ব্যাংকে তারল্য সংকট ছাতকে সহস্রাধিক শিল্প-কারখানা বিপর্যয়ের মূখে

    0
    540

    আমারসিলেট24ডটকম,০৪জানুয়ারী,চান মিয়াছাতকে টানা হরতাল-অবরোধের মূখে সহস্রাধিক শিল্প কারখানার উৎপাদন-বিপনন ও পন্য তৈরীতে ব্যবহৃত কাঁচামাল আমদানীতে চরম বিপর্যয় নেমে এসেছে। এরমধ্যে সবচেয়ে বেশী ক্ষতির সম্মূখীন হচ্ছে, লাফার্জ সুরমা সিমেন্ট লিমিটেডও ছাতক সিমেন্ট কারখানা। জানাগেছে, টানা হরতাল-অবরোধে দু’টি কারখানার মালামাল উৎপাদন-বিপননও চট্টগ্রাম থেকে সিমেন্ট তৈরীর প্রধান কাঁচামাল জিপসাম আমদানী বিপর্যয়ের মূখে পড়েছে। ট্রাক ও দুরপালল্লার যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকায় এপরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। এতে দু’কারখানার শুধু পরিবহন খাতেই প্রতিদিন ক্ষতি হচ্ছে প্রায় ১০লক্ষাধিক টাকা।

    এভাবে ব্যাংকে চরম তারল্য সংকট থাকায় প্রত্যহ ৫হাজার থেকে ১০হাজার টাকার বেশী উত্তোলন করতে পারছেন না গ্রাহকরা। ইসলামী ব্যাংকের ম্যানেজার মখছুদুর রহমান মুন্সি জানান, আমাদের ব্যাংকে যেখানে প্রতিদিন প্রায় ৬কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে এখন হচ্ছে মাত্র ১কোটি টাকা। টাকার অভাবে ব্যাংকের এটিএম বুথ দীর্ঘ ২০দিন ধরে বন্ধ ছিল। এখন বুথটি চালু হলেও এটি আবারও বন্ধ হয়ে যেতে পারে।

    স্থানীয় বিনিয়োগকারীরা ব্যাংকে যথাযথ টাকা লেনদেন করতে না পেরে নানা সমস্যায় পড়ছেন। ফলে তারা আর্থিক সংকটে প্রত্যহ পাথর শ্রমিকদের মজুরী দিতে পারছেন না। টানা হরতাল-অবরোধে শহরে সহস্রাধিক ক্রাসার মেশিন, চুনা কারখানা, সিমেন্ট কারখানাসহ অন্যান্য শিল্প প্রতিষ্টানগুলোর মালামাল আমদানী-রপ্তানী বন্ধ থাকায় স্থানীয় অর্থনীতিতে মারাত্মক প্রভাব পড়ছে। দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষনার পরদিন ২৬ নভেম্বর থেকে দেশেব্যাপী ১৮দিন অবরোধ পালন করছে ১৮দলীয়জোট। একটি সূত্র জানায়, গত নভেম্বরও চলতি ডিসেম্বর মাসে অবরোধ-হরতালে মারাত্মক বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে সিমেন্ট ব্যবসা।

    লাফার্জের কমিউনিকেশন এন্ড সিআর ম্যানেজার তাওফিক ইনাম জানান, ফ্যাক্টরী থেকে প্রায় দেড় শতাধিক ট্রাকও লরি প্রতিদিন ৩শ’থেকে ৪শ’মেঃটন সিমেন্ট নিয়ে কারখানার নিজস্ব ডিপোতে সরবরাহ করা হতো। এখন সড়ক পথে পরিবহন বন্ধ থাকায় প্রতিষ্টানের বিপুল পরিমান আর্থিক ক্ষতিসহ সিমেন্ট শিল্পে জড়িত দিন মজুরও পরিবহন শ্রমিকরা মানবেতর জীবন-যাপন করছে। এখন শতকরা ২০ভাগ সিমেন্ট নৌ-পথে সরবরাহ হচ্ছে বলে তিনি জানান। একই পরিস্থিতিতে পড়েছে ছাতক সিমেন্ট কারখানা। গত ২মাসে এটির সরবরাহ অস্বাভাবিকহারে কমে গেছে। এতে কারখানার সাইলোগুলোতে প্রায় ১১হাজার মেঃটন অবিত্রিত সিমেন্ট পড়ে রয়েছে। সিমেন্ট বিক্রি বন্ধ থাকায় কারখানায় কর্মরত শ্রমিক-কর্মচারীদের নিয়মিত বেতন-ভাতা প্রদানে হিমশিম খাচ্ছে কর্তৃপক্ষ। ব্যবস্থাপনা পরিচালক শফিকুল ইসলাম (বদলী) জানান, দেশে অচলাবস্থার কারনে সিমেন্ট ডিলারদের পাশাপাশি ফ্যাক্টরীগুলো চরম অর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে।

    এ অবস্থা চলতে থাকলে সময় মতো শ্রমিক-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা পরিশোধ করা কষ্টকর হবে। একাধিক পাথর ব্যবসায়ী জানান, দেশের চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে সড়ক পথে পাথর আমদানী-রপ্তানী বন্ধ রয়েছে। সিলেটের পরিবহন ব্যবসায়ীও  ট্রাক মালিক সমিতি নেতা মোনায়েম খাঁন বাবুল জানান, হরতাল-অবরোধে ট্রাক-লরির নিরাপত্তা জনিত কারনে বন্ধ রাখা হয়েছে। সিমেন্ট বহনকারী এসব ট্রাক-লরি বন্ধ থাকায় শুধু লাফার্জের প্রত্যহ ৫লক্ষাধিক টাকার ক্ষতি হচ্ছে। এছাড়া চলমান অবরোধে স্থানীয় বাজারে দ্রব্যমূল্য অস্বাভাবিকহারে বৃদ্ধি পাচ্ছে।