হাতের মেহেদী রং মুছার আগেই স্বামীকে হারিয়ে পাগলপ্রায় নববধু

    0
    236

    “নবীগঞ্জে সন্ত্রাসীদের হামলায় বড় ছেলে অন্ধ আর ছোট ছেলের লাশ দেখে নির্বাক পিতা ফারুক”

    আমারসিলেট টুয়েন্টিফোর ডটকম,২৮এপ্রিল,মতিউর রহমান মুন্নাঃ নবীগঞ্জ আইনগাঁও-নবীগঞ্জ সিএনজি ষ্ট্যান্ডের দখলকে কেন্দ্র করে গত শনিবার দুপুরে সংঘটিত ঘটনায় নোয়াপাড়া গ্রামের বাসিন্দা এবং সিএনজি ম্যানাজার ফারুক মিয়া’র বড় ছেলে হেলাল মিয়া (বিএ পরীক্ষার্থী) প্রতিপক্ষের আঘাতে ডান চোঁখ নষ্ট হয়ে গেছে। সে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিল। এদিকে রবিবার বিকালে সন্ত্রাসীদের হাতে ছোট ভাই বেলাল মিয়া খুন হওয়ার খবরে মেডিকেল কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়ে একদিনের জন্য গতকাল সোমবার লাশের সাথে সিলেট থেকে বাড়ি আসে। ওই দিন বিকালে জেকে হাইস্কুল মাঠে অনুষ্ঠিত বেলাল মিয়ার জানাযার নামাজে পিতা ফারুক মিয়ার কাঁেধ ভর করে উপস্থিত হলে এক হৃদয় বিদায়ক দৃশ্যে সৃষ্টি হয়। এক ছেলের লাশ, আরেক ছেলে চোঁখ হারানোর যন্ত্রনায় নির্বাক হয়ে পড়েন পিতা ফারুক মিয়া। অশ্রুসিক্ত হয়ে জনতার কাছে এই নির্মম ঘটনার বিচার দাবী করেন তিনি।

    এদিকে বিয়ের দেড় মাসের মাথায় হাতের মেহেদীর রং মুছার আগেই সন্ত্রাসীদের হাতে খুন হওয়া স্বামী বেলাল মিয়াকে হারিয়ে পাগল প্রায় বিধবা স্ত্রী রোমেনা বেগম (১৮)। ভালবেসে প্রায় দেড়মাস আগে বেলাল মিয়ার সাথে বিয়ে হয় নবীগঞ্জ উপজেলার দেবপাড়া ইউনিয়নের বৈঠাকাল গ্রামের রোমানা বেগমের। কে জানতো বিয়ের সাজ মুছে যাওয়ার আগেই ঘাতক সন্ত্রাসীদের নির্মম আঘাতে তার স্বামী ওপারে চলে যাবে। ঘটনার পর থেকেই শোকার্ত স্ত্রী রোমানা বেগম এর আহাজারিতে এলাকার বাতাস ভারি হয়ে উঠে। বার বার মুর্ছা যাচ্ছে স্বামীর মৃত্যুর খবর পেয়ে।

    গতকাল সোমবার লাল বেনারশি শাড়ীর বদলে স্ত্রী রোমানার পড়নে শুভা পাচ্ছে বিধবার সাদা শাড়ী। বিয়ের দেড় মাসের মাথায় এ দৃশ্য কোন সভ্য সমাজ বা জাতি কখনও কামনা করেনি। অশ্রুসিক্ত রোমানা বেগম এ প্রতিবেদককে জানায়, ঘটনার আধা ঘন্টা আগে তার স্বামী বেলাল মিয়া পরিবারের সদস্যদের নিয়ে ভাসুর হেলালকে দেখে সিলেট থেকে বাড়ি ফিরে।

    বিকালে গাড়ী ভাড়া এবং ভাইয়ের চিকিৎসার জন্য বিকাশে সিলেট টাকা পাঠানোর কথা বলে ঘর থেকে বের হয়। কিছুক্ষণের মধ্যেই খবর পেয়ে সন্ত্রাসীরা তার স্বামীর উপর অর্তকিত ভাবে হামলা চালিয়ে কুপিয়ে রক্তাক্ত জখম করে। খবর পেয়ে পাগলের মতো ছুটে যান হাসপাতালে। জ্ঞান শুন্য স্বামীর সাথে শেষ কথা টুকুও বলতে পারেনি রোমেনা। রোমানা বেগম তার স্বামীর খুনিদের গ্রেফতার পুর্বক ফাসিঁর দাবী জানিয়েছেন।