পহেলা বৈশাখ ১৪২০ : বাংলা, বাঙ্গালীর গর্বিত ঐতিহ্যের সর্বজনীন উৎসব আজ

    0
    423

    বাংলা, বাঙ্গালী ও বাংলাদেশের সংস্কৃতি ও গর্বিত ঐতিহ্যে রূপময় উদ্ভাসিত সর্বজনীন উৎসবের দিন আজ। 

    আজ পহেলা বৈশাখ। বাংলা নতুন বছর ১৪২০’র প্রথম দিন। বাংলা, বাঙ্গালী ও বাংলাদেশের সংস্কৃতি ও গর্বিত ঐতিহ্যে রূপময় উদ্ভাসিত সর্বজনীন উৎসবের দিন আজ। নতুনের কেতন ওড়ানো বৈশাখ এসেছে নতুন সম্ভাবনা, প্রত্যাশা ও সমৃদ্ধি অর্জনের লড়াইয়ে জয়লাভের প্রেরণা নিয়ে। আনন্দ-হিল্লোল, উচ্ছ্বাস-উষ্ণতায় দেশবাসী আবাহন করছে নতুন বছরকে। সবার হৃদয়ে আজ অবিরাম বেজে চলবে রবীন্দ্রনাথের সেই চিরচেনা গানের সুর ‘এসো হে… …. …  …

    বাংলা বছরের প্রথম দিনটিকে বরণ করতে উত্সবের রঙে সেজেছে পুরো দেশ। স্বাগত ১৪২০ বঙ্গাব্দ।
    সাম্প্রদায়িকতা-মৌলবাদ, মানবতাবিরোধীদের অপতত্পরতা, রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা, সহিংসতায় বিষবাষ্পে পুরো জাতি হাঁপিয়ে উঠেছিল। এই ক্রান্তিলগ্নে গ্লানি মুছতে, জরা ঘোচাতে এসেছে বৈশাখ। ধমনিতে বইছে প্রাণের স্পন্দন। দেশ গড়ার শপথে বলীয়ান প্রতিটি নাগরিক।
    আজ সূর্যোদয়ের পরপরই ভোরে সোয়া ছয়টায় রাজধানীর রমনার বটমূলে শুরু হয় ছায়ানটের বর্ষবরণ। ওই প্রাচীন মহিরুহের ছায়াচ্ছন্ন তলা ছায়ানটের শিল্পীরা সেজেছিল লাল-সবুজে, যেন বাংলাদেশের পতাকা। ছায়ানটের বর্ষবরণ অনুষ্ঠান শুরুর আগেই রমনায় হাজির হয় নানা শ্রেণী-পেশার মানুষ। লাল-সাদা নকশার পোশাকে নারী-পুরুষ, তরুণ-তরুণী, শিশু-কিশোর কিংবা বৃদ্ধের পদচারণে বর্ণিল হয়ে ওঠে রমনা। সকাল নয়টার দিকে ছায়ানটের অনুষ্ঠান শেষ হয়।
    বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে মানুষের স্রোত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়মুখী হয়। নারীর কবরীতে তাজা ফুলের মালা, হাতে বেলোয়ারি কাচের চুড়ি। বাবার হাত ধরে শিশুটিও হাঁটে। ঢোল-ঢাগরার বাদ্য, বাঁশির প্যাঁ-পুঁ, অগণিত কণ্ঠস্বর আর গানের সুরের কলরোল ভেসে আসে বৈশাখী হাওয়ায়।
    চারুকলা অনুষদের মঙ্গল শোভাযাত্রা বের হয় সকাল পৌনে ১০টায়। এবারের মঙ্গল শোভাযাত্রার প্রধান প্রতীক বিশাল আকারের একটি মুষ্টিবদ্ধ হাত। অসাম্প্রদায়িক চেতনার প্রতীক এটি। ঐক্য ও সৌহার্দ্যের প্রতীক হিসেবে মিছিলে স্থান পায় যশোর অঞ্চলের শোলার পাখির আদলে তৈরি করা যুগল পাখি। আর বিদ্রোহী ষাঁড়ের প্রতিকৃতি বাঙালির আপসহীন সংগ্রামের রূপক।
    এ ছাড়া সম্প্রতি প্রয়াত শিল্পী মরণ চাঁদ পালের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে শোভাযাত্রায় রাখা হয় পোড়ামাটির রিকশার আদলে তৈরি একটি কাঠামো। আর কয়েক হাজার ত্রিমাত্রিক মুখোশ, পাখি, ফুল এসব তো ছিলই।
    চারুকলার সামনে থেকে শুরু হয়ে শাহবাগ, রূপসী বাংলা হোটেল মোড় ঘুরে আবার শাহবাগ, টিএসসি হয়ে চারুকলায় গিয়ে শেষ হয় মঙ্গল শোভাযাত্রা।
    সংগীত সংগঠন সুরের ধারা ও চ্যানেল আইয়ের আয়োজনে ভোর সাড়ে পাঁচটায় হাজার কণ্ঠের গান দিয়ে বর্ষবরণের অনুষ্ঠান হয় শেরেবাংলা নগরের বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রের সামনে। সুরের ধারার এ আয়োজন অবশ্য গতকাল শনিবার সন্ধ্যা থেকেই শুরু হয়েছে। গতকাল ছিল বর্ষশেষ উপলক্ষে সংগীতানুষ্ঠান।
    এয়ারটেল ও প্রথম আলোর আয়োজনে গতকাল রাত ১১টা থেকে ভোর পর্যন্ত সংসদ ভবনের সামনে মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে আঁকা হয় ‘আলপনায় বৈশাখ’।
    আজকের বৈশাখী উত্সবের প্রধান কেন্দ্র রমনা-শাহবাগ-সোহরাওয়ার্দী উদ্যান এলাকা। মহানগর পুলিশ জানিয়ে দিয়েছে, কঠোর নিরাপত্তাব্যবস্থা নেওয়া হলেও রমনা উদ্যান ছাড়তে হবে বিকেল পাঁচটার মধ্যে আর সোহরাওয়ার্দী উদ্যান থেকে ফিরতে হবে সাতটার মধ্যেই।
    রাজধানীর বাইরে দেশের বিভিন্ন এলাকায়ও চলছে বর্ষবরণ। বছরের প্রথম দিনটিতে পুরো দেশ বাধা পড়েছে এক সুতায়।

    সিলেট: বাংলা নববর্ষ ১৪২০ উপলক্ষে সিলেট সিটি কর্পোরেশনের মেয়র বদর উদ্দিন আহমদ কামরান সিলেট নগরবাসীকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।

    বাংলা, বাঙ্গালী ও বাংলাদেশের সংস্কৃতি ও গর্বিত ঐতিহ্যে রূপময় উদ্ভাসিত সর্বজনীন উৎসবের দিন আজ।
    বাংলা, বাঙ্গালী ও বাংলাদেশের সংস্কৃতি ও গর্বিত ঐতিহ্যে রূপময় উদ্ভাসিত সর্বজনীন উৎসবের দিন আজ।