গণজমায়েত নিয়ে জামায়াত-বিএনপির মতবিরোধ

    0
    229

    আমারসিলেট24ডটকম,২০জানুয়ারীঃ আজ সোমবার বিকালে সোহরাওয়ার্দি উদ্যানে গণজমায়েতেকে কেন্দ্র করে বিএনপি নেতৃত্বাধীন ১৮দলীয় জোটের শীর্ষ দুই শরিক বিএনপি ও জামায়াতের মধ্যে বিবাদ দেখা দিয়েছে। জোট প্রধান বিএনপি আজ বিকালের গণসমাবেশে জামায়াতে ইসলামীকে উপস্থিত না হতে বলেছে। কিন্তু জামায়াত চাচ্ছে যে কোনো মূল্যে আজকের সমাবেশে তারা তাদের শক্তি প্রদর্শন করতে। এ নিয়ে জোটের দুই শরিকের মধ্যে বিরোধ এখন তুঙ্গে। জামায়াত নেতারা বিএনপি নেত্রী বেগম জিয়ার সাথে দফায় দফায় বৈঠক করেও সমাবেশে যোগদানের অনুমতি পাচ্ছেন না। বিএনপি সংশ্লিষ্ট একটি দায়িত্বশীল সূত্রের বরাতে এ তথ্য জানা যায়।
    অপরদিকে আজ বিকালে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দি উদ্যানে শুধুমাত্র বিএনপিকে গণসমাবেশ করার অনুমোদন দিয়েছে ডিএমপি। এ অজুহাতে জামায়াতকে কৌশলে দূরে রাখার উদ্যোগ নিয়েছে বিএনপি। জোট থেকে জামায়াতকে বের করে দেয়ার এটি হচ্ছে বিএনপির প্রথম ধাপ। তবে বিষয়টিতে ক্ষুব্ধ হলেও এ নিয়ে এখনই মুখ খুলতে রাজি নয় জামায়াত-শিবিরের দায়িত্বশীল নেতৃবৃন্দ।তবে জামায়াত নেতারা বলছেন, গণজমায়েতটি মূলত ১৮দলীয় জোটের ছিল। সে হিসাবে গণজমায়েতে উপস্থিতি নিয়ে তাদেরও ব্যাপক প্রস্তুতি ছিল। কিন্তু আজ সোমবার ভোরে সোহরাওয়ার্দি উদ্যানের গণজমায়েতে জামায়াতকে না আসার কথা বলেছে বিএনপি। তারা বলছে- এটা শুধুমাত্র বিএনপির কর্মসূচি। যুক্তি দেখানো হচ্ছে- এটি বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের ৭৮তম জন্মবার্ষিকীর অনুষ্ঠান। এছাড়া ডিএমপির পক্ষ থেকেও যে ১২টি শর্তে গণজমায়েতের অনুমোদন দেয়া হয়েছে সেখানে শুধু বিএনপিকে সমাবেশ করার অনুমতি দেয়া হয়।
    অন্যদিকে আজকের সোহরাওয়ার্দির গণজমায়েতকে কেন্দ্র করে শোডাউনের ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে জামায়াত-শিবির। দলটির পক্ষ থেকে সেখানে দেড় লাখেরও বেশি মানুষের জমায়েতের পরিকল্পনা করা হয়েছিল। কিন্তু আজ ভোরে বিএনপির পক্ষ থেকে জামায়াতকে গণজমায়েতে আসতে নিষেধ করার প্রেক্ষিতে জামায়াত-শিবিরের কেন্দ্র থেকে সকল থানা ও ওয়ার্ড নেতাকর্মীদের বিকেলের সোহরাওয়ার্দি উদ্যানের গণজমায়েতে না আসার জন্য জানানো হয়েছে। যদিও গতকাল রবিবার রাতেই বিএনপি প্রচার সম্পাদক জয়নুল আবেদীন ফারুক জানিয়েছিলেন, গণজমায়েতে জামায়াতের আসা না আসার বিষয়টি বিএনপির নীতিনির্ধারকরা নির্ধারণ করবেন।
    তবে জামায়াত-শিবির নেতাদের দাবি- গত ১৫ জানুয়ারি বেগম জিয়া কর্মসূচি ঘোষণার সময় ১৮দলীয় জোটের কর্মসূচি ঘোষণা করলেও এখন তারা বলছেন এটি নিজস্ব কর্মসূচি। সংবাদ সম্মেলনে খালেদা জিয়ার দাবি ছিল- প্রহসনের নির্বাচনের মাধ্যমে গঠিত সরকার অবৈধ। এই অবৈধ সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন চলবে। তার নির্দেশে নির্বাচন ঠেকাতে আন্দোলন থেকে শুরু করে জোটের প্রতিটি কর্মসূচিতে সক্রিয় ভূমিকা রেখেছে জামায়াত-শিবির। তারপরও আজ সোমবারের গণজমায়েতে বিএনপি তাদেরকে আসার অনুমতি দিচ্ছে না। বিএনপি জামায়াতকে দূরে ঠেলে দিতে চাচ্ছে।
    তবে বিএনপি সংশ্লিষ্ট নেতারা বলছেন, গত সপ্তাহেই ১৮দলীয় জোটের বৈঠকে বেগম জিয়া জামায়াতকে সহিংসতা ত্যাগ করতে কড়া নির্দেশ দেন। এরপরও জামায়াত-শিবির গত শনিবার গাইবান্ধার সুন্দরপুরে আসামি ধরতে যাওয়া আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সাথে ব্যাপক সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। সেখানে পুলিশসহ অর্ধশতাধিক আহতের ঘটনা ঘটেছে। এমন পরিস্থিতিতে বিএনপি জামায়াতে এড়িয়ে চলার নীতি অবলম্বন করছে। তাছাড়া গত বৃহস্পতিবার ইউরোপীয়ান ইউনিয়নও সরাসরি জামায়াতের সঙ্গ ছাড়তে বিএনপিকে পরামর্শ দিয়েছে। একইভাবে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ ও সংগঠন থেকেও বিএনপিকে জামায়াতের সঙ্গ ছাড়ার পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। এসব চাপের মুখে পড়েই গত সোমবার বেগম জিয়া জামায়াতকে সহিংসতা ত্যাগের কড়া নির্দেশষ দিয়েছেন। বিএনপির দাবি, জামায়াত তার নিজস্ব ইস্যুতে ঘটানো সহিংসতার দায় নিতে হচ্ছে বিএনপিকে। যা বিএনপির সার্বিক আন্দোলনকেই প্রশ্নবিদ্ধ করেছে।