টানা বৃষ্টিতে নবীগঞ্জের কৃষকদের সর্বনাশ !

    0
    601

    আমার সিলেট টুয়েন্টি ফোর ডটকম,০৫এপ্রিল,মতিউর রহমান মুন্না, নবীগঞ্জ থেকে:টানা বৃষ্টি আর উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে নবীগঞ্জে ১৫শ হাজার হেক্টর জমির কাঁচা বোরো ধান পানির নিচে তলিয়ে গেছে। এতে আনুমানিক প্রায় কয়েকশত কোটি টাকার ফসল নষ্ট হয়েছে বলে ধারনা করছেন অনেকেই ।
    এতে কৃষকরা দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। এভাবে প্রতিদিন বৃষ্টি হলে আরও তলিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। অপরদিকে, নদীগুলোতে পানি ও স্রোত বাড়ায় বিভিন্ন এলাকার বাঁধগুলো ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। ঝুঁকিপূর্ণ বাঁধগুলো রক্ষার জন্য বস্তা দিয়ে মাটি ফেলা হচ্ছে। পাশাপাশি বাঁধ এলাকায় পাহারাদার নিযুক্ত করা হয়েছে। এছাড়া খাল ও নদীতে স্থানীয় কৃষকরা স্বেচ্ছাশ্রমে বাঁধ নির্মাণ করে ফসল রক্ষার চেষ্টা করছেন। তবে পানি আরও বাড়লে বাঁধগুলো রক্ষা করা সম্ভব হবে না বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
    গত ২৮ মার্চ থেকে উপজেলায় মাঝারি বৃষ্টিপাত চলছে। এতে নদ-নদী, খাল, বিলের পানি বেড়ে চলেছে। ধান পাকার আগেই কাঁচা ধানের তোড় পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় দিশেহারা হয়ে পড়েছেন কৃষকরা। বিভিন্ন হাওর ঘুরে দেখা গেছে, চারদিকে শুধু পানি আর পানি। আগের মত দেখা যায় না গোছা গোছা ধানের শীষ। অসময়ের বৃষ্টি আর পাহাড়ি ঢলে নদনদী ও খালবিলের পানি বেড়ে বিভিন্ন হাওর ভেসে যাচ্ছে। উপজেলার বরার হাওর, দীঘলবাকের সাতাশি বন, কসবার ফেরিসাইট, এরাবরাব নদীর চর, মখা হাওর, গুঙ্গিয়ারজুরি হাওর, সৌলাগর, লাউয়াইল বিল, আলমপুরের বরবিল, বেরিবিলসহ উপজেলার ২৫টি হাওরের ফসল তলিয়ে গেছে।
    কৃষক সাহিদ মিয়া বলেন, ‘আমার সব শেষ, এবার দুর্ভিক্ষ ছাড়া কিছুই চোখে দেখছি না।’
    নবীগঞ্জ কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি বোরো মৌসুমে উপজেলায় লক্ষমাত্রা ছিল ১৬ হাজার ৮০০ হেক্টর। এখানে অর্জিত হয়েছে ১৭ হাজার ৪০০ হেক্টর ।
    জানা গেছে, নবীগঞ্জে বিএডি বা পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃক নির্দিষ্ট কোন দপ্তর না থাকায়,যার ফলে বিভিন্ন খাল, নালা ভরে গিয়ে পানি নিষ্কাশন ব্যহত হচ্ছে। এসব কারণে হাওরের ফসল নষ্ট হয়েছে বলে জানান কৃষকরা। সময় মতো পানি নিষ্কাশন হলে ফসলহানি এড়ানো যেত বলে জানিয়েছেন ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা।
    নবীগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এড. আলমগীর চৌধুরী বলেন, অকাল বৃষ্টি আর পাহাড়ি ঢলের পানিতে পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। গত কয়েক দিনে বিভিন্ন হাওরের ফসল তলিয়ে যাচ্ছে।
    নবীগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোঃ দুলাল উদ্দিন বলেন, হাওর এলাকার ফসল আগাম বন্যার হাত থেকে রক্ষা করতে হাওর উন্নয়ন ও আগাম বন্যা প্রতিরোধ ও নিষ্কাশন প্রকল্প জরুরী। এ ব্যাপারে জনপ্রতিনিধিরা উদ্যোগী হয়ে সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের অধিনে নদী খনন কাজ শুরুতে করতে হবে।