গাছে পেরেক মেরে মানুষ কেবল নিষ্ঠুরতার প্রমাণকেই শক্তিশালী করে

0
637

নুর মোহাম্মদ সাগর, শ্রীমঙ্গল প্রতিমিধিঃ মানুষের যেরকম প্রাণ আছে তেমনি গাছেরও প্রাণ আছে। একেকটা গাছ একেকটা অক্সিজেনের কারখানা। গাছ পরিবেশ ও মানুষের সবচেয়ে বড় বন্ধু হলেও মানুষের নিষ্ঠুরতার হাত থেকে রক্ষা পাচ্ছে না অবলা বৃক্ষ। চিকিৎসা, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, কোচিং বাণিজ্য রাজনীতিসহ বিভিন্ন ধরনের সাইনবোর্ড চোখে পড়ছে এসব গাছগুলোতে। রাস্তার পাশে গাছ থাকলেই তাতে টাঙানো হচ্ছে সাইনবোর্ড, ব্যানার কিংবা প্ল্যাকার্ড। প্রচারণার জন্য আইনের তোয়াক্কা না করে পরিবেশের কথা না ভেবে অনেকেই গাছে পেরেক মেরে সাইনবোর্ড টাঙিয়ে দিচ্ছে, যা পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর ও দৃষ্টিকটু।গাছে পেরেক ঠুকে এসব লাগানো আইনসম্মত না হলেও তা কেউ মানছে না।

সরেজমিন দেখা যায়, শ্রীমঙ্গল উপজেলা শহর অঞ্চলের বেশিরভাগই দেখা যায় কলেজ রোড, স্টেশন রোড, ভানুগাছ রোড, কালীঘাট রোড, হবিগঞ্জ রোড, মৌলভীবাজার রোড, শান্তিবাগসহ শ্রীমঙ্গল পৌরসভা ও উপজেলায় গ্রামের প্রত্যেকটি সড়কের টাঙ্গানো হচ্ছে এমন সাইনবোর্ড।

পরিবেশ সম্পর্কে শহরের পরিবেশ প্রেমিক ও গুণীজনদেরকে জিজ্ঞাসা করলে বলেন উন্নয়নের নামে যখন নদী দখল করে নেয়, গাছপালা কাটা হয়, পাহাড়ের টিলা কেটে সমান করে ফেলে, নির্ধারিত উচ্চতার চেয়ে কম উচ্চতার চিমনি দিয়ে ইট খলা চালু করে, তথাকথিত শিল্পোন্নয়নের নামে শিল্প বর্জ্য যখন সাধারণ নর্দমা, খাল এবং নদীতে ছেড়ে দেয়,তখনই পরিবেশ দূষণ বেশি মাত্রায় হয়৷ এর প্রতিটি ক্ষেত্র দেখার আনুষ্ঠানিক দায়িত্ব থাকে সরকারের ওপর৷ তাহলে পরিবেশ দূষণের জন্য দায়ী জনগণের সচেতনতার অভাব নয়, বরং কর্তা-ব্যক্তিদের গাফিলতিই এর জন্য দায়ী৷ অথচ সাধারণ মানুষের চেয়ে এই কর্তা-ব্যক্তিরা বেশি শিক্ষিত এবং সচেতনতার দাবিদার৷ এরা কিন্তু চাইলেই সাধারণ মানুষকে সচেতন করতে পারেন নিজেদের কাজ ঠিকমত করার মধ্য দিয়ে।

বিভিন্ন এলাকার লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এ অবস্থা তৈরি হয়েছে পাঁচ-ছয় বছর আগে থেকে। এর আগে হাতে গোনা দু-একটি ছাড়া খুব বেশি সাইনবোর্ড চোখে পড়ত না। দুই বছর আগে থেকে গাছে সাইনবোর্ড বেশি চোখে পড়ছে। নববর্ষ, বিজয় দিবস, স্বাধীনতা দিবস ও একুশে ফেব্রুয়ারি উপলক্ষেও রাজনীতিবিদদের শুভেচ্ছা সাইনবোর্ড দেখা গেছে। অন্যান্য দিবস উপলক্ষেও নতুন নতুন সাইনবোর্ড গাছে ঝুলিয়ে থাকেন রাজনীতিবিদরা। এ ব্যাপারে নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক যুবক বলেন, যারা মানুষকে সচেতন করবেন, তারা নিজেরাই গাছে পেরেক ঠুকে নিজেদের অসচেতনতার পরিচয় তুলে ধরেছেন।

শ্রীমঙ্গল উপজেলার সচেতন নাগরিক আনিছুল ইসলাম  বলেন, ‘রাজনীতি এখন আর মানুষের মধ্যে নেই, তা গাছের ডালে চলে গেছে। সব গাছেই রাজনীতিবিদদের সাইনবোর্ড দেখা যাচ্ছে। মানুষের মধ্যে পরিচিতি নেই, কিন্তু গাছের ডালে ঠিকই ঝুলছেন তিনি। যেহেতু আইন আছে, সেহেতু এসব সাইনবোর্ড প্রশাসন তুলে ফেলার নির্দেশ দিতে পারে।

তিনি আরও বলেন, ‘গাছে পেরেক লাগানোর কারণে গাছের গায়ে যে ছিদ্র হয়, তা দিয়ে পানি ও এর সঙ্গে বিভিন্ন ব্যাকটেরিয়া, ছত্রাক ও অণুজীব ঢোকে। এতে গাছের ওই জায়গায় পচন ধরে। ফলে তার খাদ্য ও পানি শোষণ প্রক্রিয়া ব্যাহত হয়। একসময় গাছটি মরে যায়।’তেমনিভাবে আপনারা একটু ভালো করে লক্ষ্য করে দেখবেন শ্রীমঙ্গল সরকারি ৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতাল এর সামনে গাছটি মারা গেছে এখনো গাছে বিভিন্ন ধরনের বিশেষ করে কর্মরত চিকিৎসকদের সাইনবোর্ড টাঙনো আছে।