হাকালুকি হাওরে জীববৈচিত্র সংরক্ষণে সফলতা

    1
    563

    মৌলভীবাজার, ২৪ এপ্রিল: হাকালুকি হাওরের জীববৈচিত্র যখন চরম হুমকির সম্মুখীন ঠিক তখনই তা সংরক্ষণে পরিবেশ অধিদপ্তরের হাতে নেয়া প্রকল্প সফলতা পেতে শুরু করেছে। হাওরের বিভিন্ন বিলের পারে বেড়ে উঠা জলজ বৃক্ষ মাছ, পাখি ও অন্যান্য বন্যপ্রাণীর আবাসস্থলে পরিণত হচ্ছে। জানা গেছে, হাকালুকি হাওর দেশের বৃহৎ একটি মিঠা পানির জলাভূমি। পশ্চিমে সিলেটের ভাটেরা পাহাড় ও পূর্বে মৌলভীবাজারের পাথারিয়া পাহাড় বেষ্টিত হাকালুকি সিলেট ও মৌলভীবাজার জেলার পাঁচটি উপজেলা নিয়ে বিস্তৃত। এ হাওরে ছোট বড় ২৩৮টি বিল রয়েছে। বর্ষাকালে ২৫ হাজার হেক্টর আয়তন বিশিষ্ট হাওরে পতিত হয়েছে ১০টি নদী। বিল ও নদীগুলো মাছ ও জীববৈচিত্রে সমৃদ্ধ ছিল। বিলের পার ধানের ভান্ডার হিসেবে পরিচিত। কিন্তু জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে হাওরের জীববৈচিত্র দারুনভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বিলুপ্ত হয় নানা প্রজাতির দেশীয় মাছ ও জলজ বৃক্ষ। ফলে মাছ, পাখিসহ নানা বন্যপ্রাণী আবাসস্থল হারায়। হাকালুকি হাওরের জীববৈচিত্র সংরক্ষণে পরিবেশ অধিদপ্তর সরকারের ক্লাইমেট ট্রাস্ট ফান্ড ও ইউএনডিপির অর্থায়নে প্রকল্প গ্রহণ করে। প্রকল্পের সহযোগী সংস্থা সিএনআরএসের মাঠ ব্যবস্থাপক আশরাফুল ইসলাম জানান ২৫ মাস মেয়াদের এ প্রকল্পের কাজ শুরু হয় ২০১১ সালের ১৪ মে। হাওর বেষ্টিত পাঁচটি উপজেলার ১১টি স্পটে প্রাকৃতিকভাবে গজে উঠা জলজ বৃক্ষ সংরক্ষণ করায় গড়ে ওঠা হিজল, করচ, পিচাশ, তুলসি বনে পাখিসহ বন্যপ্রাণীর অভয়ারণ্যে পরিণত হয়েছে। জলজ উদ্ভিদ একেবারে বিলিন হওয়া বাইয়া, পোয়ালা ও বেলুয়া বিলের কান্দিকে হিজল করচ বনায়ন করা হয়েছে। সরেজমিনে হাকালুকি হাওরের জল¬া, বালিজুরি, কানলি, পোয়ালা বিলের কান্দি ঘুরে দেখা গেছে প্রাকৃতিক জলজ বৃক্ষে পাখ পাখালি কলকালি করছে। ঘন জঙ্গলে কীট পতঙ্গের সঙ্গে মৌমাছি মধু আহরণ করছে। সিএনআরএসের মাঠ কর্মকর্তা মাহমুদুল হাসান জানান, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব সম্পর্কে স্থানীয় জনগণকে সচেতন করে তুলায় এখন আর কেউ গাছ গাছালি নষ্ট করে না। ফলে জীব বৈচিত্র সংরক্ষণ কাজে সফলতা আসছে।