হবিগনজ এলাকায় বড় বড় শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠলেও

    0
    309

    স্থানীয় শিক্ষিত লোকজনকে ভাল পদে নিয়োগ না দেয়ার অভিযোগ

    আমারসিলেট টুয়েন্টিফোর ডটকম,১১অক্টোবর: হবিগন্জ জেলায় প্রতিনিয়ত গড়ে উঠছে শিল্প কারখানা। স্থানীয়রা স্থানীয় অধিকার পাচ্ছে না বলে অহরহ অভিযোগ । হবিগনজ এলাকায় বড় বড় শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠলেও স্থানীয় শিক্ষিত লোকজনকে ভাল পদে নিয়োগ দেয়া হচ্ছেনা বলে অভিযোগ উঠেছে। এ বিষয়ে শিক্ষিত যুবদের মাঝে চরম ক্ষোভ, হতাশা ও উত্তেজনা বিরাজ করছে। এখানকার ভূ-প্রকৃতিগত সুযোগ সুবিধা আর কমমূল্যে ভূমি ক্রয় করে হবিগঞ্জ জেলার মাধবপুর ও জেলা সদরের কিছু এলাকায় গড়ে উঠছে দেশ বিখ্যাত নামীদামি শিল্প কারখানা। শিল্পনগরী গড়ে তোলার জন্য যারা ছিলেন মূল উদ্যোগতা তারা বর্তমানে অনেকটা কোণঠাসা বলেও জানা যায়।
    অভিজ্ঞ মহলের মতে, সরকারী নিয়ম অনুযায়ী স্থানীয় শিক্ষিত যুবদের একটা অংশকে এখানে গড়ে উঠা শিল্প কারখানায় বিভিন্ন ভাল পদে নিয়োগ দেয়ার নিয়ম থাকলেও শিল্প মালিকরা বা কর্তৃপক্ষ তাদের পাত্তাই দিচ্ছেন না। তারা এখানকার প্রকৃতিগত সুন্দর পরিবেশ আর স্বল্প বেতনে কিছু অশিক্ষিত ও নিরীহ মানুষদের দিয়ে কাজ করাচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠছে। যার ফলে স্থানীয় শিক্ষিত সচেতন তরুণ-যুবদের মাছে হতাশা ও ক্ষোভ বাড়ছে। এই ক্ষোভ হয়তো একসময় বিক্ষোভে পরিণত হতে পারে।

    সরেজমিনে বিভিন্ন গ্রাম এলাকার যুবদের মনের এই ক্ষোভ সম্পর্কে জানতে চাওয়া হলে অনেকেই বলছেন যে, আমাদের বাড়ির পাশে দেশের নামীদামি শিল্প কারখানা যেমন নাহিদ ফাহিম স্পিনিং, প্রাণ, এস. এম. স্পিনিং, স্কয়ার, মার লিঃ, স্টার সিরামিকসহ অনেক কোম্পানি গড়ে উঠলেও এলাকার শিক্ষিত যুব-তরুণদের কাজ করার সুযোগ দেয়া হচ্ছে না। বলা হচ্ছে সাবাই নাকি অদক্ষ! তবে কথা হচ্ছে কাজ করার সুযোগ না পেলে দক্ষ হবে কীভাবে? এলাকার লোক যদিও নিয়োগ দেয়া হয় কিন্তু দেখা যায় শতকরা ৯৫ভাগেই অশিক্ষিত-আর অদক্ষ।

    শিল্প কারখানার মালিক বা কর্তৃপক্ষ অত্যন্ত ধূর্ত প্রকৃতির বিধায় এখানকার নিরীহ ওই লোকদের নিম্ন পদে নিয়োগ দিয়ে কম বেতন দিয়ে সহজেই ঠকাতে পারছে। শিক্ষিত যুবদের নিয়োগ দিলে তারা হয়তো দেশের অন্যান্য শিল্প কারখানায় কাজ করে অন্যরা যে বেতন-ভাতা পান তা যাচাই করে প্রতিবাদী হয়ে উঠতে পারে। সম্ভবত: ওই চিন্তা মাথায় রেখেই স্থানীয় শিক্ষিত যুবদের নিয়োগ দেয়া হচ্ছে না। তবে এব্যাপারে আন্দোলন গড়ে তোলার লক্ষ্যে স্থানীয় যুবদের মধ্যে আলাপ-আলোচনা চলছে বলে জানা যায়।
    এব্যাপারে এলাকার জনপ্রতিনিধিরা বিশেষ করে স্থানীয় মেম্বার ও চেয়ারম্যানরা কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলতে নারাজ। কারণ এতবড় নামীদামী শিল্প-কোম্পানি মালিকদের সাথে এলাকার দ্ররিদ্র জনগণের পক্ষে কথা বললে যদি কোন ধরণের মিথ্যা মামলা জড়ানো হয়! এটা ভেবেই তারা এলাকার জনগণের পক্ষে কথা বলতে চান না। অবশ্য অধিকার কেউ কাউকে দিয়ে দেয় না-আদায় করে নিতে হয় বলে অনেকেই বলছেন।
    সরেজমিনে মাধবপুর ও হবিগঞ্জ সদর উপজেলার বিশেষ করে বাঘাসুরা, অলিপুর, শাহপুর, নোয়াপাড়া, জগদীশপুর, ছাতিয়াইনসহ অন্যান্য গ্রাম-এলাকার লোকজনদের সাথে যোগাযোগ করা হলে তারা বলেন যে, বাপ-দাদার জমি বিক্রি করে দিতেছি, এলাকার উন্নয়ন হওয়ার জন্য, ছেলেপেলেদের চাকরি-বাকরি হবে জেনে।

    কিন্তু এখন যদি এলাকার ছেলে-মেয়েদেরকে অদক্ষ বলে চাকুরী না দেয়া হয়, তাহলে যুব সমাজ আন্দোলন গড়ে তুললে আমাদের সহযোগিতা অবশ্যই থাকবে। কেননা আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মরা কি বেকার হয়ে এখানে চুরি ডাকাতি করবে? অথবা প্রভাবশালী শিল্প মালিকদের করুণার পাত্র হিসেবে কোম্পানিতে নিম্ন বেতনে শুধু শ্রমিকের কাজ করবে? তাই বিষয়টি এলাকার কর্ণধার, সরকারী কর্তৃপক্ষ তথা জনপ্রতিনিধিদের নজরে নিতে এলাকাবাসীর দাবী। সুত্রঃ বিডিডটনেট