আজ পবিত্র আরাফার দিন

    0
    485

    আমার সিলেট  24 ডটকম,অক্টোবরআজ পবিত্র আরাফার দিন। সকল হাজী গণ আজ আরাফাত ময়দানে সমবেত হয়েছেন। আরাফা মক্কা হতে প্রায় ৯ মাইল পূর্ব দিকে অবস্থিত একটি পাহাড়ের নাম। একে জাবালে রহমত বা করুণার পাহাড়ও বলা হয়। এর সংলগ্ন  বিস্তর প্রান্তরটি আরাফা প্রান্তর নামে অভিহিত। পাহাড়টির  মাঝামাঝি আকারের এবং এক ধরনের  গ্রানাইট শিলা দ্বারা গঠিত। এর উচছতা ১৫০-২০০ ফুট। পূর্বদিকের প্রস্তরের সিঁড়ি শিখর পর্যন্ত লম্বালম্বি। ৬ষ্ট তম ধাপের উচছতায় একটি উন্নত মঞ্চ ও তাতে একটি মিম্বর ছিল।এই মিম্বরে দাঁড়িয়েই প্রতিবছর আরাফার দিনে ৯ই জিলহজ অপরাহ্নে ইমাম একটি খুতবা প্রদান করতেন।পূরবে শিখর দেশে উম্মে সালিমা নামক একটি গুম্বুজ যুক্ত ঘর ছিল।  মুহাম্মদ বিন আব্দুল ওয়াহাব নজদির অনুসারী “ওহাবীগণ” তা ভেঙ্গে ফেলেছেন এবং মিম্বরটিও নিশ্চিহ্ন করে ফেলেছেন। এখান হতে হজের খুতবা দেয়া হয় না।বর্তমানে  খুতবা দেয়া হয়”মসজিদে নামিরা” হতে।
    আরাফার ময়দান জাবালে রহমতের দক্ষিণ দিকে বিস্তৃত। এর পূর্ব প্রান্ত তায়েফের সুউচ্চ পর্বতমালায় ঘেরা। বছরে মাত্র একদিন (৯ই জিলহজ) হাজীগন হজের সর্বপ্রধান অনুষ্ঠান আরাফায় অবস্থান বা স্থিতির জন্য এই প্রান্তরে সমবেতন হন। তখন তাদের দেহে থাকে দুই প্রস্থ সেলাই বিহীন সাদা পোশাক, তাদের অসংখ্য তাঁবুর সারি এবং তাদের লক্ষ লক্ষ কণ্ঠ নিঃসৃত- লাব্বাইক (আমি তোমার দরবারে হাজির) ধ্বনি এক অভূতপূর্ব প্রাণ চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করে, মর্মস্পর্শী চেতনা জাগ্রত করে এবং এক অনির্বচনীয় দৃশ্যের অবতারণা করে। আরাফাতে স্থিতিকালে উল্লেখিত তারিখের (৯ই জিলহজ) মধ্যাহ্নের পর হতে সূর্যাস্তের পর পর্যন্ত থাকে। হাজী গন উচ্চৈঃস্বরে লাব্বাইক বলা, খুতবা শ্রবণ, যোহর এবং আসর নামায একত্রে আদায়করণ, আল্লাহর জিকির ও মহিমা ঘোষণা, ইহকাল ও পরকালের কল্যাণ প্রার্থনা, কোরআন তিলাওয়াত ইত্যাদি নেক আমলের ভিতর দিয়ে হাজীগন আরাফাতে স্থিতিকালটি অতিবাহিত করেন। আরাফার ময়দান নিয়ে বিভিন্ন ধরনের সুত্র রয়েছে নিম্নে দু একটি তুলে ধরলাম।
    হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ) এবং হযরত আলী (রাঃ) হতে বর্ণিত হয়েছে, হযরত ইব্রাহীম (আঃ) কে এই ময়দানের কথা বলা হয়েছিল। পরে তিনি এই প্রান্তরের বিভিন্ন নিদর্শনাদি দেখে তা চিনতে সক্ষম হয়েছিলেন। এ জন্য এর নামকরণ হয়েছে আরাফাত।

    কেউ কেউ বলেছেন, এর নামকরণ করা হয়েছে এর চারদিকের পরিবেশের অবস্থানুসারে। কারণ, এর সমগ্র পরিবেশ সুদূর বিস্তৃত, খোলা মেলা, প্রস্তর বিহীন, সমতল ভূমি সমন্বিত ও উন্মুক্ত।এই প্রান্তরটির নাম আরাফাত এই জন্য রাখা হয়েছে যে, এখানে এসে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের মুমিন মুসলমানগণ পরস্পর মিলিত ও পরিচিতি লাভ করেন এবং তাদের মধ্যে বিশ্ব ভ্রাতৃত্বের অবিচ্ছেদ্য সেতুবন্ধন রচিত হয়।