাষ্ট্রপতির দায়িত্বে থাকা স্পিকার আবদুল হামিদ আজ বুধবার এ শোক ঘোষণা করেছেন। বঙ্গভবনের একজন মুখপাত্র বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থাকে এ তথ্য জানিয়েছেন। 

    president_zillur_rahman-1