দেশে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ২হাজার ৩কোটি ডলার

    0
    244

    আমারসিলেট24ডটকম.১০এপ্রিলএবার বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ২ হাজার কোটি মার্কিন ডলার অতীক্রম করেছে। আজ বৃহস্পতিবার দিনশেষে কেন্দ্রিয় ব্যাংকের রিজার্ভ ২ হাজার ৩ কোটি ডলারে পৌঁছেছে। এই প্রথমবারের মতো বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ২ হাজার কোটি ডলারের নতুন এ মাইলফলক অতিক্রম করল। বাংলাদেশ ব্যাংকের ফরেক্স রিজার্ভ এন্ড ট্রেজারি ম্যানেজমেন্ট বিভাগের মহাব্যবস্থাপক (জিএম) কাজী সাইদুর রহমান এ তথ্য জানিয়েছেন। রেমিটেন্স বাড়ার পাশাপাশি আমদানি কমে যাওয়ায় বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ নতুন এ মাইলফলকে পৌঁছেছে বলে বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য মতে, সদ্য শেষ হওয়া মার্চ মাসে ১২৭ কোটি ৩৩ লাখ ডলার রেমিটেন্স পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা, যা এ যাবৎকালে দেশে আসা তৃতীয় সর্বোচ্চ। এর পাশাপাশি খাদ্য আমদানি না হওয়াই রিজার্ভ বাড়াতে অবদান রেখেছে বলে সংশ্লিষ্টরা মনে করছে।
    বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর সচিবালয়ের মহাব্যবস্থাপক এ এফ এম আসাদুজ্জামান বলেন, প্রবাসীদের পাঠানো রেমিটেন্স এবং রফতানি আয়ের ওপর ভর করে রিজার্ভ স্থিতি এই মাইলফলক অতিক্রম করেছে। এছাড়া সাম্প্রতিক আমদানি ব্যয় হ্রাস এক্ষেত্রে বিশেষ ভূমিকা রাখছে। আগামীতে রিজার্ভ বৃদ্ধির এই ধারা অব্যাহত থাকবে বলে তিনি উল্লেখ করেন। তিনি জানান, বর্তমান রিজার্ভ দিয়ে দেশের ৬ মাসেরও অধিক সময়ের আমদানি দায় পরিশোধ করা সম্ভব। এদিকে কেন্দ্রিয় ব্যাংক এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, গতবছর ১০ এপ্রিল বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ স্থিতি ছিল ১৪২২ কোটি ডলার। এক বছরের ব্যবধানে তা ৪১ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে দুই হাজার ডলার অতিক্রম করেছে।
    প্রবাসীদের পাঠানো রেমিটেন্স এবং রফতানি আয়ের ওপর ভর করে বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ দুই হাজার কোটি মার্কিন ডলার ছাড়িয়ে গেছে।  বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে জানা যায়, গত ফেব্রুয়ারিতে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ এক হাজার ৯০০ কোটি ডলার অতিক্রম করেছিল। মাত্র ২ মাসের ব্যবধানে আবারও বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ আগের রেকর্ড ভঙ্গ করল। ব্যাংকের ফরেক্স রিজার্ভ এন্ড ট্রেজারি ম্যানেজমেন্ট বিভাগের মহাব্যবস্থাপক কাজী ছাইদুর রহমান জানান, এই প্রথম বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ ২০ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে।
    রিজার্ভ বৃদ্ধির পেছেনে কয়েকটি কারণ আছে বলে উল্লেখ করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এগুলো হলো- কেন্দ্রিয় ব্যাংকের সময়োপযোগী বিভিন্ন পদক্ষেপের ফলে মার্কিন ডলারের বিপরীতে টাকার স্থিতিশীল বিনিময় হার বজায় থাকায় ও বাংলাদেশ ব্যাংকের রফতানি সহায়তা তহবিলের পরিমাণ ও এর ব্যবহারের আওতা সম্প্রসারণ করায় রফতানি আয় বৃদ্ধি। প্রবাসী আয়ের সন্তোষজনক প্রবাহ, বৈদেশিক সরাসরি বিনিয়োগ ও বেসরকারী খাতে বৈদেশিক উৎস হতে অর্থায়ন গ্রহণের পরিমাণ বৃদ্ধির ফলে বৈদেশিক মুদ্রার আন্তঃপ্রবাহ বৃদ্ধি পেয়েছে।
    এছাড়া দেশের খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধি পাওয়ায় খাদ্য খাতে আমদানির পরিমাণ হ্্রাসসহ বহিঃবিশ্বে খাদ্য পণ্যের দাম হ্্রাস পাওয়ায় ও জ্বালানীর দাম স্থিতিশীল থাকায় সার্বিকভাবে আমদানি দায় হ্্রাস পেয়েছে যা বৈদেশিক মুদ্রা রিজার্ভ বৃদ্ধি পাওয়ার অন্যতম প্রধান কারণ। কেন্দ্রিয় ব্যাংক জানায়, রিজার্ভ স্থিতি বিবেচনায় সার্কভূক্ত দেশগুলোর মধ্যে বর্তমানে ভারতের পরেই বাংলাদেশের অবস্থান। ভারতের রিজার্ভ স্থিতি ৩০৩ দশমিক ৬৭ বিলিয়ন ডলার।
    এর আগে গত বুধবার দিন শেষে রিজার্ভের পরিমাণ ছিল ১৯ দশমিক ৪৯ বিলিয়ন ডলার। তখন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা অচিরেই রিজার্ভ ২০ বিলিয়ন ডলারের আশা প্রকাশ করেছিলেন। তারও আগে গত ২০০৯ সালের ১০ ডিসেম্বর কেন্দ্রীয় ব্যাংকের রিজার্ভের পরিমাণ ছিল ১০ বিলিয়ন ডলার। গত ১৯ ফেব্রুয়ারি প্রথমবারের মতো রিজার্ভ ১৯ বিলিয়ন ডলার ছাড়ায়। পরে ৫ মার্চ আকুর জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি মেয়াদের ৯৬ কোটি ডলার আমদানি বিল পরিশোধের পর তা ১৯ বিলিয়ন ডলারের নিচে নেমে আসে।