দ্বিতীয় এশিয়া প্রশান্ত মহাসাগরীয় পানি সম্মেলনে যোগ দিতে আজ থাইল্যান্ড যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

    0
    243
    দ্বিতীয় এশিয়া প্রশান্ত মহাসাগরীয় পানি সম্মেলনে যোগ দিতে আজ থাইল্যান্ড যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
    দ্বিতীয় এশিয়া প্রশান্ত মহাসাগরীয় পানি সম্মেলনে যোগ দিতে আজ থাইল্যান্ড যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

    ঢাকা, ১৯ মে : দ্বিতীয় এশিয়া প্রশান্ত মহাসাগরীয় পানি সম্মেলনে যোগ দিতে দুই দিনের সরকারি সফরে আজ রবিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা থাইল্যান্ডের চিয়াংমাইয় যাচ্ছেন। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, রবিবার বেলা ১১টায় বাংলাদেশ বিমানের একটি বিশেষ ফ্লাইটে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দর ত্যাগ করবেন তিনি। তিনি চিয়াংমাই ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন এন্ড এক্সিবিশন সেন্টারে ২০ মে সম্মেলনের উদ্বোধনী অধিবেশনে ভাষণ দেবেন। এর আগে তিনি সম্মেলনের ওয়ার্কিং ব্রেকফাস্টে যোগ দিবেন।
    প্রধানমন্ত্রী থাইল্যান্ডের অন্যতম বৃহত্তম ও সাংস্কৃতিক নগরী চিয়াংমাই পৌঁছালে থাইল্যান্ডে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত কাজী ইমতিয়াজ হোসেন এবং থাইল্যান্ডের মন্ত্রী পর্যায়ের বিশিষ্ট ব্যক্তিরা চিয়াংমাই আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরে তাকে অভ্যর্থনা জানাবেন। বিমানবন্দর থেকে প্রধানমন্ত্রীকে মোটর শোভাযাত্রাসহ ম্যান্ডারিন অরিয়েন্টাল দাহরা দেবী হোটেলে নিয়ে যাওয়া হবে। সফরকালে তিনি সেখানে অবস্থান করবেন।
    সফরকালে ২০ মে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা থাই প্রধানমন্ত্রী ইংলাক সিনাওয়াত্রার সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে বসবেন। এছাড়া তিনি দক্ষিণ কোরিয়ার প্রধানমন্ত্রী জুং হং ওন এবং আরো কয়েকজন নেতার সঙ্গে বৈঠক করবেন বলে আশা করা হচ্ছে। তিনি চিয়াংমাই অঞ্চলের ঐতিহাসিক স্থান উইয়াঙ কুম কাম পরিদর্শন করবেন এবং সম্মেলনে যোগদানকারী প্রতিনিধিদলের প্রধানদের সম্মানে থাই প্রধানমন্ত্রী ইংলাক সিনাওয়াত্রার দেয়া নৈশভোজে অংশ নেবেন।
    এশিয়া প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় সহায়তার জন্য আঞ্চলিক পানি সমস্যা সমাধানে ২০০৬ সালের মার্চে ‘এশিয়া প্যাসিফিক ওয়াটার ফোরাম (এপিডব্লিউএফ)’ গঠিত হয়। এপিডব্লিউএফ ২০০৭ সালে জাপানের বেপপুতে প্রথম এশিয়া-প্যাসিফিক ওয়াটার সামিটের (এপিডব্লিউএস) আয়োজন করে।
    দ্বিতীয় এ সম্মেলন পানি সমস্যা এবং এ অঞ্চলের বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ চিহ্নিতকরণ ও তা সমাধানের পদক্ষেপ গ্রহণে এশীয় প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের নেতাদের একত্রে কাজ করার অঙ্গীকার ও প্রচেষ্টার ক্ষেত্রে আরেক ধাপ এগিয়ে যাবে।
    পানি সম্পদ ব্যবস্থাপনা এবং জরুরি পানি নিরাপত্তা বিষয়ে বক্তব্য উপস্থাপন ও আলোচনায় অংশ নিতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রপ্রধান, মন্ত্রী, সিনিয়র কর্মকর্তা এবং জাতীয় ও স্থানীয় সরকারের প্রতিনিধি, সুশীল সমাজের প্রতিনিধি, মিডিয়া ও কারিগরি বিশেষজ্ঞরা সম্মেলনে একত্রে মিলিত হবেন। সফর শেষে আগামী ২১ মে মঙ্গলবার সকালে তিনি দেশে ফিরবেন।

    পদ্মা দুর্নীতির ষড়যন্ত্রে পরিবারের সদস্যদের জড়িতের অভিযোগ প্রত্যাখান প্রধানমন্ত্রীর

    ঢাকা, ১৯মে : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন প্রস্তাবিত পদ্মা সেতুর দুর্নীতি ষড়যন্ত্রে তার পরিবারের সদস্যদের জড়িত থাকার অভিযোগ ডাহা মিথ্যা। কানাডার প্রভাবশালী সম্প্রচার সংস্থা সিবিসি টেলিভিশনে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন। গত বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রীর ওই সাক্ষাৎ কার সম্প্রচার করে। সাক্ষাৎকারে এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী তার পরিবারের বিরুদ্ধে এ ধরনের অভিযোগ অস্বীকার করেন। পদ্মা সেতু ও কানাডীয় প্রকৌশল সংস্থা এসএনসি-লাভালিনের ওপর এক অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে এ ধরনের অভিযোগ করা হয়। সিবিসির দ্য ন্যাশনাল অনুষ্ঠানে গত বৃহস্পতিবার প্রতিবেদনটি সম্প্রচার করা হয়।
    সাক্ষাতকারে শেখ হাসিনা বলেন, ব্যক্তিগতভাবে আমি কিংবা আমার মন্ত্রীরা দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত নন। আমরা টাকা কামাতে ক্ষমতায় আসিনি। আমরা জনগণের জন্য কাজ করতে এসেছি। জনগণের ভাগ্য বদলাতে, দেশের উন্নয়নের লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছি। পদ্মা সেতু অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সেতুটি হলে দক্ষিণবঙ্গের সঙ্গে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডসহ আমাদের ব্যবসা-বাণিজ্য বৃদ্ধি পাবে এবং যোগাযোগব্যবস্থা সুগম হবে। দুর্নীতির অভিযোগে পদ্মা সেতুর ঋণ বাতিলের বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, আমরা বারবার কানাডা ও বিশ্বব্যাংককে এ-সংক্রান্ত তথ্য প্রমাণ সরবরাহের জন্য বলেছি, কিন্তু তারা কোনো সুনির্দিষ্ট প্রমাণ দেয়নি।
    সিবিসি প্রতিবেদক বলেন, কিন্তু তারা তো দুর্নীতিতে জড়িত ব্যক্তিদের নামের তালিকা আপনাদের কাছে দিয়েছে। কখন ঘুষ চাওয়া হয়েছিল, এর দিন-তারিখও উল্লেখ করেছে। তাহলে আপনারা কী ব্যবস্থা নিয়েছেন? জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি দুর্নীতি দমন কমিশনকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছি। তারপর কমিশন তদন্ত শুরু করে।
    প্রতিবেদনে সাবেক যোগাযোগমন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেনকে আওয়ামী লীগের অঘোষিত ট্রেজারার ও ক্যাশিয়ার বলে উল্লেখ করা হয়। সিবিসির প্রতিবেদক বলেন, অভিযোগ রয়েছে, সৈয়দ আবুল হোসেন আওয়ামী লীগ ও আপনার পক্ষে তহবিল সংগ্রহ করেন। এ অভিযোগ অস্বীকার করেন প্রধানমন্ত্রী। ক্যাশিয়ার শব্দে বিস্ময় প্রকাশ করে তিনি বলেন, না কখনোই না, তিনি ক্যাশিয়ার নন। আমাদের দলের জন্য তহবিল সংগ্রহের তিনি কেউ নন। কেউ যদি এসব কথা বলেন, তাহলে তারা পুরোপুরি ভুল বলেন।
    সিবিসির অন্য এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দুদক স্বাধীনভাবে কাজ করে। সরকার কোনোভাবে দুদকের কাজে হস্তক্ষেপ করে না। আপনি কী করে বলেন কোনো দুর্নীতি হয়নি, এমন প্রশ্নের জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, বিশ্বব্যাংকই বলেছে, কোনো দুর্নীতি হয়নি কিন্তু দুর্নীতির ষড়যন্ত্র হয়েছিল।
    পদ্মা সেতুর দুর্নীতির ষড়যন্ত্রে শেখ হাসিনার আত্মীয় নিক্সন চৌধুরীর জড়িত থাকার অভিযোগেরও উল্লেখ করেন সিবিসির প্রতিবেদক। টেলিভিশনটির পক্ষ থেকে শেখ হাসিনাকে বলা হয়, এর আগে দুদকের এক মামলায় আপনার বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল, আপনি আপনার বোন শেখ রেহানার সহযোগিতায় অর্থ সংগ্রহ করেছিলেন। এখন অভিযোগ পাওয়া গেছে, এসএনসি-লাভালিনের কাছে আপনার দল, পরিবারের সদস্য ও বন্ধুদের জন্য ঘুষ দিতে বলা হয়েছিল। এসব অভিযোগ কি সত্য নয়? জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, না। ডাহা মিথ্যা, থাকলে তারা প্রমাণ করতে পারত। গত তিন বছরে কি প্রমাণ করতে পেরেছে? না।