হাওরপাড়ে গবাদি পশুর খাদ্যের সংকট চরমে

    0
    264

    আমার সিলেট টুয়েন্টিফোর ডটকম,১৬জুলাই,আশরাফ আলী,মৌলভীবাজার: দফায় দফায় বন্যায় হাওরপাড়ে গবাদি পশুর খাদ্যের সংকট চরমে। প্রথম দফা বন্যায় তলিয়ে গিয়েছিল বোরো ধান। আর এখন তলিয়ে গেছে বসত ঘর। ৩য় দফা বন্যায় খাদ্য আর বাসস্থান হারিয়ে মানুষের মতো চরম অসহায় গবাদি পশুগুলোও।

    এ বছর চরম গো খাদ্য সংকটে পড়েছেন হাওর পাড়ের কৃষক। গেল ক’দিন থেকে এ সংকট তীব্র হচ্ছে। হাওর তীরের কৃষক গৃহপালিত পশু নিয়ে পড়েছেন বিপাকে।

    বোরো ধান আর মাছ হারিয়ে যেমন তাদের নিজেদের খাদ্য নেই। তেমনি উপোস থাকছে তাদের গরু, ছাগল, মহিষ, হাঁস ও মোরগ। কুলাউড়া, বড়লেখা, জুড়ী, রাজনগর ও সদর উপজেলায় দেখা দিয়েছে গো-খাদ্যের চরম সংকট। যার কারণে কৃষক বাধ্য হয়ে বিক্রি করছেন তাদের গৃহপালিত গরু, মহিষ ও ছাগল।
    তবে জেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয় ও স্থানীয় ক্ষতিগ্রস্থ কৃষক সূত্রে জানা যায় চলমান বন্যায় এমন খাদ্য সংকটে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় থেকে এখন পর্যন্ত মেলেনি কোনো বরাদ্দ। গো খাদ্য সংকট আর অভাবের তাড়নায় নিজেদের সংসার চালাতে এখন লোকসান দিয়েই বিক্রি করছেন গবাদী পশু। শেষ সম্বল এই গৃহপালিত পশুগুলো বিক্রি করে বন্যা পরবর্তী ক্ষেতের জমি চাষ নিয়ে তাদের দুশ্চিন্তার শেষ নেই। হাকালুকি হাওর পারের জাঙ্গিরাই, শিমুলতলা, বাছিরপুর, বেলাগাঁও, শাহ‌পুর, সাদিপুর, মিরশংকর, মদনগৌরী, খাগটেকা, কালনিগড়, খালের মুখ, বনগাঁও, চালবন, হরিরামপুর, উত্তর ভবানীপুর, গ্রামগুলোতে দেখা গেল এমন দৃশ্য।
    প্রতিটি গ্রামে পানি বন্দি মানুষ ও গবাদি পশুর বসতঘর। দেখা যায় অনেকেই ডিঙ্গি নৌকা দিয়ে পদ্ম ও শালুক পাতা সংগ্রহ করছেন। বন্যার পানির কারণে মানুষের মত গবাদিপশু গুলোও বন্দিদশায়। বাড়ি থেকে বের করা যাচ্ছে না। গোয়াল ঘরেও পানি। তাই পদ্ম আর শালুক পাতা খেয়ে যেমন ওরা বেঁচে আছে। কৃষকরা নানা কষ্টে ওগুলো সংগ্রহ করেন। অনেকেই জানালেন প্রতিদিন ৩-৪ ঘণ্টা নৌকায় ঘুরে ওই পাতা সংগ্রহ করেন তারা।
    একজন কৃষক বলেন আমার ২০ একর জমি ছিল। জমির সব ধান তলিয়ে গেছে। ধান তুলতে না পারায় কোনো খড় পাননি। তার ১০ টি গরু। এখন চারদিকে পানি থাকায় এই গরু নিয়ে বিপাকে পড়েছেন তিনি। নিজে খাইতে পারছি না আর গবাদিপশুর খাদ্য কিনব কিভাবে। ওদের আর না খাইয়ে রাখতে চাই না। এজন্য লোকসান দিয়েই বিক্রি করছেন গবাদিপশু। পোষা প্রাণিগুলোর এমন কষ্ট সহ্য হয় না তাই বিক্রি করে দিচ্ছেন। অন্য মালিকের ঘরে গিয়ে যাতে তারা শান্তিতে থাকে। আবার অনেকেই গবাদিপশু আত্মীয়-স্বজনের বাড়িতে পাঠিয়েছেন আপৎকালীন সময়ের জন্য।