খালেদা জিয়া রাজনৈতিক সংকট নিরসনে সংলাপে রাজি

    0
    288
    খালেদা জিয়া রাজনৈতিক সংকট নিরসনে সংলাপে রাজি
    খালেদা জিয়া রাজনৈতিক সংকট নিরসনে সংলাপে রাজি

    ঢাকা, ১৪ মে : বিএনপির চেয়ারপারসন ও বিরোধী দলীয় নেতা খালেদা জিয়া বাংলাদেশের রাজনৈতিক সংকট নিরসনে জাতিসংঘের প্রচেষ্টার প্রশংসা করে সংলাপে রাজি হয়েছেন। আগামী নির্বাচন অবাধ সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করতে বিরোধী দল তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি থেকে কিছুটা সরে এসেছে বলেও সূত্রে জানা গেছে। আলোচনার মাধ্যমে সংবিধানের প্রতি সামঞ্জস্য রেখে একটি গ্রহণযোগ্য সমাধান ও প্রক্রিয়ায় পৌঁছানো যাবে এমন আশ্বাসের ভিত্তিতেই বিএনপি সংলাপে রাজি হয়েছে বলে জানা গেছে। এদিকে আজ মঙ্গলবার বা আগামীকাল বুধবার আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে খালেদার কাছে লিখিত প্রস্তাব যেতে পারে বলে সূত্র জানিয়েছে। জাতিসংঘের প্রতিনিধি জানিয়েছেন, সংসদে প্রতিনিধিত্ব করছে, এমন দলগুলোর সমন্বয়ে একটি অন্তবর্তীকালীন সরকার গঠন করা হবে এমন আশ্বাস দেয়া হয়েছে বিরোধী দলীয় নেত্রীকে।
    এর আগে গতকাল সোমবার দুপুরে বাংলাদেশ সফররত জাতিসংঘের রাজনীতি বিষয়ক সহকারী মহাসচিব ওসকার ফার্নান্দেজ তারানকো খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেখা করতে গেলে দেড় ঘণ্টাব্যাপী বৈঠকে এসব বিষয়ে আলোচনা হয়। গুলশানে খালেদা জিয়ার বাসায় দুপুর পৌনে দু’টা থেকে সোয়া তিনটা পর্যন্ট টানা দেড় ঘণ্টাব্যাপী ওই বৈঠক শেষে অপেক্ষমাণ সাংবাদিকদের পাশ কাটিয়ে চলে যান তারানকো। তবে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে বিএনপির ভাইস-চেয়ারম্যান শমসের মোবিন চৌধুরী বলেন, সংলাপ প্রসঙ্গে ম্যাডাম বলেছেন, কথাবার্তা চলছে, আরো চলবে। আশা করি, এ থেকে গ্রহণযোগ্য সমাধান বেরিয়ে আসবে। আর এ কাজে জাতিসংঘ যে উদ্যোগ নিয়েছে সেজন্য ধন্যবাদ।
    খালেদা জিয়ার উদ্ধৃতি দিয়ে শমসের মোবিন আরো বলেন, সংলাপের যে উদ্যোগ নেয়া হয়েছে তাতে সংকট নিরসন হবে বলে আশাবাদী বিএনপি চেয়ারপারসন। ভবিষ্যতে এ সংকটের সমাধান বের হয়ে আসবে বলেও মনে করছেন তিনি।
    বৈঠকে বাংলাদেশে নিযুক্ত জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারীও তারানকোর সঙ্গে আলোচনায় অংশ নেন। এ সময় খালেদা জিয়ার সঙ্গে ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ড. আব্দুল মঈন খান, খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য ড. ওসমান ফারুক, বিরোধী দলীয় চীফ হুইপ জয়নূল আবেদীন ফারুক প্রমুখ।

    অর্থবহ সংলাপে সঙ্কটের উত্তরণ ঘটবে : মির্জা ফখরুল

    অর্থবহ সংলাপে সঙ্কটের উত্তরণ ঘটবে : মির্জা ফখরুল
    অর্থবহ সংলাপে সঙ্কটের উত্তরণ ঘটবে : মির্জা ফখরুল

    ঢাকা, ১৪মে : বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন অর্থবহ সংলাপের মাধ্যমে রাজনৈতিক সংকটের উত্তরণ ঘটবে। আজ মঙ্গলবার দুপুরে চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুর রওনা হওয়ার আগে তিনি সাংবাদিকদের এ কথা বলেন। তিনি বলেন, দেশবাসী বিশ্বাস করে, একটি অর্থবহ সংলাপের মাধ্যমে বিরাজমান রাজনৈতিক সংকটের উত্তরণ ঘটবে। আমরা চাই, দেশে শান্তি ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা হোক। সব সমস্যার সমাধান হোক। জাতিসংঘের মহাসচিবের বিশেষ দূত সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল অস্কার ফার্নান্দেজ তারানকোর ঢাকা সফর এবং সরকারের সংলাপের উদ্যোগ প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল বলেন, আমার প্রত্যাশা যে কোনো উদ্যোগ সফল হোক, ফলপ্রসূ হোক। এ সময় আরোগ্যলাভের জন্য দেশবাসীর দোয়া চান বিএনপির মুখপাত্র।
    এদিকে আজ বেলা সাড়ে ১২টার পর শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে বাংলাদেশ বিমানের নিয়মিত ফ্লাইটে সিঙ্গাপুর রওনা হন মির্জা ফখরুল। বাংলাদেশ বিমানের ০৮৪ নম্বর ফ্লাইটে ঢাকা ছাড়েন তিনি। তাকে বিমানবন্দরের ভেতরে নিয়ে যাওয়া হয় হুইল চেয়ারে করে। স্ত্রী রাহাত আরা বেগম তার সঙ্গে রয়েছেন। মির্জা ফখরুল গলার ধমনীতে রক্ত চলাচলের জটিলতায় ভুগছেন। সিঙ্গাপুরে ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি হাসপাতালে চিকিৎসা নেবেন ফখরুল। তার গলার রক্তনালীতে ব্লক ধরা পড়েছে। মূলত ওই ব্লক অপসারণেই সিঙ্গাপুর গেলেন তিনি। তার ফেরার তারিখ এখনই নির্দিষ্ট করা হয় নি। এর আগে গত ৬ মে কারামুক্ত হওয়ার পর তিনি গুলশানের ইউনাইটেড হাসপাতালে ভর্তি হন। সেখানে চিকিৎসকরা তাকে সিঙ্গাপুরে যাওয়ার পরামর্শ দেন। সিঙ্গাপুর যাওয়ার আগে গতকাল সোমবার রাতে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেখা করেন তিনি। বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবদুল কাইয়ুম, যুব দলের সহসভাপতি ফরহাদ হোসেন আজাদসহ নেতাকর্মীরা বিমানবন্দরে ভারপ্রাপ্ত মহাসচিবকে বিদায় জানান।
    এদিকে  গত কয়েকদিনে দেশের শীর্ষ রাজনৈতিক নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করে আগামী নির্বাচন নিয়ে তাদের মতানৈক্য দূর করতে এবং ‘দ্রুত’ সংলাপ শুরু করার তাগিদ দেন অস্কার ফার্নান্দেজ তারানকো। গতকাল সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, সংলাপ ‘দ্রত’ শুরু হলেই সমাধান বের করা সহজ হবে। তারানকো বলেন, অর্থবহ ও গঠনমূলক রাজনৈতিক সংলাপের জরুরি প্রয়োজনের বিষয়ে জাতিসংঘ মহাসচিবের গুরুত্বপূর্ণ বার্তা’ তিনি সব পক্ষের কাছে পৌঁছে দিয়েছেন। আমাদের কাছে কোনো ফর্মুলা নেই। আমরা কোনো ফর্মুলা দিতেও আসিনি। বরং আমরা সমাধান বের করতে উৎসাহ দিচ্ছি। সমাধান বাংলাদেশের মধ্য থেকেই আসতে হবে।
    জাতিসংঘ মহাসচিবের দূত হিসেবে চার দিনের সফরে শুক্রবার ঢাকা আসেন তারানকো। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিরোধীদলীয় নেতা খালেদা জিয়ার সঙ্গে বৈঠক করে বান কি মুনের একটি চিঠিও দুই নেত্রীকে দেন তিনি। সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনের ফলে তত্ত্বাবধায়ক সরকার পদ্ধতি বিলুপ্ত হওয়ায় এখন নির্বাচিত অর্থাৎ আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনেই নির্বাচন হবে।দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন সুষ্ঠু হবে না দাবি করে তা বয়কটের হুমকি রয়েছে বিএনপি।সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সংলাপের জন্য বিরোধী দলকে প্রস্তাব দিলেও বিএনপি বলছে, আগে নির্বাচনকালীন নির্দলীয় সরকারের দাবি মেনে নিতে হবে, তারপরই আলোচনা হতে পারে।