৫ম দফা উপজেলা নির্বাচনেও মাঠে থাকছে সেনাবাহিনী

    0
    228

    আমারসিলেট24ডটকম,২৯মার্চঃ চতুর্থ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের ৫ম দফার নির্বাচনে সকল ধরনের প্রচার প্রচারণা আজ শনিবার মধ্যরাত থেকে বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। একই সঙ্গে নির্বাচনী এলাকায় সব ধরনের যান্ত্রিক যান চলাচলের উপরও নিয়ন্ত্রণ আরোপ করা হচ্ছে।

    ইসি সচিবালয়ের সহকারী সচিব আশফাকুর রহমান বাসস’কে বলেন, নির্বাচনের ৩২ ঘণ্টা আগে সব ধরনের প্রচার-প্রচারণা বন্ধ থাকবে। তা অব্যাহত থাকবে নির্বাচনের পর ৬৪ ঘণ্টা পর্যন্ত। কেউ আইন ভঙ্গ করলে কারাদণ্ড ও আর্থিক দণ্ডে দণ্ডিত হবেন। এমনকি প্রার্থিতাও বাতিল হতে পারে।
    এ ছাড়া নির্বাচনে শান্তিশৃংখলা বজায় রাখতে সংশ্লিষ্ট এলাকায় গতকাল মধ্যরাত থেকে স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে সেনাবাহিনী সদস্যরা মাঠে নেমেছে। তাদের সঙ্গে রয়েছে পর্যাপ্ত সংখ্যক র‌্যাব, বিজিবি, পুলিশ, এপিবিএন ও আনসার ব্যাটালিয়নের সদস্যরা। নির্বাচনের আগে দুইদিন, নির্বাচনের দিন এবং পরে দুইদিন মোট ৫ দিন সেনা সদস্যরা মাঠে থাকবে।
    চতুর্থ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের পঞ্চম দফার ভোটগ্রহণ হবে আগামী ৩১ মার্চ সোমবার। এ দফায় দেশের ৩৫ জেলার ৭৩ উপজেলায় ভোটগ্রহণ করা হবে। এসব উপজেলায় ভোটগ্রহণের জন্য নির্বাচন কমিশন (ইসি) ইতোমধ্যে সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে। এসব উপজেলায় নির্বাচনী কাজে ব্যবহারের সব মালামাল পাঠানোও সম্পন্ন করেছে কমিশন।
    নির্বাচনী এলাকায় ভোটগ্রহণ উপলক্ষে ৩১ মার্চ সাধারণ ছুটি ঘোষণা করেছে ইসি। সোমবার সকাল ৮টা থেকে শুরু হয়ে টানা বিকেল ৪টা পর্যন্ত ভোটগ্রহণ চলবে।
    নির্বাচন কমিশন পঞ্চম দফায় ঘোষিত তফসিলের ৭৪টি উপজেলা থেকে টাঙ্গাইল-৮ আসনে উপ-নির্বাচনের কারণে বাসাইল উপজেলা এবং হাইকোর্টের আদেশে ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলা নির্বাচন স্থগিত করে। এ ছাড়া তৃতীয় দফায় স্থগিত গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলা নির্বাচনের ভোটগ্রহণ এই দফার সাথে হওয়ার কারণে সোমবার ৭৩টি উপজেলাতে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
    এ নির্বাচনে প্রতি উপজেলায় এক প্লাটুন সেনাবাহিনী সদস্য এবং প্রতি উপজেলায় সেনাবাহিনীর একটি করে গাড়ি টহলে থাকবে। প্রতি প্লাটুনে ৩৪জন সেনাসদস্য থাকবে বলে কমিশন সূত্র জানায়। মোবাইল ফোর্স হিসেবে পর্যাপ্ত সংখ্যক র‌্যাব, বিজিবি, পুলিশ ও আনসার বাহিনীর সদস্য মোতায়েন থাকছে। এ ছাড়া প্রতিকেন্দ্রে একজন পুলিশ (অস্ত্রসহ), অঙ্গীভূত আনসার একজন (অস্ত্রসহ), অঙ্গীভূত আনসার ১০ জন (নারী-৪, পুরুষ-৬ জন) এবং আনসার একজন (লাঠিসহ) ও গ্রাম-পুলিশ একজন করে আইনশৃঙ্খলার দায়িত্বে থাকবেন।
    পার্বত্য এলাকা, দ্বীপাঞ্চল ও হাওর এলাকায় এ সংখ্যা শুধু পুলিশের ক্ষেত্রে দু’জন হবে। নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষার্থে ২৯২ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও ৭৩ জন বিচারিক ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ করা হয়েছে।
    ৭৩টি উপজেলায় মোট ১ হাজার ৬৩ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এর মধ্যে চেয়ারম্যান প্রার্থী রয়েছেন ৩৬৪ জন, ভাইস-চেয়ারম্যান প্রার্থী ৪২০ জন ও মহিলা ভাইস-চেয়ারম্যান প্রার্থী ২৭৯ জন।
    এ সব এলাকায় মোট ভোটার ১ কোটি ৪২ লাখ ৬০ হাজার ৬৬৩ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ৭১ লাখ ১৫ হাজার ৩৮০ জন, মহিলা ভোটার ৭১ লাখ ৪৫ হাজার ২৮৩ জন। ভোটকেন্দ্রের সংখ্যা ৫ হাজার ৭০৩টি, ভোটকক্ষ ৩৫ হাজার ৯৪১টি। প্রিজাইডিং অফিসার প্রতি ভোটকেন্দ্রে একজন করে ৫ হাজার ৭০৩ জন। সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার প্রতি ভোটকক্ষের জন্য একজন করে মোট ৩৫ হাজার ৯৪১ জন। পোলিং অফিসার ৭১ হাজার ৮৮২ জন ও ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা হিসেবে ১ লাখ ১৩ হাজার ৫২৬ জন দায়িত্ব পালন করবেন।
    দেশের ৪৮৭টি উপজেলার মধ্যে এর আগে গত প্রথম দফায় ১৯ ফেব্র“য়ারি ৯৭ উপজেলা, ২৭ ফেব্র“য়ারি দ্বিতীয় দফায় ১১৫ উপজেলা, ১৫ মার্চ তৃতীয় দফায় ৮১ উপজেলা এবং ২৩ মার্চ ৯২টি উপজেলায় ভোটগ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে। বাকি উপজেলাগুলোর নির্বাচনের তফসিলও শিগগিরই ঘোষণা করা হবে বলে নির্বাচন কমিশনার মো. শাহনেওয়াজ বাসস’কে বলেন।
    ৫ম দফায় যে ৭৩ উপজেলায় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে সেগুলো হলো- দিনাজপুর জেলার বিরল, পার্বতীপুর ও হাকিমপুর, নীলফামারী জেলার ডোমার, লালমনিরহাট জেলার কালীগঞ্জ, গাইবান্ধা জেলার ফুলছড়ি ও সুন্দরগঞ্জ। বগুড়া জেলার বগুড়া সদর, রাজশাহী জেলার পবা, সিরাজগঞ্জ জেলার বেলকুচি ও শাহজাদপুর।
    পাবনা সদর ও বেড়া, চূয়াডাঙ্গা জেলার আলমডাঙ্গা ও চূয়াডাঙ্গা সদর, সাতক্ষীরা জেলার সাতক্ষীরা সদর, দেবহাটা ও তালা, বরগুনা জেলার বামনা, পাথরঘাটা, বরগুনা সদর ও আমতলী, পটুয়াখালী জেলার দশমিনা ও কলাপাড়া, টাঙ্গাইল জেলার ঘাটাইল, মির্জাপুর, টাঙ্গাইল সদর ও গোপালপুর, জামালপুর জেলার মাদারগঞ্জ, ময়মনসিংহ জেলার গফরগাঁও, ত্রিশাল ও নান্দাইল।
    কিশোরগঞ্জ জেলার অষ্টগ্রাম ও পাকুন্দিয়া, মুন্সীগঞ্জ জেলার টংগীবাড়ী, সিরাজদিখান ও লৌহজং, গাজীপুর জেলার কালীগঞ্জ, নরসিংদী জেলার মনোহরদী, নরসিংদী সদর ও রায়পুরা, নারায়ণগঞ্জ জেলার সোনারগাঁও, রূপগঞ্জ ও আড়াইহাজার, রাজবাড়ী জেলার গোয়ালন্দ।
    সুনামগঞ্জ জেলার বিশ্বম্ভরপুর ও তাহিরপুর, সিলেট জেলার বিয়ানিবাজার, মৌলভীবাজার জেলার জুড়ী ও রাজনগর, হবিগঞ্জ জেলার বানিয়াচং, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার কসবা, আশুগঞ্জ ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর, কুমিল্লা জেলার মুরাদনগর ও চান্দিনা।
    ফেনী জেলার ছাগলনাইয়া, নোয়াখালী জেলার সুবর্ণচর ও হাতিয়া, লক্ষীপুর জেলার রামগতি, লক্ষ্মীপুর সদর, রামগঞ্জ ও রায়পুর, চট্টগ্রাম জেলার সন্দ্বীপ, কক্সবাজার জেলার কক্সবাজার সদর, টেকনাফ ও উখিয়া, খাগড়াছড়ি জেলার দিঘিনালা, রাঙ্গামাটি জেলার রাঙ্গামাটি সদর, লংগদু, রাজস্থলী ও বিলাইছড়ি এবং গাজীপুর জেলার শ্রীপুর উপজেলা।বাসস