হবিগঞ্জে ভূমিরক্ষা আন্দোলনঃপরিকল্পিত বলে দাবী অনেকের

    0
    241

    আমারসিলেট টুয়েন্টিফোর ডটকম,২৬ডিসেম্বর,এম এ কাদেরঃ হবিগঞ্জ জেলার কয়েকটি চা বাগানের লিজ নেয়া জমিতে সরকার একটি বিশেষ অর্থনৈতিক জোন করার পরিকল্পনার প্রতিবাদে “ভূমিরক্ষা আন্দোলন” শুরু করেছেন ১৬ হাজার শ্রমিক।

    ২০ ডিসেম্বর হবিগঞ্জ সদরে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করে জেলা প্রশাসকের কাছে স্মারকলিপি দিয়ে আন্দোলনরত শ্রমিকরা বলেছেন, “৭ দিনের মধ্যে তাদের দাবি মেনে না নিলে তারা কঠোর কর্মসূচি দিতে বাধ্য হবেন।”স্থানীয়দের কৃষিকাজে ব্যবহৃত ওই জমিতে শিল্পাঞ্চল গড়ে তোলার পরিকল্পনার কথা জানতে পেরে বিভিন্ন ধরনের কর্মসূচির মধ্য দিয়ে জনমত গড়ে তোলার চেষ্টা শুরু করেন ‘ডানকান ব্রাদার্স’ এর ওই চা বাগানের শ্রমিকরা। এই আন্দোলনের অংশ হিসেবে গত ১ ডিসেম্বর গঠিত হয় “ভূমিরক্ষা কমিটি” নামে একটি সংগঠন। অপরদিকে গত ১২ ডিসেম্বর ওই জমিতে খুঁটি গেড়ে শিল্পাঞ্চলের জন্য “দখল নেয়া”র কথা জানানো হয় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার পক্ষ থেকে।
    এই প্রেক্ষাপটে চাঁন্দপুর বাগান ও চাঁন্দপুর ফাঁড়ির অন্তর্ভুক্ত বেগমখান, জোয়ালভাঙা ও রামগঙ্গা চা বাগানের শ্রমিকেরা ১৩ ডিসেম্বর সকাল থেকে ওই জমিতে অবস্থান নেন, শুরু হয় কর্মবিরতি।

    ওই এলাকার “লস্করপুর ভ্যালির” ২৩টি চা বাগানের শ্রমিকরা ১৯ ডিসেম্বর কর্মবিরতিতে যোগ দেন। পরদিন হবিগঞ্জ সদরে হয় বিক্ষোভ মিছিল, সমাবেশ।

    আন্দোলন কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক কাঞ্চন পাত্র বলেন, “আমাদের মূল দাবি, এই জমি নেয়ার সিদ্ধান্ত বাতিল করতে হবে। দীর্ঘদিন ধরে আমরা এই জমি ভোগ করে আসছি। তাই বসতবাড়িসহ এই ক্ষেতল্যান্ড আমাদের নামে রেজিস্ট্রি করে দিতে হবে।”

    গত কয়েকদিন আগে চা শ্রমিকদের অভিযোগের প্রেক্ষাপটে হবিগঞ্জের জেলা প্রশাসক সাবিনা আলম বলেছেন, “চা বাগান সংলগ্ন এসব জমি ‘পতিত জমি’ হিসেবেই পড়ে রয়েছে এবং ভূমি মন্ত্রণালয়ের অনুমতি সাপেক্ষে এই জমিগুলো বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চলকে বন্দোবস্ত দেয়া হয়েছে।”

    তিনি বলেন, “এখানে গ্যাস আছে, বিদ্যুৎ আছে। দেশী-বিদেশী কোম্পানিগুলো এখানে আসলে এলাকার উন্নয়ন ঘটবে। বিশেষ করে চা শ্রমিকদেরও একটি মুক্তির পথ তৈরি হবে।”

    ইকোনোমিক জোন হলে স্বয়ংক্রিয়ভাবেই চা শ্রমিকদের মজুরিও বৃদ্ধি পাবে বলে তিনি মন্তব্য করেন।

    চা শ্রমিকদের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা চলছে এবং একটি তালিকা করে ক্ষতিগ্রস্ত শ্রমিকদের ক্ষতিপূরণও দেয়া হবে জানাচ্ছেন হবিঞ্জের জেলা প্রশাসক।

    তবে ক্ষতিপূরণের বিষয়ে শ্রমিকদের সঙ্গে কোনো  আলোচনা করা হয়নি বলে দাবি করছেন চা শ্রমিক নেতা মি. কৈরী। তিনি বলছেন, “এর আগেও চা বাগানের জমি নিয়ে শ্রমিকদের নানা সুবিধা দেয়ার কথা বলা হলেও সেগুলো বাস্তবায়ন হয়নি।”

    কৈরী বলছেন, চা শ্রমিকদের আন্দোলনের সঙ্গে চা বাগানের মালিকদের সম্পর্ক নেই। তিনি বলছেন, তারা শুনেছেন যে মালিকেরাও জমি না নেয়ার পক্ষে তাদের মতামত দিচ্ছেন।

    নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক জন বলেন, বাগান শ্রমিকদেরকে ব্যবহার করে একটি বিশেষ মহল উন্নয়ন কাজে পরিকল্পিতভাবে বাঁধা তৈরি করছে।