১নং ফতেপুরের চেয়ারম্যানকে ষড়যন্ত্র করে ফাঁসানোর অভিযোগ

    0
    364

     

     

     

     

     

     

     

     

     

     

     

    আলী হোসেন রাজন,মৌলভীবাজারঃ মৌলভীবাজার জেলার রাজনগর উপজেলার ১নং ফতেপুর ইউনিয়নে সরকারী ত্রাণের চাল ওজনে কম দেয়ার ঘটনায় শোকজ করা হয়েছে চেয়ারম্যান নকুল চন্দ্র দাশ ও উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো: শাহেদুল ইসলামকে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রাজনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা প্রিয়াংকা পাল। এ ঘটনায় অভিযুক্ত চেয়ারম্যানের পক্ষেই অবস্থান নিয়েছেন ইউনিয়নবাসী । চাল চুরির অভিযোগের বিষয়টিকে ষড়যন্ত্র দাবি করে সাজানো ঘটনায় তাকে ফাঁসানো হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন গ্রামবাসী।

    একাধিক গ্রামবাসী ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যাক্ত করে বলেন এই চেয়ারম্যানের মত আমরা আর কোন চেয়ারম্যান পাইনি, গ্রামের উন্নয়নে তিনি অনেক কাজ করেছেন, যারা আগে ভাতা পেতনা তারা এখন ভাতা পাচ্ছে চেয়ারম্যানের কারনে। সরকারী ত্রাণের চাল ওজনে কম দেয়ার বিষয়টি জানতে চাইলে গ্রামবাসী বলেন এটি একটি নিছক দূর্ঘটনা, এই চেয়ারম্যানের মাধ্যমে গত বছর বণ্যা সহ ফতেপুর ইউনিয়নে নানা ক্রান্তিকালে সরকারী ত্রাণের চালসহ সরকারী বরাদ্দের অনেক কিছুই বিতরণ করা হয়েছে ,কখন এমন হয়নি, বরাবরই তিনি সুষ্ঠভাবে ইউনিয়ন পরিষদের সবকিছু বন্টন করেছেন, চাল ওজনে কম দেয়ার তার কোনো উদ্দেশ্য ছিল না। কোনো একটি মহল এটিকে কেন্দ্র করে তাকে ফাঁসানোর চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ করেন ইউনিয়নবাসী।

    অভিযোগের বিষয়টিকে ষড়যন্ত্র দাবি করে অভিযোগ করেছেন গ্রামবাসীরা

    এ বিষয়ে রাজনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা প্রিয়াংকা পাল বলেন – একজন সাংবাদিকের লিখিত অভিযোগের প্রেক্ষিতে আমি প্রাণীসম্পদ কর্মকর্তাকে প্রধান করে ৩ সদস্যবিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করি।

    উক্ত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনটি আমি ৯ মে মৌলীবাজার জেলা প্রশাসক বরাবর পাঠিয়েছি।

    তবে এ অভিযোগের পুরোটা সত্য ছিলনা বলে দাবি করেন উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শাহেদুল ইসলাম, তিনি বলেন – করোনা ভাইরাসের কারণে ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারের মধ্যে গত ২৪ এপ্রিল সকাল থেকে ৩৫০ জনের প্রত্যেককে ১০ কেজি চাল ও ২ কেজি করে আলু ইউপি অফিস থেকে বিতরণ করা হয়, ইউপি অফিস থেকে বেরিয়ে যাওয়া কয়েকজন উপকারভোগীর প্যাকেটে চাল ওজনে কম ছিল এমন অভিযোগ পাওয়ার পড় তিনি তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেন। প্রতিটি প্যাকেটের চাল তিনি নিজে ওজন করে দেখেন ১২টি প্যাকেটে ১০ কেজি চালের মধ্যে সর্বোচ্চ ৫০ গ্রাম থেকে ১০০ গ্রাম চাল ওজনে কম ছিল, চেয়ারম্যানের সাথে কথা বলে তিনি জানতে পাড়েন আগের দিন রাতের বেলা গ্রাম পুলিশের সদস্যরা চাল প্যাকেটিং করেছে। যেহেতু রাতের বেলা চাল মেপে পিকেটিং করা হয়েছে সামান্য ভুল হতে পাড়ে তবে সবগুলো প্যাকেটে চাল কম ছিলনা বলে তিনি দাবি করেন, এসময় তিনি বলেন করোনা ভাইরাসের এই সময়টাতে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে আমরা সরকারি কর্মকর্তরা সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ি রাতদিন কাজ করে যাচ্ছি, সাধারন জনগণকে সেবা দিচ্ছি, সামান্য চাল ওজনে কম দিয়ে আমাদের কি লাভ।

    অভিযোগের ব্যাপারে ১ নং ফতেপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নকুল চন্দ্র দাশ বলেন তার বিরুদ্ধে কোন উপকারভোগী কেউ অভিযোগ করেননি, এমনকি উপকারভোগীর কেউ তাকে গিয়ে বলেননি প্যাকেটে ত্রাণের চাল ওজনে কম ছিল। বিষয়টি তিনি একজন সাংবাদিকের কাছ থেকে জানতে পাড়েন, তাৎক্ষণিক তিনি এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেন। পড়ে জানতে পাড়েন ঐ সাংবাদিক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর তার বিরুদ্ধে ত্রাণের চাল ওজনে কম দেয়ার একটি ভিডিও ক্লিপ দেখিয়ে লিখিত অভিযোগ করেছেন। তিনি বলেন এ ভিডিওক্লিপে পরিষ্কার দেখা যাচ্ছে ঐ সাংবাদিক ইউপি অফিসের বাহিরে নিজে ত্রাণের চাল একটি মিটারে মেপে দেখছেন, ত্রাণের চাল ওজনে কমের বিষয়টিও ঐ সাংবাদিকই আমাকে জানিয়েছিলেন, তার কথা শুনে আমি নিজে চাল ওজন করে দেখি কিছু প্যাকেটে সামান্য চাল কম ছিল। এ বিষয়ে আমি ব্যবস্থা নিয়েছি। এসময় তিনি বলেন আমরা চেয়ারম্যানরা মাঠ পর্যায়ে কাজ করতে অনেক সমস্যায় পড়তে হয়,বিশেষ করে করোনার এ দূর্যোগের মুহূর্তে যেখানে মানুষ ঘড় থেকে বের হচ্ছেনা আমরা কাদেরকে দিয়ে ত্রাণের তিনশ-চারশ চাল প্যাকেট করব, তারপড়ও আমরা দিনরাত কষ্ট করে এসব চাল প্যাকেট করে মানুষের বাড়ি বাড়ি পৌচ্ছে দিচ্ছি। তিনি অভিযোগ করে বলেন এই সামান্য বিষয়কে কেন্দ্র করে গ্রামবাসী নয় একটি মহল নিজস্ব ফায়দার জন্য তাকে ফাঁসানোর চেষ্টা করছে।
    আর তদন্তের বিষয়ে জেলা প্রশাসক নাজিয়া শিরিন বলেন – অভিযোগের প্রেক্ষিতে প্রাথমিক তদন্তে তাদেরকে শোকজ করা হয়েছে, আইন অনুযায়ী ৩ কার্যদিবসের মধ্যে তাদের জবাবের পর পরবর্তী ব্যাবস্থা গ্রহন করা হবে।
    করোনা ভাইরাসের এই দু:সময়ে যেখানে অনেকের বিরুদ্ধে ত্রাণের চাল আত্বসাতের অভিযোগ রয়েছে তেমনি জীবনের ঝুঁকি নিয়ে অনেকে সুষ্ঠভাবে ত্রাণ বন্টনেরও নানা উদাহরন রয়েছে, তাই এ বিষয়ে চেয়ারম্যান নকুল চন্দ্র দাশকে জড়িয়ে যে মিথ্যা অভিযোগ করা হয়েছে হয়েছে তার তীব্র্র নিন্দা জানিয়ে ,সঠিক তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত বিষয়টি বের করার জন্য প্রশাসনকে অনুরোধ জানিয়েছেন ফতেপুর ইউনিয়নের গ্রামবাসী।