বাংলাদেশের কাছে পাত্তাই পেল না পাকিস্তান

    0
    219

    আমারসিলেট টুয়েন্টিফোর ডটকম,২৪এপ্রিলঃ আত্মবিশ্বাসে টইটম্বুর একটা দল কতটা বিস্ফোরক হতে পারে, তারই নজির দেখল পাকিস্তান ও ক্রিকেট বিশ্ব। ওয়ানডে সিরিজে বাংলাওয়াশের পর একমাত্র টি-টোয়েন্টি ম্যাচেও বাংলাদেশের কাছে পাত্তাই পেল না পাকিস্তান।  সফরের একমাত্র টি-টোয়েন্টি ম্যাচটি ৩.৪ ওভার বাকি থাকতে সাত উইকেটে জিতে নিয়েছে টাইগাররা।

    শুক্রবার মিরপুরে পাকিস্তানকে হারিয়ে দেয়া ম্যাচটির মাধ্যমে টি-টোয়েন্টিতে এল টাইগারদের ১২তম জয়।এর আগে প্রথমে ব্যাট করে পাকিস্তান ৫ উইকেটে ১৪১ রান করে। জবাবে সাকিব-সাব্বিরের জোড়া হাফ সেঞ্চুরিতে ১৬.২ ওভারে ৩ উইকেটে ১৪৩ রান করে ম্যাচ জিতে নেয় বাংলাদেশ। ২২ বল আগেই আসে অনায়াস এবং দাপুটে জয়।

    তামিম-হাফিজ দ্বৈরথের কথা ভেবে আফ্রিদি ইনিংসের প্রথম ওভারেই বল তুলে দেন হাফিজের হাতে। এক ছক্কা, দুই চার দিয়ে তামিম জবাবটা দিয়েছেন আক্রমণাত্মকভাবে। পঞ্চম বলে সিঙ্গেল নিতে গিয়ে রান আউট হন সৌম্য। টি-২০ অভিষেকেই কোনো বল না খেলে শূন্য রানে আউট হওয়া দ্বিতীয় ব্যাটসম্যানের রেকর্ড বুকে চলে যায় সৌম্যর নাম। তৃতীয় ওভারেই গুলের অনেক বাইরের বল তাড়া করতে গিয়ে তামিম (১৪) স্লিপে হাফিজের হাতে ক্যাচ দেন।

    ইনফর্ম মুশফিকের শুরুটাও ছিল আক্রমণাত্মক। কিন্তু তিনিও স্থায়ী হননি উইকেটে। ওয়াহাব রিয়াজের বলটা ব্যাটে লেগে স্ট্যাম্প ভেঙে দিলে ফিরে যেতে হয় ১৫ বলে ১৯ রান করা মুশফিককে। ৩৮ রানে ৩ উইকেট হারানো বিপুল বিক্রমে বাংলাদেশকে কক্ষপথে ফিরিয়ে আনে সাকিব-সাব্বিরের জুটি। তাদের ব্যাটে পিষ্ট হতে থাকে পাকিস্তান। আফ্রিদি, গুল, ওয়াহাব রিয়াজদের ওপর চড়াও হন তারা দুজন। ধীরে ধীরে ম্যাচ থেকে ছিটকে পড়ে পাকিস্তান। গুলের করা ১১তম ওভারে দুটি চার ও একটি ছয়ে ১৪ রান নেন সাব্বির। ১৩তম ওভারের প্রথম বলে সাব্বিরের চারে একশো রান পার হয় বাংলাদেশ।

    একটা সময় দুজনই ৪৯ রানে পৌঁছে যান। তবে সাকিবের আগেই সাব্বির পূর্ণ করেন টি-২০ ক্যারিয়ারের প্রথম হাফ সেঞ্চুরি। ঠিক পরের বলেই সাকিব পঞ্চম হাফ সেঞ্চুরি করেন চার মেরে। ১৭তম ওভারেই দলের জয় নিশ্চিত করে মাঠ ছাড়েন তারা দুজন। সাকিব ৪১ বলে ৯টি চারে অপরাজিত ৫৭ রান করেন। সাব্বির ৩২ বলে অপরাজিত ৫১ রান (৭ চার, ১ ছয়) করেন। পাকিস্তানের পক্ষে উমর গুল, ওয়াহাব রিয়াজ একটি করে উইকেট পান।

    এর আগে টস জিতে ব্যাট করতে নামা পাকিস্তনের ইনিংসের শুরুতে অভিষিক্ত মোস্তাফিজের হাতে নতুন বল তুলে দিয়ে চমক দেখান মাশরাফি। লিকলিকে গড়নের বাঁহাতি এই তরুণ সুইং আর লাইন লেন্থের অপূর্ব সমন্বয়ে নাঁচিয়ে ছাড়লেন পাকিস্তানের ওপেনারদের। গোটা ইনিংসেই বাংলাদেশের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ের সামনে হাসফাঁস করেছেন পাকিস্তানের ব্যাটসম্যানরা। তবে চেষ্টার কমতি রাখেননি তারা। মোট ১১ টি চার ও তিনটি ছক্কা মেরেছেন পাকিস্তানের ব্যাটসম্যানরা।

    তারপরও ওপেনাররা পাকিস্তানকে ভালো শুরুই এনে দিয়েছেন। আহমেদ শেহজাদ-মুক্তার আহমেদের জুটিটা ভেঙেছেন তাসকিন। ইনিংসের নবম ওভারে আহমেদ শেহজাদ ১৭ রান করে আউট হন। লং অফে অসাধারন ক্যাচ নেন মাশরাফি।
    দ্বিতীয় স্পেলে এসে পাক অধিনায়ক শহীদ আফ্রিদির হাতে ছক্কা দেখতে হয়েছে মোস্তাফিজকে। তবে শেষ হাসি ছিল সাতক্ষীরার এই তরুণের মুখেই। অসাধারণ এক বলে আফ্রিদি ফিরেছেন মোস্তাফিজের প্রথম শিকার হয়ে। যদিও রিপ্লেতে দেখা গেছে আসলে বলটি আফ্রিদির ব্যাটে স্পর্শ করেনি। রিভিউ না থাকায় আফসোসে মাথা ঝাঁকাতে ঝাঁকাতে আফ্রিদি ফিরেন ৯ বলে ১২ রান করে। অভিষিক্ত মুক্তার আহমেদ তৃতীয় ব্যাটসম্যান হিসেবে আউট হন দলীয় ৭৭ রানে। আরাফাত সানির বলে স্ট্যাম্পড হন তিনি ৩০ বলে ৩৭ রান (৫ চার, ১ ছয়) করে।

    চতুর্থ উইকেট জুটিতে হারিস সোহেল-হাফিজের ৪৯ রানের জুটি বিচ্ছিন্ন করেছেন মোস্তাফিজ। এবার অবশ্য পরিপূর্ণভাবে হাফিজকে আউট করেছেন মোস্তাফিজ। ১৮ বলে ২৬ রান করে এলবির ফাঁদে পড়েন হাফিজ। ইনিংসের শেষ বলে রানআউট হন সোহেল তানভীর (৮)। হারিস সোহেল ২৪ বলে অপরাজিত ৩০ রান করেন। বাংলাদেশের পক্ষে মোস্তাফিজ ২০ রানে ২টি, আরাফাত সানি-তাসকিন ১টি করে উইকেট পান। উইকেট না পেলেও ৪ ওভারে ১৭ রান দিয়ে কৃপণ বোলিং করেছেন সাকিব।