বিয়ানীবাজারে ছাত্রলীগ কর্মী খুনঃখালাতো বোনের স্ট্যাটাস

    0
    323

    “সিলেট বিয়ানীবাজার সরকারী কলেজে নিহত ছাত্রলীগ কর্মী খালেদ আহমদ লিটুর আপন খালাতো বোনের ফেসবুকে স্ট্যাটাসে প্রকাশিত খোলা চিঠি”

    আমার সিলেট টুয়েন্টিফোর ডটকম,২০জুলাই,জহিরুল ইসলাম:বিয়ানীবাজার সরকারি কলেজে গত সোমবার গুলিতে নিহত লিটু ছাত্রলীগের কর্মী নয় বলে দাবি করেছে সিলেট জেলা ছাত্রলীগ। মঙ্গলবার সিলেট জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি শাহরিয়ার আলম সামাদ এবং সাধারণ সম্পাদক রায়হান আহমদ স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বিয়ানীবাজার সরকারি কলেজে অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব ও আধিপত্য বিস্তার নিয়ে নিহত ‘ছাত্রলীগ কর্মী’ লিটু আসলে ছাত্রলীগের কর্মীই নয়।

    গোলাগুলিতে নিহত লিটু একজন বহিরাগত ছাত্র এবং মোবাইল দোকানের স্বত্বাধিকারী বলে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে।

    তাদের এই দাবির প্রেক্ষিতে নিহত লিটুর খালাতো বোন রুমি বেগম সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুক স্ট্যাটাসে লিখেছেন ভিন্ন কথা। তার লেখা খোলা চিঠিটি হুবুহু নিচে তুলে ধরা হল।

    #আমি #রাজনীতি করিনা আর তাই রাজনীতি নিয়ে ও আমার মাথা ব্যাথা নেই। #ভাবছিলাম লিটু হত্যাকাণ্ড নিয়ে কিছুই লিখবো না কিন্তু পরিস্থিতি এমন এক পর্যায়ে এসে দাঁড়িয়েছে যে না লিখলে নিজের বিবেকের কাছে ছোট হয়ে যাব তাই লিখলাম। কারন সে আমার ভাই আর রক্তের সম্পর্ক জড়িত! জানিনা কজনে আমার লিখা টা পড়বেন!? গতকাল যখন লিটুর লাশ টা দেখি ফেসবুকে তখন বুক ফেটে কান্না আসছিল। অনেক কাঁদছি আমি আর এখন ও কাঁদছি। এমন নির্মম নিষ্ঠুর নৃশংস হত্যাকাণ্ড খুব কম ই দেখা যায়। কাল যখন নিউজ আসতে শুরু হলো দেশি-বিদেশি অনলাইন নিউজপেপার, টিভি চ্যানেল আর ফেসবুকে সবখানেই একটা কথাই স্পষ্ট করে আসছে আর এখনো আসছে যে, লিটু ছাত্রলীগ কর্মী ছিল। আর এই কথাটা মিডিয়া জগতে পরিস্কার ভাবে সবাই প্রচার করেছেন সাংবাদিক বলেন আর সাধারণ মানুষ বলেন। আমার ও একি কথা যে, লিটু ছাত্রলীগ এর কর্মী ছিল আর তা যে গ্রুপ ই হক নাম দিয়ে কি বা আসে যায়। আসল কথা বিয়ানীবাজারের আপামর জনগণ সবাই সারাদিন একই কথা বলে গেছেন। তবে যারা বলেন নি তাদের দিকে সবার #আংগুল আর তাঁরা কে বা কারা স্পষ্ট করে বলার অপেক্ষা রাখেনা। তবে আসল ঘটনা শুরু হলো লিটুর জানাযার নামাজের পুর্ব মুহুর্ত থেকে। বিয়ানীবাজারের বর্তমান #নেতা ও #নেতাদের পেছনের নেতারা স্টেটাস দিতে শুরু করলেন যে-কসবা বাঘর টিলা নিবাসী খলিল উদ্দিন এর ছেলে লিটু আজ সন্ত্রাসী হামলায় মারা গেছে। উনারা ছাত্রলীগ কর্মী নামটা কেটে দিলেন। কি চমৎকার বহিঃপ্রকাশ উনাদের ওয়াও!! ওয়াও!! বেঁচে যখন ছিল তখন তো সব মিছিল মিটিং এ ঠিক অংশ গ্রহন করাতেন আর মরে গেল তখন চাঁচা আপন জান বাঁচা বলে বাচাইতেছেন প্রান। বেঁচে থাকলে ছাত্রলীগ এর #কর্মী আর মরে গেলে #সন্ত্রাসী!? উনাদের কথার সাথে মিল রেখে কাল রাতে সিলেট জেলা ছাত্রলীগের এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয় -লিটু #বহিরাগত সন্ত্রাসী ছিল সে নিজেই নিজের গুলিতে মারা যায়-হাউ পেথেটিক!! উনাদের কথায় মনে হয় -লিটুর পিছনে দুইটা হাত ছিল আর সেই হাত দিয়ে নিজেকে মাথার পিছনে গুলি করে চোখ সহ মগজ বের করে মরে যাবার পর বন্ধুক টা বন্ধুদের হাতে দিয়ে মোবাইল সহকারে বলেছে তোরা পালাই যা।কি হাস‍্যকর প্রেস বিজ্ঞপ্তি!!হা হা বোবার মুখে হাসি ফোটাতে সক্ষম। এ দিকে সিলেট জেলা ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সম্পাদক জাকির হোসেন বলেছেন-লিটু ছাত্রলীগ কর্মী তার সুষ্ঠু বিচার হবে। বিয়ানীবাজার থানার ওসি সাহেব বলেছেন-আমার উপর সহানীয় (স্থানিয়), জেলা ও থানা পর্যায়ের বড় বড় নেতারা চাপ দিচ্ছেন মামলার সঠিক তদন্ত না করতে।তবে উনি বদ্ধপরিকর তদন্ত করবেন ই,তবে শেষ পর্যন্ত উনি কতটা সফল হবেন সেটা চিন্তার বিষয়।আজ সকালে বিয়ানীবাজার বাজার অনলাইন পেপার এ জানলাম। আমাদের মাননীয় শিক্ষামন্ত্রীর দুইজন প্রতিনিধির একজন ও এখন পর্যন্ত মন্ত্রীর পক্ষে কোন শোক প্রকাশ করতে দেখিনি।আর আমাদের মাননীয় মন্ত্রী সাধারণ মুদীর দোকান থেকে শুরু করে পানসুপারির দোকান ও উদ্বোধন করে থাকেন । আর লিটু উনার কর্মী পাশাপাশি আত্মীয় ও। এ জায়গায় উনার নিরবতা জনমনে বিভিন্ন প্রশ্নের জন্ম দিচ্ছে। আমি বিয়ানীবাজার বাসীদের উদ্দেশ্য বলতে চাই-দলমত নির্বিশেষে লিটুর হত্যা কারী দের আসল মুখোশ উন্মোচন করতে এগিয়ে আসেন জনমত তৈরি করেন।সে তার মায়ের একমাত্র সন্তান ছিল সেই মা এর জন্যে সত্যের সাথে হাত মিলিয়ে এগিয়ে আসেন। নোংরা পলিটিক্সের স্বীকার লিটু আমার ছোট ভাই কারো হয়তো বন্ধু সবচেয়ে বড় কথা সে বিয়ানীবাজারের সহানীয় (স্থানিয়) ছেলে তার মৃত্যুর পরবর্তী নাটকে আপনারা শরীক হবেন না

    উল্লেখ্য গত ১৭ জুলাই সোমবার ১২টার দিকে বিয়ানীবাজার সরকারি কলেজের একটি কক্ষ থেকে ছাত্রলীগ নেতা লিটুর লাশ গুলিবিদ্ধ অবস্থায় উদ্ধার করেছে পুলিশ। কলেজের একটি কক্ষ থেকে গুলির শব্দ শোনে ক্যাম্পাসে থাকা পুলিশ সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে ছাত্রলীগ নেতার রক্তাক্ত দেহ দেখতে পান। ডান চোখের উপরে গুলির আঘাত লেগে মাথার পেছন থেকে বেরিয়ে যায়। এ সময় কক্ষে অন্য কাউকে পায়নি পুলিশ। এমনকি কক্ষে কোন ধরনের আগ্নেয়াস্ত্র পাওয়া যায়নি।

    বিয়ানীবাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) চন্দন কুমার চক্রবর্তী বলেন, বর্তমানে পরিস্থিতি পুলিশের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। লাশ ময়না তদন্তের জন্য সিলেট পাঠানো হয়েছে।

    জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ছাত্রলীগ নেতা এমদাদ, কামরান ও ফাহাদ নামের চারজনকে আটক করা হয়েছে। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে ঘটনার সুরাহা করা হবে।

    বিয়ানীবাজার সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক দ্বারকেশ চন্দ্র নাথ বলেন, কি নিয়ে ঘটনা ঘটেছে বুঝতে পারিনি। সকাল ১১ টার দিকে বিজ্ঞান বিভাগ ও ইংরেজি বিভাগের কক্ষগুলো পরিদর্শন করে আসি। সে সময় ওই কক্ষ খালি ছিল। এরপর হঠাৎ করে বিকট শব্দ পাই। ক্যাম্পাসে থাকা পুলিশ সদস্যরা শব্দ শোনে ঘটনাস্থলে গিয়ে যুবকের রক্তাক্ত দেহ উদ্ধার করেন।

    তিনি বলেন,বিয়ানীবাজার সরকারি কলেজের ছাত্রলীগ কর্মী নিহত হওয়ার ঘটনায় কলেজের অভ্যন্তরিন সকল পরীক্ষা আগামী ২২ জুলাই পর্যন্ত স্থগিত করা হয়েছে।
    এছাড়া একই সময় কলেজের সকল পর্যায়ের পাঠদান বন্ধ থাকবে। যথারীতি অফিস খোলা রাখা হবে। এছাড়া স্নাতক (পাশ) জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে পরীক্ষাগুলো যথা সময়ে অনুষ্ঠিত হবে।

    কলেজ অধ্যক্ষ অধ্যাপক দ্বারকেশ চন্দ্র নাথ কলেজের অভ্যন্তরিন পরীক্ষা ও পাঠদান আগামী ২২ জুলাই পর্যন্ত স্থগিত রাখার কলেজের সিদ্ধান্তের কথা জানান। একই সময়ে জাতীয় বিশ্ব বিদ্যালয়ের অধীন পরীক্ষাগুলো যথাসময়ে নেয়া হবে তিনি জানান।

    উল্লেখ্য নিহত লিটুর খালাতো বোন তার স্ট্যাটাসে ছাত্রলীগ কর্মী দাবী করলেও একই  কলেজের বর্তমান ছাত্র কিনা ? তা স্পষ্ট করে উল্লেখ করেনি।