প্রধানমন্ত্রীর প্রতি এরশাদের আনুষ্ঠানিক কৃতজ্ঞতা প্রকাশ

    0
    201

    আমারসিলেট24ডটকম,২৩জানুয়ারীঃ সাবেক রাষ্ট্রপতি জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান এইচ এম এরশাদকে বিশেষ দূত মনোনীত করায়  প্রধানমন্ত্রীর প্রতি অকুন্ঠ কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন তিনি। আজ বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে এরশাদ অতীতের গ্লানি ভুলে গৌরবময় ভবিষ্যতের দিকে পথ চলার সংকল্প ব্যক্ত করেছেন। বিবৃতিতে এরশাদ প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ দূত হয়ে কোনো ব্যক্তিগত সুযোগ-সুবিধা, সরকারি বাড়ি-গাড়ি চান না বলে জানান। তবে একজন সাংসদ হিসেবে যেটুকু সুযোগ-সুবিধা তার প্রাপ্য, সেটুকু ভোগ করে বিশেষ দূতের দায়িত্ব পালন করে যেতে চান বলে জানিয়েছেন। তিনি বলেন, সৈনিক হিসেবে দেশের স্বার্থে সব সময় যুদ্ধ করতে প্রস্তুত ছিলাম এবং এখনো দেশের অর্থনীতি ও জনগণের বৃহত্তর স্বার্থে আমার দায়িত্ব পালন করে যেতে পারব। আমি জীবনের শেষ প্রান্তে এসে পৌঁছেছি। এখন আর আমার চাওয়া-পাওয়ার কিছু নেই। দেশ ও জাতির কল্যাণ এবং মঙ্গল সাধনই আমার জীবনের একান্ত কাম্য ও লক্ষ্য।

    এরশাদ বিবৃতিতে আরও বলেন, বিগত দিনের তিক্ত অভিজ্ঞতাকে মুছে ফেলে সম্ভাবনাময় বাংলাদেশকে গড়ে তোলার লক্ষ্যে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আমার ওপর একটি গুরু দায়িত্ব অর্পণ করেছেন। তার জন্য আমি কৃতজ্ঞতা জানাই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি। অতীতের যত গ্লানি ভুলে গিয়ে গৌরবময় অধ্যায়কে পথ ও পাথেয় হিসাবে ধরে নিয়ে আমাদের আগামী দিনের পথ চলা শুরু করতে হবে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সেই চলার পথে আমাকে যে সহযাত্রীরূপে সাথে নিয়েছেন, আমি তার মর্যাদা রক্ষা করতে সদা সচেষ্ট থাকব। জাতির স্বার্থে এবং দেশের ভাবমূর্তি সমুন্নত রাখার জন্য আমি নিবেদিতভাবে কাজ করে যাবার চেষ্টা করব। এরশাদ বলেছেন, রাজনৈতিক ঘটনাপ্রবাহকে কেন্দ্র করে সৃষ্ট পরিস্থিতিতে দেশের ভাবমূর্তির বিরাট ক্ষতি হয়েছে। জনশক্তি রপ্তানি, তৈরি পোশাকশিল্প খাত, বিদেশি বিনিয়োগ, বাংলাদেশের ওপর বহির্বিশ্বের আস্থা ইত্যাদি ক্ষেত্রে দেশ হুমকির মুখে পড়েছে। বিগত সরকার আমলের ব্যাপক অগ্রগতি ও উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের পরও রাজনৈতিক অস্থিরতার জন্য জনগণের মধ্যে চরম হতাশার সৃষ্টি হয়। এরশাদের বিশ্বাস, অচিরেই সেই হতাশা কেটে যাবে। জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান বলেন, প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ দূত হিসেবে তার প্রথম এবং প্রধান কাজ হবে একটি আধুনিক মুসলিমপ্রধান গণতান্ত্রিক দেশ হিসেবে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি বিশ্ব দরবারে পৌঁছে দেয়া। বাংলাদেশের শিক্ষাদীক্ষা ও সংস্কৃতি, অসাম্প্রাদায়িক চেতনা, ঐতিহ্য তিনি বিশ্ববাসীর সামনে তুলে ধরবেন বলে জানিয়েছেন। মধ্যপ্রাচ্যে জনশক্তি রপ্তানির বাজার প্রসারে এরশাদ তার ব্যক্তিগত সম্পর্ককে কাজে লাগাবেন বলে জানিয়েছেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশের অবস্থান নেক্সট-ইলাভেন থেকে ফ্রন্টিয়ার-ফাইভ এ উন্নীত হয়েছে। তৈরি পোশাক রপ্তানির হার বৃদ্ধি পেয়েছে। শান্তি মিশনে আমাদের সেনাবাহিনীর অংশগ্রহণ বেড়েছে। খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা এসেছে। খাদ্য রপ্তানিও হচ্ছে। মানুষের মাথাপিছু আয় বেড়েছে। দারিদ্র্যের হার কমেছে। এখন কোনো মানুষকে আর না খেয়ে থাকতে হয় না। শিক্ষার হার ও মান বেড়েছে। এসব অগ্রসরমাণ বিষয়গুলো জাতীয়ভাবে যেমন প্রচারে আসছে না, তেমনি বহির্বিশ্বও জানছে না।’ অপপ্রচার ও সংঘাতের কারণে বিদেশি বিনিয়োগকারীরা বাংলাদেশের প্রতি আস্থা হারিয়েছে। আস্থা ফিরিয়ে আনতে তিনি কাজ করবেন বলে উল্লেখ করেছেন। বিদেশি বিনিয়োগের দিক থেকে মধ্যপ্রাচ্যকে লক্ষ্য নির্ধারণ করা যায় বলে এরশাদ মন্তব্য করেন। এ ছাড়াও মধ্যপ্রাচ্যের জন্য বিশেষ ইপিজেড প্রতিষ্ঠার জন্য তার প্রস্তাব থাকবে। এইচএম এরশাদ উল্লেখ করেন, নারীর ক্ষমতায়ন, শিশুমৃত্যুর হার রোধ, জনস্বাস্থ্য, স্যানিটেশন ইত্যাদি ক্ষেত্রে যে দেশটি বিশ্ব দরবারে অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছিল, সেই দেশকে এখন রাজনৈতিক সংঘাতের কারণে ইমেজ-সংকটে ভুগতে হচ্ছে। কিছু পশ্চিমা মিডিয়া বাংলাদেশের নেতিবাচক বিষয়ের ওপর অধিকতর আলোকপাত করে আমাদের ইমেজ ক্ষুন্ন করছে। কোনো কোনো মহল বাংলাদেশ জঙ্গি রাষ্ট্র হয়ে যাচ্ছে বলেও অপপ্রচার চালানোর চেষ্টা করছে, যা কখনোই এ দেশে হবে না। অপপ্রচারের কবলে পড়েও দেশের ভাবমূর্তি অনেক ক্ষুন্ন হয়েছে।
    প্রসঙ্গত, বহুল আলোচিত মঞ্জুর হত্যা মামলার রায় ঘোষণার দিন ধার্য করা হয়েছে আগামী ১০ ফেব্রূয়ারি ঠিক এ সময় এরশাদ আনুষ্ঠানিভাবে গণমাধ্যমে বিবৃতি দিয়ে কৃতজ্ঞতা জানালেন।