হাতিরঝিলের ‘বিষফোঁড়া’ খ্যাত বিজিএমইএ ভবন ভাঙ্গার কাজ শুরুর দাবিতে সমাবেশ

    0
    459

    বুধবার সকালে হাতিরঝিলের ‘বিষফোঁড়া’ খ্যাত বিজিএমইএ ভবনের সামনে বিভিন্ন পরিবেশবাদী সংগঠন সিটিজেনস রাইটস মুভমেন্ট, ইনিশিয়েটিভ ফর পিস (আইএফপি), পরিবেশসম্মত বাসযোগ্য ঢাকা বাস্তবায়ন পরিষদ এর যৌথ উদ্যোগে হাইকোর্টের রায় বাস্তবায়নের লক্ষ্যে কালবিলম্ব না করে এখনি হাতিরঝিলের বিষফোঁড়া উচ্চ আদালতের ভাষায় ক্যান্সার বিজিএমইএ ভবন ভাঙ্গার কাজ শুরুর দাবিতে নাগরিক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

    হাতিরঝিলের বিষফোঁড়া বিজিএমইএ ভবন ভাঙ্গার দাবি জানিয়েছে এসব বিভিন্ন পরিবেশবাদী সংগঠন।

    সমাবেশে ইনিশিয়েটিভ ফর পিস-এর প্রধান সমন্বয়ক মুহাম্মদ আরিফুর রহমানের সঞ্চালনায় মূল প্রবন্ধ পাঠ করেন সিটিজেন্স রাইট্স মুভমেন্টের মহাসচিব ও পরিবেশসম্মত বাসযোগ্য ঢাকা বাস্তবায়ন পরিষদের আহ্বায়ক তুসার রেহমান।

    নাগরিক সমাবেশে বক্তব্য রাখেন ইনিশিয়েটিভ ফর পিস-এর চেয়ারম্যান ও বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের এডভোকেট মুহাম্মদ শফিকুর রহমান, পিসে’র মহাসচিব ইফমা হুসাইন, বাপা’র যুগ্ম সম্পাদক মিহির বিশ্বাস, নিরাপদ ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ও সম্মিলিত জলাধার রক্ষা আন্দোলনের আহ্বায়ক ইবনুল সাইদ রানা, সম্মিলিত জলধার রক্ষা আন্দোলনের সদস্য সচিব ও সাংবাদিক মশিউর রহমান রুবেল, আইএফপি-এর সাধারণ স¤পাদক সোহানুর রহমান, সেবা’র নির্বাহী পরিচালক ডা. নুরুদ্দিন প্রমুখ।

    নাগরিক সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন পরিবেশসম্মত বাসযোগ্য ঢাকা বাস্তবায়ন পরিষদের সদস্য সচিব আলহাজ্ব মো. শহীদ।

    সমাবেশে লিখিত বক্তব্যে তুসার রেহমান দেশবাসী ও নাগরিক সমাজের যৌক্তিক দাবির প্রতি সম্মান দেখিয়ে বাংলাদেশ হাইকোর্ট হাতিরঝিলের কলঙ্ক বিজিএমইএ ভবনকে ক্যান্সার হিসেবে আখ্যায়িত করে ৯০ দিনের মধ্যে নিজ খরচে ভাঙ্গার আদেশ বহাল রেখে যে পূর্নাঙ্গ রায় প্রদান করায় ধন্যবাদ ও অভিনন্দন জানিয়েছেন।

    এসময় তিনি বলেন, সোনারগাঁও হোটেলের পাশে বেগুনবাড়ি খালের ওপর ১৯৯৮ সালের ডিসেম্বরে বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুত ও রপ্তানিকারক সমিতি-বিজিএমইএ’র ১৫তলা ভবনের ভিত্তিপ্রস্থর স্থাপন করেছিলেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ২০০৬ সালের অক্টোবরে এই অবৈধ ভবনটি উদ্বোধন করেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া।

    তিনি আরও বলেন, হাইকোর্ট তার চূড়ান্ত রায়ে ভবনটিকে অবৈধ ঘোষণা এবং বিজিএমইএ কর্তৃপক্ষের নিজ খরচে এটি অপসারণের নির্দেশের মাধ্যমে বাংলাদেশের উচ্চ আদালতের মৌলিক ভূমিকা ও জনগণের ইচ্ছাশক্তি আজ যে-কোনো অশুভ শক্তি প্রতিরোধে মহাশক্তিতে রূপান্তরিত হলো।

    সমাবেশে বক্তারা বলেন, রাজধানী ঢাকায় কলঙ্কের তিলক নামে খ্যাত অবৈধ স্থাপনা বিজিএমইএ ভবন ভাঙ্গার দাবি জানিয়ে সিটিজেনস রাইটস মুভমেন্ট, ইনিশিয়েটিভ ফর পিস  ও সম্মিলিত জলাধার রক্ষা আন্দোলনসহ বিভিন্ন পরিবেশবাদী সংগঠন দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করে আসছে।

    এরকারণ, ১. যেখানে ভবনটি নির্মিত হয়েছে সেই জমির নিবন্ধন ছিল না। ২. ভবন নির্মাণের আগে রাজউকের অনুমোদন নেওয়া হয়নি। ৩. জলাধার সংরক্ষণ আইন-২০০০ লঙ্ঘন করা হয়েছে। ৪. এই ভবন নির্মাণের ক্ষেত্রে নগর উন্নয়ন আইন-১৯৫৩ মানা হয়নি এবং ৫. ভবন নির্মাণ আইন-১৯৫২ সম্পূর্ণ অগ্রাহ্য করা হয়েছে। এসব বিবেচনায় নিয়েই উচ্চ আদালত অনেক আগেই ভবনটিকে অবৈধ ঘোষণা করে এটি ভেঙে ফেলার নির্দেশ দিয়েছিলেন ।

    নাগরিক সমাবেশে এডভোকেট মুহাম্মদ শফিকুর রহমান বলেন, বিজিএমইএ ভবন ছাড়াও বারিধারায় ৪০টিসহ রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে ৫৩টি ভবন রয়েছে, যেগুলো রাজউকের অনুমোদন ছাড়া নির্মিত হয়েছে বলে রাজউক অনেক আগেই জানিয়েছে। এসব অবৈধ ভবন উচ্ছেদে রাজউক শিগগির অভিযানে নামছে- এমন কথা রাজউকের মুখ থেকেই বেশ জোরে-শোনা গিয়েছিল। কিন্তু এ বিষয়ে রাজউক আদৌ কতোটা তৎপর এবং কেনই-বা এসব অবৈধ ভবনবিরোধী অভিযান দৃশ্যমান হচ্ছে না, তা আমাদের কাছে বোধগম্য নয়।

    নাগরিক সমাবেশে নিরাপদ ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ও সম্মিলিত জলাধার রক্ষা আন্দোলনের আহ্বায়ক ইবনুল সাইদ রানা বলেন, আমরা বিজিএমইএ ভবন ভাঙার পাশাপাশি রাজউক ঘোষিত ৫৩টি অবৈধ বহুতল ভবন অপসারণের কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য জোর দাবি জানাচ্ছি। সরকার এ ধরনের বৃহৎ অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করলে অন্যান্য ছোটো-বড় অবৈধ স্থাপনার মালিকরা ভয়ে কিংবা আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়ে নিজ উদ্যোগেই সেগুলো দ্রুত অপসারণ করবেন বলে আমাদের দৃঢ় বিশ্বাস।

    হাতিরঝিলের ‘বিষফোঁড়া’ খ্যাত বিজিএমইএ ভবন ভাঙ্গার কাজ শুরুর দাবিতে সমাবেশ
    হাতিরঝিলের ‘বিষফোঁড়া’ খ্যাত বিজিএমইএ ভবন ভাঙ্গার কাজ শুরুর দাবিতে সমাবেশ