দু’পুরুষ হলে দু’পুরুষের ঝগড়া বলতো নাঃপ্রধানমন্ত্রী

    0
    219

    আমারসিলেট24ডটকম,০ডিসেম্বরঃ নারী ক্ষমতায়ন বলে চিৎকার আর স্লোগান দিলে হবে না। নারী ক্ষমতায়নের জন্য কাজ করতে হবে। আজ আমরা স্বাধীন দেশের নাগরিক। আমরা এখন অনেক অধিকারের কথা বলি। কিন্তু যাদের ত্যাগের বিনিময়ে আমরা স্বাধীনতা অর্জন করেছি- তাদের স্মরণ করতে হবে। যারা এই নারীদের পাকিস্তানি বাহিনীর হাতে তুলে দিয়েছিল তাদের ঘৃণা জানাই। আজ সোমবার সকালে রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে ২০১৩ সালের বেগম রোকেয়া পদক বিতরণ অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত জাতীয় সংসদের স্থায়ী কমিটির সভাপতি ফজিলাতুন্নেসা ইন্দিরার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব তারিকুল ইসলাম।
    প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ডিসেম্বর মাস বাঙালি জাতির মুক্তির মাস। বিজয়ের মাস। ৩০ লাখ শহীদ এবং দুই লাখ নির্যাতিত মা-বেনের আত্মত্যাগের বিনিময়ে আমরা চূড়ান্ত বিজয় ছিনিয়ে আনতে পেরেছি। কিন্তু আমাদের স্বাধীনতা অর্জনের পেছনে যে কতো ত্যাগ। আমরা যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের কাজ শুরু করেছি। যারা এই বিচারের কাজে বাধা দিচ্ছে তারা কী স্বাধীনতায় বিশ্বাস করে? এই বিচার যেনো কার্যকর করতে পারি সেজন্য আমি আমার মা-বোনদের সহায়তা চাই।
    প্রধান অতিথির বক্তব্যে শেখ হাসিনা বিরোধী দলকে ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ড থেকে সরে আসার আহ্বান জানিয়ে বলেন, গণতন্ত্রের ধারাবাহিকতা রক্ষা করে বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে। আজকে বেগম রোকেয়ার জন্মদিন। আজকের এই দিনেও যদি হরতাল প্রত্যাহার করতেন তাহলে দুই নারী হিসাবে গালি শুনতে হতো না।
    তিনি বলেন, নারীরা যে তার অবস্থান থেকে কাজ করতে পারে তা আমরা প্রমাণ করেছি। আমরা নারী বলেই পুরুষ সমাজ দু’নারীর ঝগড়া দেখে। দু’পুরুষ হলে দু’পুরুষের ঝগড়া বলতো না। এসময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতীয় নারী উন্নয়ন নীতি-২০১১ ও পারিবারিক সহিংসতা (প্রতিরোধ ও সুরক্ষা) আইন ২০১০ প্রণয়ন করাসহ নারী উন্নয়নে সরকারের নেয়া বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা তুলে ধরেন।
    প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, নারীর অংশগ্রহণ ও অর্থনৈতিক ক্ষমতা নিশ্চিত করতে এবং নারীর প্রতি সামাজিক অপরা রোধে ব্যাপক পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। বিচার বিভাগ, নির্বাহী বিভাগ ও আইন সভা, সেনা, নৌ বিমানবাহিনী, পুলিশ বাহিনীসহ প্রতিটি ক্ষেত্রে নারীর অধিকার নিশ্চিবত করতে সরকার কাজ করে যাচ্ছে। প্রতিটি জায়গায় একজন নারী না থাকলে আমি আসলে ফাইলে সই করতে আপত্তিই জানাই। সুযোগ না করে দিলে নারীরা এগুবে কি করে তিনি বলেন।
    এদিকে এবছর নারী শিক্ষা বিস্তার, নারী অধিকার প্রতিষ্ঠাসহ গুরুত্বপূর্ণ অবদানের জন্য বেগম রোকেয়া পদক পেয়েছেন ঝর্নধারা চৌধুরী ও অধ্যাপক হামিদা বানু। চিরকুমারী ঝর্ণা ধারা চৌধুরী ছোটবেলা থেকেই গান্ধীজীর অহিংস মন্ত্রে উজ্জীবিত হয়ে মানব সেবায় আত্মনিয়োগ করেন। ১৯৩৮ সালে ১৫ অক্টোবর লক্ষ্মীপুর জেলায় জন্ম নেয়া ঝর্ণা ধারা গান্ধী মেমোরিয়াল ইনস্টিটিউটের সভাপতি। এবছর তিনি ভারতের বেসামরিক পদক পদ্মশ্রীতেও ভূষিত হয়েছে। আর চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের সাবেক অধ্যাপিকা হামিদা বানু সরকারি কর্মকমিশনসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করেছেন। ১৯৪০ সালের ২৩ জানুয়ারি চাঁদপুর জেলায় জন্ম নেয়া এই নারীর বেশ কয়েকটি গবেষণা ও প্রবন্ধ রয়েছে বলে জানা যায়।