নওগাঁর একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় উন্নয়ন বঞ্চিত

    0
    308

    আমার সিলেট টুয়েন্টি ফোর ডটকম,১৬এপ্রিল,নাজমুল হক নাহিদ,আত্রাই (নওগাঁ) থেকেঃ  নওগাঁর আত্রাই উপজেলার ভোঁপাড়া ইউনিয়নের ৩৬ নং জামগ্রাম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে জোড়াতালি দেওয়া পরিত্যাক্ত মাটির কক্ষে চলছে পাঠদান। বর্তমানে শতবর্ষী এই বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের তুলনায় শ্রেণিকক্ষ কম হওয়ায় বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পরিত্যাক্ত মাটির কক্ষে পাঠদান কার্যক্রম চালিয়ে আসছেন। বিদ্যুৎ ছাড়াই টিনের ছাউনির নিচে গ্রীষ্মের প্রচন্ড তাপদাহের মধ্যে শিক্ষার্থীদের পাঠগ্রহণ করতে হয় এই বিদ্যালয়ে।

    পাঁকা রাস্তা ও বিদ্যুৎবিহীন অজোপাড়া ও অবহেলিত এই গ্রামের একমাত্র বিদ্যাপিঠ এই শতবর্ষী স্কুল। ১৯০২ সালে স্থানীয় কিছু শিক্ষানুরাগী ব্যক্তিদের হাতে এই বিদ্যালয়ের পথচলা শুরু হলেও বর্তমানে এই বিদ্যালয়ে আধুনিকতার কোন ছোঁয়াই লাগেনি। তিন দশক আগে নির্মিত একতলা ভবনগুলোর বিভিন্ন স্থানে দেখা দিয়েছে ফাটল। বর্তমান ভবন ও পরিত্যাক্ত ভবন যে কোন সময় ভেঙ্গে পড়ে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটার আশঙ্কা প্রকাশ করছেন বিদ্যালয়ের শিক্ষক, ছাত্র-ছাত্রী, অবিভাবক ও সচেতন মহল।

    এছাড়াও এই বিদ্যালয়ে এখনো পর্যন্ত দেওয়া হয় নাই শিক্ষার্থীদের জন্য খেলার উপকরণ। কিন্তু সরকার বর্তমানে প্রতিটি প্রাথমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের জন্য খেলনা সামগ্রী রাখা বাধ্যতামুলক করে দিলেও এই বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা তা থেকে বি ত। বিদ্যালয়ে নেই কোন নিরাপত্তা প্রাচীর। সংশ্লিষ্ট বিভাগকে বার বার অবগত করেও কোন কাজ হয়নি বলে জানান শিক্ষক ও বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সদস্যবৃন্দ। বর্তমানে এই বিদ্যালয়ে মোট ২শত ৫৯জন শিক্ষার্থী রয়েছে যার মধ্যে প্রতিদিন গড়ে ২শত শিক্ষার্থী পাঠ গ্রহন করছে।

    এ বিষয়ে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো: রেজাউল করিম এর সাথে কথা বললে তিনি জানান, বর্তমানে আমাদের এই বিদ্যাপিঠ নানা সমস্যায় জর্জড়িত। মাটির দুটি পরিত্যাক্ত কক্ষসহ মোট ৭টি কক্ষ রয়েছে। যার মধ্যে পুরাতন একতলা ভবনের ৫টি ও মাটির ১টি সহ মোট ৬টি কক্ষে চলছে পাঠদান কার্যক্রম। কক্ষের সংকটের কারণে বাধ্য হয়ে পরিত্যাক্ত মাটির ভবনের একটি কক্ষ সংস্কার করে পাঠদান কার্যক্রম চালানো হচ্ছে। প্রতিনিয়ত শিক্ষার্থীরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বিদ্যালয়ের পরিত্যাক্ত কক্ষে পাঠগ্রহণ করতে বাধ্য হচ্ছে। বিদ্যালয়ে বিদ্যুৎ সংযোগের কোন ব্যবস্থা না থাকায় গ্রীষ্মের সময় টিনের ছাউনির নিচে প্রচন্ড তাপদাহের মধ্য ছেলে-মেয়েরা কষ্ট করে ক্লাস করে।

    এছাড়াও শিক্ষক ৮ জন থাকার কথা থাকলেও মাত্র ৬জন শিক্ষক দিয়ে মুখ থুবরে চলছে এই বিদ্যালয়। দীর্ঘদিন যাবত ২জন শিক্ষকের পদ শূণ্য রয়েছে।

    তিনি আরও বলেন যদি এই পরিত্যাক্ত ভবন ভেঙ্গে নতুন করে আধুনিক মানের ভবন, শিক্ষার্থীদের জন্য ওয়াশরুম, নিরাপত্তা প্রাচীর তৈরি, খেলনা সামগ্রী স্থাপন এবং বিদ্যুতের ব্যবস্থা করা তাহলে একটি সুন্দর পরিবেশে শিক্ষার্থীরা পাঠ গ্রহণ করতে পারবে। এর ফলে এই প্রত্যন্ত অবহেলিত গ্রাম এলাকার মানুষের মাঝে সন্তানদের বিদ্যালয়ে পাঠানার প্রতি বাড়বে আগ্রহ।

    এব্যাপারে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোছা: সাথিয়া আক্তার অপু জানান, এই বিদ্যালয়ের কাজগুলো প্রক্রিয়াধিন রয়েছে। তাই সমস্যা চিহ্নিত করে সংশ্লিষ্ট বিভাগকে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য লিখিত ভাবে জানানো হয়েছে।