আমারসিলেট টুয়েন্টিফোর ডটকম,০৪মার্চঃ দুদলের মাঝে ব্যবধান ছিল যোজন যোজন মাইল। ম্যাচের ফলাফলেও যার ছাপ স্পষ্ট হলো। পার্থে বুধবার আফগানিস্তানকে ২৭৫ রানে পরাজিত করেছে অস্ট্রেলিয়া। বিশ্বকাপে এটি কোনো দলের সর্বোচ্চ ব্যবধানে জয়।
প্রথমে ব্যাট করে ওয়ার্নারের সেঞ্চুরি, স্টিভেন স্মিথ ও ম্যাক্সওয়েলের হাফ সেঞ্চুরিতে ৬ উইকেটে ৪১৭ রান করে অস্ট্রেলিয়া। জবাবে ৩৭.৩ ওভারে ১৪২ রানে অলআউট হয়েছে আফগানিস্তান। ডেভিড ওয়ার্নার ম্যাচ সেরা হন।
এক ম্যাচে কত কী পেল অস্ট্রেলিয়া। বুধবার তাদের করা ৪১৭ এখন বিশ্বকাপে দলীয় সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড। এর আগে বিশ্বকাপে ৫ উইকেটে ৪১৩ রান করেছিল ভারত ২০০৭ সালে বারমুডার বিরুদ্ধে। এদিন তাদের ২৭৫ রানের জয়টাও বিশ্বকাপ ইতিহাসে রেকর্ড। ওই বারমুডার বিরুদ্ধে ভারতের ২৫৭ রানের জয়টাই ছিল এতদিন বিশ্বকাপে সর্বোচ্চ। অস্ট্রেলিয়া যেটিকে টপকে গেল বুধবার। এটি অস্ট্রেলিয়ারও নিজেদের ইতিহাসে সর্বোচ্চ ব্যবধানে জয়। ২০০৩ সালে র্দুবল নামিবিয়াকে ২৫৬ রানে হারিয়েছিল অস্ট্রেলিয়া।
৪১৮ রানের টার্গেটা আফগানদের জন্য শৃঙ্গ পাড়ি দেওয়ার চেয়ে বেশি কিছু। দলীয় ৩০ রানে ওপেনিং জুটি বিচ্ছিন্ন হয় তাদের। তারপর নিয়মিত বিরতিতেই উইকেট হারিয়েছে দলটি। যদিও স্টার্ক, জনসনদের গতির ঝড়ের বিপরীতে প্রতিরোধ গড়ার চেষ্টা করেছিলেন নওরোজ মঙ্গল , নাজিবউল্লাহরা। কিন্তু সেগুলো বড় হতে দেননি জনসনরা। নওরোজ মঙ্গল ৩৫ বলে ৩৩ রান (২ চার, ২ ছয়) করেন। নাজিবউল্লাহ ২৪, সামিউল্লাহ শেনওয়ারি ২৪, জাভেদ আহমাদি ১৩, উসমান গনি ১২ রান করেন। অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে জনসন ৪টি, হ্যাজেলউড-স্টার্ক ২টি করে উইকেট পান।
এর আগে পুরো ইনিংসেই অস্ট্রেলিয়ানদের ব্যাটে পিষ্ট হয়েছে আফগান বোলাররা। টসে হেরে ব্যাট করতে নেমে দলীয় ১৪ রানে অ্যারন ফিঞ্চের উইকেট হারায় অস্ট্রেলিয়া। দৌলত জাদরানের বলে নওরোজ মঙ্গলের হাতে ক্যাচ দেন ফিঞ্চ। দ্বিতীয় উইকেটে দলের হাল ধরেন ওয়ার্নার ও স্টিভেন স্মিথ। তাদের জুটি দলকে পাইয়ে দেয় বড় স্কোরের সিড়ি। তারা ২৬০ রানের জুটি গড়েন।
বিশ্বকাপে এটি অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে সর্বোচ্চ রানের জুটি। ২০০৩ সালে ভারতের বিরুদ্ধে ২৩৪ রানের জুটি গড়েছিলেন পন্টিং ও মার্টিন। একই সঙ্গে ওয়ার্নার-স্মিথের জুটি ওয়ানডেতে অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে সেরা রানের জুটি। এর আগে সর্বোচ্চ ২৫২ রানের জুটি গড়েছিলেন পন্টিং-ওয়াটসন ২০০৯ সালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে।
ওয়ার্নার তুলে নেন ৪র্থ ওয়ানডে সেঞ্চুরি। ৪০ বলে হাফ সেঞ্চুরির পর ৯২ বলে সেঞ্চুরির মাইলফলক স্পর্শ করেন তিনি। ডাবল সেঞ্চুরিটাও হাতের নাগালেই দেখছিলেন ওয়ার্নার। কিন্তু দলীয় ২৭৪ রানে শাপুর জাদরানের বলে মোহাম্মদ নবীর হাতে ক্যাচ দেন তিনি। ১৩৩ বলে খেলা ১৭৮ রানের ইনিংসে ১৯টি চার ও ৫টি ছয় হাঁকান ওয়ার্নার। এই ইনিংসের ফলে তিনি হয়ে যান বিশ্বকাপে অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ রানের ইনিংসের মালিক। এর আগে যে রেকর্ড ছিল ম্যাথু হেইডেনের দখলে। ২০০৭ বিশ্বকাপে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে তিনি ১৫৮ রান করেছিলেন।
পাঁচ রানের জন্য চতুর্থ ওয়ানডে সেঞ্চুরি মিস করেছেন স্মিথ। তিনিও শাপুরের শিকার হন। ৯৮ বলে ৯৫ রান (৮ চার, ১ ছয়) করেন স্মিথ। ওয়ার্নার-স্মিথদের তৈরি করা ভিতে দাঁড়িয়ে অস্ট্রেলিয়াকে চারশো রানের স্কোর পাইয়ে দেন গ্লেন ম্যাক্সওয়েল। উইকেটে এসে শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক ব্যাটিং করেন তিনি। ২১ বলেই তুলে নেন ১১তম হাফ সেঞ্চুরি। তার ব্যাটিং ঝড় থামাতেই পারছিল না আফগানিস্তান। শেষ পর্যন্ত দৌলত জাদরানের স্লোয়ারে নবীর হাতে ক্যাচ দেন ম্যাক্সওয়েল। ৩৯ বলে ৮৮ রানের (৬ চার, ৭ ছয়) দৃষ্টিনন্দন ইনিংস খেলেন তিনি।
শেষ দিকে হ্যাডিন ৯ বলে অপরাজিত ২০ রান করেন। আফগানদের পক্ষে শাপুর ও দৌলত জাদরান ২টি করে উইকেট পান।