চাকরির পেছনে না ছুটে নিজেরা উদ্যোক্তা হতে হবেঃপ্রধানমন্ত্রী

0
461
চাকরির পেছনে না ছুটে নিজেরা উদ্যোক্তা হতে হবেঃপ্রধানমন্ত্রী

বিশেষ প্রতিনিধি,ঢাকাঃ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তরুণ প্রজন্মের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন,শিক্ষাজীবন শেষ করে চাকরির পেছনে না ছুটে উদ্যোক্তা হতে হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রোববার ৫ ডিসেম্বর ৯ম জাতীয় এসএমই পণ্য মেলা ২০২১-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে এই আহ্বান জানান।

রাজধানীর ঢাকার বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আয়োজিত মূল অনুষ্ঠানে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে তিনি গণভবন থেকে ভার্চ্যুয়ালি সংযুক্ত হন।

শেখ হাসিনা বলেন, “শুধু পাস করেই চাকরির পেছনে না ছুটে নিজেরা উদ্যোক্তা হতে হবে এবং অন্যকে চাকরি দেওয়ার সুযোগ তৈরি করতে হবে।“

উদ্যোক্তা তৈরি করার জন্য আ’লীগ সরকার সব ধরনের পদক্ষেপ নিচ্ছে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, তরুণ সমাজকে শিক্ষার সুযোগ করে দিয়েছি। কারিগরি শিক্ষা ও ভকেশনাল ট্রেনিংয়েরও সুযোগ করে দিয়েছি। পাশাপাশি কম্পিউটার ট্রেনিংয়ের মাধ্যমে অনলাইনে সব রকম ব্যবসা-বাণিজ্য যাতে করতে পারে, সেই ব্যবস্থাও করে দিয়েছি।

আ’লীগ সরকার যুবসমাজের কল্যাণে স্টার্ট আপ প্রোগ্রাম নিচ্ছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এ জন্য বাজেটে আলাদা টাকাও বরাদ্দ আছে। কাজেই উদ্যোক্তা হতে চাইলে যে কেউ হতে পারে।

শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশে এখন ব্রডব্যান্ড সুবিধা প্রায় ইউনিয়ন পর্যায় পর্যন্ত পৌঁছে যাচ্ছে। বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ উৎক্ষেপণ করা হয়েছে। মুঠোফোন সবার হাতে পৌঁছে গিয়েছে।

ডিজিটাল যন্ত্রের মাধ্যমে যোগাযোগ খুব সহজ হয়ে গেছে উল্লেখ করে সরকারপ্রধান বলেন, ‘ক্রয়-বিক্রয়, পণ্যমান সবকিছু জানার একটা সুযোগ হচ্ছে। বাজার সম্পর্কে জানার সুযোগ হচ্ছে। বাজারের চাহিদা ও পণ্যের মূল্য সম্পর্কে জানার সুযোগ হচ্ছে। এই সুবিধাগুলো কিন্তু এখন চলে এসেছে। যার ফলে আমি মনে করি, আমাদের মানুষের আর কষ্ট করার কোনো অর্থ হয় না। একটু স্ব-উদ্যোগে কাজ করলেই কিন্তু নিজেরা উদ্যোক্তা হতে পারেন। নিজেরা কাজ করতে পারেন।’

মুজিব বর্ষ ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদ্‌যাপনকালে দেশে শতভাগ বিদ্যুতায়নের অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আজকে শতভাগ বিদ্যুৎ যখন দেওয়া হচ্ছে, পাশাপাশি যোগাযোগব্যবস্থার ব্যাপক উন্নয়ন আমরা করে দিয়েছি। আর, একটা জায়গায় বিদ্যুৎ ও যোগাযোগ ব্যবস্থা যদি থাকে, তবে সেখানে পণ্য উৎপাদন ও বাজারজাতকরণে কোনো সমস্যা হয় না।’

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, “আমাদের দেশে কাঁচামালের সহজলভ্যতা রয়েছে। সেই বিবেচনাতেও দেশে শিল্প গড়ে উঠতে পারে। এতে করে আমার নিজের দেশে যেমন বাজারসম্প্রসারণ হচ্ছে, মানুষের ক্রয়ক্ষমতা বাড়ছে, সেই সঙ্গে বিদেশেও আমরা রপ্তানি করতে পারব। আমাদের রপ্তানি পণ্য বৃদ্ধি পাবে।“ সে জন্য পণ্যগুলো যাতে আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন হয়, সেদিকে দৃষ্টি দেওয়ার আহ্বান জানান তিনি।

করোনা মহামারির কারণে ১৯ মাস বিরতির পর এসএমই ফাউন্ডেশন এই মেলার আয়োজন করেছে। ২০২০ সালের মার্চ মাসে সবশেষ এসএমই মেলার আয়োজন করা হয়েছিল। দেশে করোনার সংক্রমণ শনাক্ত হওয়ার পর দ্রুত সেই মেলা গুটিয়ে যায়।

১২ ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত এই মেলা চলবে। মেলায় প্রথমবারের মতো ১০টি ব্যাংক, আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) অংশ নিচ্ছে। পাশাপাশি সারা দেশ থেকে বাছাইকৃত ৩০০ এসএমই প্রতিষ্ঠান মেলায় অংশ নিচ্ছে, যাদের প্রায় ৬০ শতাংশ নারী উদ্যোক্তা।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে বিশেষ অতিথি ও অনুষ্ঠানের সভাপতি শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুন জাতীয় এসএমই পুরস্কার ২০২১ বিজয়ী চার উদ্যোক্তার হাতে ক্রেস্ট, সনদ ও চেক তুলে দেন।

বিশেষ অতিথি ও আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার, শিল্পসচিব জাকিয়া সুলতানা, এফবিসিসিআইর সভাপতি মোঃ জসিম উদ্দিন ও এসএমই ফাউন্ডেশনের চেয়ারপারসন মোঃ মাসুদুর রহমান প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।