প্রত্নতাত্ত্বিক খননে দিনাজপুরে পাল আমলের স্থাপত্যের সন্ধান

    0
    465

    ঢাকা, ২১ এপ্রিল : প্রত্নতাত্ত্বিক খননের ফলে দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট উপজেলার বেলওয়া গ্রামের পানুর ঢিবিতে একটি মন্দির এবং গোপালপুর ঈদগাহসংলগ্ন একটি গর্তের নিচে ইটের তৈরি স্থাপত্যের সন্ধান পান প্রত্নতাত্ত্বিক খননকর্মীরা। এ আবিস্কারের ফলে ঘোড়াঘাটের আদি-মধ্যযুগ ও মধ্যযুগের মানব বসতি ও সংস্কৃতির বিভিন্ন দিক সম্পর্কে জানা যাবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক স্বাধীন সেনের পরিচালনায় ওই এলাকায় প্রত্নতাত্ত্বিক খনন কাজ চালানো হচ্ছে।

    প্রত্নতাত্ত্বিক খননে দিনাজপুরে পাল আমলের স্থাপত্যের সন্ধান
    প্রত্নতাত্ত্বিক খননে দিনাজপুরে পাল আমলের স্থাপত্যের সন্ধান

    এ প্রসঙ্গে স্বাধীন সেন জানান, ঘোড়াঘাট উপজেলার বেলওয়া গ্রামের পানুর ঢিবিতে আবিস্কৃত মন্দিরটি হিন্দু না বৌদ্ধ, তা খননকাজ সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত বলা সম্ভব নয়। এছাড়া গোপালপুর ঈদগাহসংলগ্ন একটি গর্তের নিচে ইটের তৈরি স্থাপত্যের সন্ধান পাওয়া গেছে। তিনি আরও জানান, ইতিপুর্বে বেলওয়া থেকে দুটি তাম্রশাসন পাওয়া গিয়েছিল। সেই তাম্রশাসনের পাঠোদ্ধার হয় ১৯৫১ সালে। একটি তাম্রশাসন প্রথম মহিপালের আর দ্বিতীয়টি তৃতীয় বিগ্রহ পালের সময়ের।
    স্বাধীন সেন আরো বলেন, একেএম জাকারিয়ার বাংলাদেশের প্রত্নসম্পদ বইয়ে বলে উল্লেখ আছে ওই সময় দুই থেকে তিন কিলোমিটার এলাকায় অসংখ্য ঢিবি, প্রাচীন পুকুর ও দিঘি ছিল। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের অর্থায়নে অধ্যাপক সৈয়দ মো. কামরুল আহছানের নেতৃত্বে ২০১১ সালের আগস্ট মাসে পরিচালিত জরিপ অনুযায়ী, ঘোড়াঘাট উপজেলায় বিভিন্ন সময়ের ৫১টি প্রত্নস্থান নথিভুক্ত হয়েছে। এ জরিপ থেকে ধারণা করা যায়, বেলওয়াতে পরিখাবেষ্টিত একটি বসতি ছিল। বর্তমানে এ প্রকল্পের অধীনেই পানুর ঢিবিতে ও গোপালপুরে খননকাজ চলছে। উদ্ধার হওয়া লিপিগুলোর ভিত্তিতে অনুমান করা যায়, এখানকার বসতি খ্রিষ্টীয় অষ্টম-নবম শতকের।

    প্রত্নতাত্ত্বিক খননে দিনাজপুরে পাল আমলের স্থাপত্যের সন্ধান
    প্রত্নতাত্ত্বিক খননে দিনাজপুরে পাল আমলের স্থাপত্যের সন্ধান

    জানা গেছে, গত ২৭ মার্চ ওই এলাকায় খননকাজ শুরু হয়। ৪০-৪৫ দিন এ দুটি স্থানে খননকাজ চলবে। প্রায় ৪০ জনের একটি দল খননকাজে অংশ নিচ্ছে। এ খনন ঘোড়াঘাটে পরিচালিত প্রথম প্রত্নতাত্ত্বিক খনন। খননের ফলে ঘোড়াঘাটের আদি মধ্যযুগ ও মধ্যযুগের মানব বসতি ও সংস্কৃতির বিভিন্ন দিক সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যাবে বলে মনে করা হচ্ছে।
    এ প্রসঙ্গে ঘোড়াঘাট উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা মোসা. মাকসুদা বেগম সিদ্দিকা বলেন, ঘোড়াঘাট একটি ঐতিহাসিক স্থান। ইতিহাস উন্মোচনে এখানকার প্ত্নতত্ত্ব আবিস্কার ও রক্ষায় প্রশাসন সব ধরনের সহযোগিতা করবে।