৮ ডিসেম্বর মৌলভীবাজার হানাদার মুক্ত দিবস

    0
    290

    “ব্যাংকার ও গণহত্যার স্থান সংরক্ষনের দাবী স্থানীয়দের”

    আলী হোসেন রাজন,মৌলভীবাজার জেলা প্রতিনিধি: আগামীকাল ৮ ডিসেম্বর, মৌলভীবাজার হানাদার মুক্ত দিবস। একাত্তর সালের এই দিনে মৌলভীবাজার পুরোপুরি হানাদারমুক্ত হয়। পাকাহানাদারদের পরাজিত করে মৌলভীবাজার শহর তথা জেলার সর্বত্র স্বাধীন বাংলাদেশের লাল সবুজ পতাকা উড়তে থাকে। এ জেলার একমাএ ব্যাংকার ও বধ্যভূমি, তালিকাভুক্ত গণকবরের স্থানগুলো সংস্কার ও সংরক্ষনের দাবী জানিয়েছেন এখানকার মুক্তিযোদ্ধা ও স্থানীয় বাসীন্দারা।
    ডিসেম্বর মাসের শুরু থেকেই মুক্তিবাহিনী ও মিত্রবাহিনীর যৌথ আক্রমণের মুখে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী পিছু হটতে শুরু করলে প্রতিদিনই বিজয়ের সম্ভাবনা উজ্জ্বল হতে থাকে। ২ ডিসেম্বর রাতে শমসেরনগর বিমানবন্দর ও চাতলাপুর বিওপিতে হানাদার বাহিনীর ওপর মুক্তিবাহিনী ও মিত্রবাহিনীর সম্মিলিত আক্রমণে পাক সেনারা টিকতে না পেরে মৌলভীবাজার শহরে ফিরে আসে।

    ৪ ডিসেম্বর মৌলভীবাজার শহরের নিকটবর্তী বড়টিলা নামক স্থানে হানাদার বাহিনীর সঙ্গে মিত্রবাহিনী ও মুক্তিবাহিনীর সম্মুখ যুদ্ধ হয়। এ যুদ্ধে মিত্রবাহিনীর ১২৭ সেনা শহীদ হন। পাঞ্জাব রেজিমেন্ট ৪নং হেড কোয়াটার এর ব্রিগেডিয়ার ইফতেখার রানার নেতৃত্বে মৌলভীবাজারের পিটিআই (প্রাইমারী টিচার্স ট্রেনিং) সেন্টারে গড়ে উঠে ব্রিগেড হেড কোয়ার্টার। এখানে নির্মীত ব্যাংকারে বিভিন্ন এলাকা থেকে মুক্তিযোদ্ধা ও নিরীহ মানুষ ও মহিলাদের ধরে এনে হত্যা, নির্যাতন চালানো হয়। যা আজও কালের স্বাক্ষী হয়ে আছে। তবে স্বাধীনতা যুদ্ধের এ জেলার একমাএ ব্যাংকার, বধ্যভূমি, গণহত্যার স্থান তালিকা, সংস্কার ও সংরক্ষনের এবং মুক্তিযোদ্ধের সঠিক ইতিহাস নতুন প্রজম্মকে জানানো উচিৎ বলে মনে করেন এ জেলার স্থানীয় বাসীন্দা ও মুক্তিযোদ্ধারা।
    ৪নং সেক্টরের অধীনে সেক্টর কমান্ডার পাকিস্তান সেনাবাহিনীর চৌকস মেজর সি আর দত্ত’র নেতৃতে মৌলভীবাজারে মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশ নিয়েছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধারা।৭ ডিসেম্বর হানাদার বাহিনী শেরপুরে অবস্থান নিলে মুক্তিবাহিনীও শেরপুরের দিকে অগ্রসর হলে পাক বাহিনী সেখান থেকেও পলায়ন করে সিলেটে চলে যায়। ফলে ৮ ডিসেম্বর মৌলভীবাজার পুরোপুরি মুক্ত হয় এবং আকাশে ওড়ে স্বাধীন বাংলার পতাকা। এরপর থেকেই মৌলভীবাজারের সর্বস্থরের মানুষ ৮ ডিসেম্বর হানাদার মুক্ত দিবস পালন করে আসছে।
    ৮ডিসেম্বর এ জেলা হানাদারমুক্ত দিবসের সঠিক ইতিহাস ও মুক্তিযোদ্ধাদের সঠিক তালিকা তৈরি করে নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরলে, যোদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা এবং মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সদস্যরা তাদের যথাযথ মর্যাদা পাবেন বলে আশা করেন মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের পরিবার।