উজান ও ভাটির দু’দিক থেকেই বাড়ছে হবিগঞ্জে বন্যার পানি

0
326
উজান ও ভাটির দু’দিক থেকেই বাড়ছে হবিগঞ্জে বন্যার পানি
উজান ও ভাটির দু’দিক থেকেই বাড়ছে হবিগঞ্জে বন্যার পানি

নূরুজ্জামান ফারুকী,বিশেষ প্রতিনিধিঃ সিলেট সুনামগঞ্জের বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হলেও হবিগঞ্জে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হচ্ছে। উজান-ভাটি দুদিকের পানি প্রবেশ অব্যাহত রয়েছে। ফলে ৭টি উপজেলার ৫১টি ইউনিয়নের কয়েক লাখ মানুষ পানিবন্দি অবস্থায় মানেবতর জীবনযাপন করছেন। প্লাবিত হচ্ছে নতুন নতুন এলাকা।

জানা যায়, সিলেট ও সুনামগঞ্জের বন্যার পানি কুশিয়ারা-কালনী, বিবিয়ানা দিয়ে নামছে হবিগঞ্জ সদর, লাখাই নবীগঞ্জ, আজমিরীগঞ্জ, বানিয়াচংয়ে।

ভাটি অঞ্চলের হাওরগুলোতে উজানের পানি বেড়েছে ফলে উজান-ভাটি দুদিক থেকেই হবিগঞ্জ সদর, লাখাই নবীগঞ্জ, আজমিরীগঞ্জ, বানিয়াচং উপজেলায় বাড়ছে পানি।

এছাড়া আজমিরীগঞ্জে বাঁধ ভেঙে যাওয়ায় ও নবীগঞ্জে সুইসগেইটের রাস্তা, রেগুলেটর এবং বাঁধ ভেঙে প্রবল বেগে পানি ডুকছে নবীগঞ্জের পৌরসভা ও ইউনিয়নগুলোতে।

ফলে কয়েক লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি অবস্থায় মানবেতর জীবনযাপন করছে। বৃষ্টি ও ঢলে নদ-নদী ও হাওরে পানি বৃদ্ধি পেয়ে হবিগঞ্জ সদর উপজেলার ৬টি ইউনিয়ন, নবীগঞ্জ পৌরসভা ও উপজেলার ১৩টি ইউনিয়ন, ৪০টি পাকা সড়ক বন্যার পানিতে প্লাবিত হয়েছে। ৩০টি গ্রামের সাড়ে ৭ হাজার গ্রাহকের বিদুৎ সংযোগ বন্ধ রয়েছে। আজমিরীগঞ্জ উপজেলার পাঁচটি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভার, বানিয়াচং উপজেলার ১৫টি ইউনিয়ন বন্যা কবলিত হয়ে পড়ছে।

বানিয়াচং উপজেলার সাথে পাশবর্তী আজমিরীগঞ্জ উপজেলার সড়ক, বানিয়াচং ভায়া নবীগঞ্জ সিলেট সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। লাখাই উপজেলায় লাখাইয়ে ৬টি ইউনিয়নের বাড়িঘরে বন্যার পানি প্রবেশ করায় লোকজন তাদের জানমাল নিয়ে আশ্রয় কেন্দ্রের দিকে ছুটছেন। বাহুবল উপজেলার স্নানঘাট ইউনিয়ন বন্যাকবলিত হয়েছে। বন্যা কবলিতদের মাঝে খাদ্য সহায়তা দিয়েছে প্রশাসন। মাধবপুর উপজেলার ৫টি ইউনিয়নের ৩০টি গ্রামের কয়েক হাজার মানুষ বন্যায় প্লাবিত হয়ে পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। গ্রামের আঞ্চলিক সড়ক ও কাচা রাস্তা বন্যার পানিতে ডুবে গেছে। জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, আজমিরীগঞ্জ, নবীগঞ্জ, বানিয়াচং, লাখাই, বাহুবল, মাধবপুর এবং সদর উপজেলাগুলোতে প্রায়ই ৫১টি ইউনিয়ন বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের মধ্যে ইতোমধ্যে বিতরণ করা হয়েছে ২০০ মেট্রিক টন চাল, ১০ লক্ষ টাকা এবং ২০০০ প্যাকেট শুকনো খাবার। এছাড়াও পানিবন্দী মানুষের জন্য ২২৫টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। ৩০টি মেডিকেল টিম গঠন করে তা সক্রিয়ভাবে চালু রাখা হয়েছে। আরও ৫০০ মেট্রিক টনেরও বেশি চাল মজুত রয়েছে।

নবীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শেখ মহি উদ্দিন জানান, বন্যার্ত মানুষের পাশে আমরা সবসময় আছি, খাদ্য সহায়তা বিতরণ অব্যাহত রয়েছে, নতুন করে চাল-শুকনো খাবার পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট, ওরস্যালাইন বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। তবে সবাইকে এই দুর্যোগে এগিয়ে আসার আহবান জানান ইউএনও।

হবিগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মিনহাজ আহমেদ শোভন বলেন, বিভিন্ন স্থানে হাওরে মাঝে মহাসড়ক দেয়া হয়েছে এরফলে ভাটি অঞ্চলের হাওগুলোর

পানি নামছেনা ফলে বন্যার অবনতি হচ্ছে। কুশিয়ারা পানিও বাড়ছে। তিনি বলেন- উজান-ভাটি দুদিক দিয়ে হবিগঞ্জ, নবীগঞ্জ, আজমিরীগঞ্জ, বানিয়াচং ও লাখাইয়ে পানি প্রবেশ করছে নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। হাওরের পানি নামতে সময় লাগবে। হাওরের পানি নেমে গেলে তবেই বন্যার উন্নতি হবে।

জেলা প্রশাসক ইশরাত জাহান বলেন-হাওর,নদী,খাল পলিমাটিতে ভরে যাওয়ায় পানি নামছেনা ফলে উজান-ভাটি দুদিক থেকে পানি ঢুকছে। পানি নামার জন্য ভাটি অঞ্চলের খাল খননের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে অনেক স্থানে কাজ চলছে আস্তে-আস্তে পানি নেমে যাবে আশা করছি।