নবীগঞ্জে মিশুক চালক হত্যা রহস্য ২১ দিনে ও অজানা

0
710
নবীগঞ্জে মিশুক চালক হত্যা রহস্য ২১ দিনে ও অজানা

নূরুজ্জামান ফারুকী, বিশেষ প্রতিনিধি: নবীগঞ্জে নিখোঁজের ৩ দিন পর উদ্ধারকৃত নিহত মিশুক চালক আবিদুর ইসলামের (১৮) হত্যাকান্ডের ঘটনার ২১ দিন অতিবাহিত হলেও প্রকৃত রহস্য উদঘাটিত হয়নি আজও। উদ্ধার হয়নি নিহত আবিদুরের সাথে থাকা মিশুক গাড়ীটি।

যদিও পুলিশ ২ জনকে সন্দেহজনক ভাবে আটক করে জেল হাজতে প্রেরন এবং বিজ্ঞ আদালত তাদের ৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন। স্থানীয়রা বলছেন এটা আইওয়াস মাত্র।

নিহতের পরিবারের দাবী পুর্ব আক্রোশে নির্মম এ হত্যাকান্ড ঘটিয়ে মিশুক গাড়ীটি নিয়ে পালিয়ে যায় অজ্ঞাতনামা দুর্বৃত্তরা। ঘটনার মাস দেড়েক আগে তিমিপুর গ্রামের দু’টি ছেলের সাথে নিহত আবিদুর ইসলামের বিরোধ হয়। বিষয়টি স্থানীয় মুরুব্বীয়ান নবীগঞ্জ বাজারে শালিস বসে নিঃস্পত্তি করেন। ওই সময় তিমিরপুর গ্রামের ছেলেরা আবিদুর ইসলামকে হত্যার হুমকী দিয়েছিলেন।

এদিকে ঘটনার পর থেকেই পুলিশ রহস্য উদঘাটনের বিষয়ে অনেকটা এগিয়েছে। অথচ ২১ দিন অতিবাহিত হলেও আশানুরুপ কোন তথ্য উদঘাটিত হয়নি। এতে হতাশা ও ক্ষোভে ফুসে উঠছেন এলাকাবাসী।

উল্লেখ্য, ৩১ আগস্ট মঙ্গলবার রাত ৮ টার দিকে নবীগঞ্জ শহর থেকে আবিদুর ইসলাম (১৮) মিশুক গাড়ি নিয়ে নবীগঞ্জ-বানিয়াচং সড়কে ফায়ার সার্ভিস স্ট্যাশনে জনৈক ব্যক্তিকে নিয়ে যায়। যাত্রী নামিয়ে সেখান থেকে কোন দিকে যায় তা নিশ্চিত করে কেউ বলতে পারছেন না। এরপর থেকে তার কোন সন্ধ্যান পায়নি পরিবারের লোকজন।

ঘটনার প্রেক্ষিতে থানা পুলিশ ব্যাপক তৎপরতা চালায়। অবশেষে ৩ঠা সেপ্টেম্বর শুক্রবার সকাল সাড়ে ১১ টার দিকে পথচারীদের কাছ থেকে খবর পেয়ে পুলিশ উপজেলার সরিষপুর নামকস্থানে মরা কুশিয়ারা নদী থেকে ঘটনাস্থলে পৌছে কচুরী পেনার নীচে লুকিয়ে রাখা বিবস্ত্র ক্ষতবিক্ষত আবিদুর ইসলামের মরদেহ উদ্ধার করেন। পরে লাশের পাশে থাকা কাপড় দেখে মৃতদেহ আবিদুর ইসলামের মর্মে সনাক্ত করেন আবিদুরের পরিবার।

পুলিশের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। পরে মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য হবিগঞ্জ মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। শনিবার ময়না তদন্ত শেষে আবিদুর ইসলামের মৃতদেহ বাড়ি নিয়ে আসলে গ্রামবাসীসহ স্বজনদের মাঝে পড়ে কান্নার রুল। এদিকে মিশুক চালক আবিদুর ইসলামের নির্মম নৃঃশংস হত্যাকান্ডের ঘটনায় এলাকায় শোকের ছায়া নেমে আসে। টমটম ও মিশুক শ্রমিকদের মাঝে বিরাজ করছে আতংক ও উৎকন্ঠা।

এছাড়া অপ্রাপ্ত বয়স্কদের হাতে টমটম, মিশুক ও রিক্সা না দেয়ার আহব্বান জানানো হচ্ছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। পাশাপাশি এমন ঘটনা যাহাতে ভবিষ্যতে আর সংঘটিত না হয়, সে ব্যাপারে প্রশাসনকে সজাগ থাকার আহব্বান নাগরিক সমাজের।

উল্লেখ্য, বিগত ২৪ অক্টোবর ২০২০ ইং তারিখে গুজাখাইর গ্রামের মিশুক চালক সাজু’র মৃতদেহ নিখোজের ৩ দিন পর উদ্ধার করা হয়েছিল পুর্ব তিমিরপুর এলাকা থেকে। দুর্বৃত্তরা সাজুকে খুন করে পুর্ব তিমিরপুর এলাকায় একটি ঝোপের মাঝে লাশ গুম করে তার মিশুক গাড়ী ছিনিয়ে নেয়। ওই ঘটনারও মুল রহস্য অনুদঘাটিত থাকায় দীর্ঘ প্রায় ১১ মাস পর নবীগঞ্জ পৌর এলাকার কেলী কানাইপুর গ্রামের মুহিবুর রহমান ওরপে পাতা মিয়ার ছেলে আবিদুর ইসলামকে হত্যা করে তার লাশ মরা কুশিয়ারা নদীতে গুম করে মিশুক গাড়ী ছিনিয়ে নেয়ার ঘটনাটি সংঘটিত হয়।

নিহত মিশুক চালক আবিদুর ইসলামের নির্মম হত্যাকান্ডের প্রকৃত রহস্য উদঘাটনসহ দায়ীদের দ্রুত সময়ের মধ্যে আইনের আওতায় নিয়ে আসার জন্য উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষসহ সরকারের প্রতি দাবী জানিয়েছেন এলাকাবাসী।