স্যার আমাকে জোর করে বিয়ে দিচ্ছে-কোম্পানীগঞ্জের কিশোরী

    0
    278

    কোম্পানীগঞ্জ থেকে সংবাদ দাতাঃ  ‘স্যার আমার অমতে আমার পরিবার আমাকে জোর করে বিয়ে দিচ্ছে বলে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার অনেক পরিচিত মানুষদেরকে ফোন করে বলছে। আমি আরো পড়ালখো করতে চাই।’ এভাবেইে কোম্পানীগঞ্জ উপজলোর বিভিন্ন মানুষকে ফোন দিয়ে বলছে “বাল্য বিয়ে থেকে আমাকে রক্ষা করতে প্রশাসনকে খবর দেন”
    আগামী ১ নভম্বের শুক্রবার বিবাহের দিন তারিখ নির্ধারন করেছেন পরবিার। ঐ ছাত্রী ফোন করে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা ইউএনও ও ওসির নাম্বার খোজতেছে। ওই ছাত্রী ফোন দিয়ে আমাকে আমার মার কাছ থেকে রক্ষা করুন, আমার মা আমাকে কম বয়সে বিয়ে দিচ্ছে যৌতুকের লাভে কোম্পানীগঞ্জ উপজলা নির্বাহী অফিসার ও ওসি স্যারসহ কোম্পানীগঞ্জ উপজলার সকল প্রশাসনের কর্মকর্তার প্রতি জোর দাবী জানাচ্ছে মেয়েটি এই বিয়ে বন্ধ করার জন্য।
    কোম্পানীগঞ্জ উপজলো পরষিদের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব শামীম আহমদ সূত্রে জানা যায়, বুধবার রাত অনুমান ১০ ঘটিকায় আমার মোবাইলে একটি মেয়ে কল করে বলে, ‘স্যার আমার অমতে আমার পরিবার আমাকে জোর করে বিয়ে দিচ্ছে”। আমাকে এই বিয়ে থেকে রক্ষা করুন।
    তখন চেয়ারম্যান শামীম আহমদ মেয়েকে বলেন, ‘তোমার বয়স কত।’ মেয়েটি উত্তরে বলে, ‘জন্ম সনদ অনুযায়ী ১৫ বছর। আমি ছাতক জালালিয়া কামিল মাদ্রাসা থেকে এবার এসএসসি পরীক্ষা দিয়েছি। আমি আরো পড়ালখো করতে চাই।’
    চেয়ারম্যান শামীম বলেন, ‘তোমার বাড়ি কোথায়?’ মেয়েটি বলে, ‘আমার বাড়ি কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার তেলিখাল ইউনিয়নের চাটিবহর গ্রামের মরহুম বতুমোল্লার ছেলে প্রবাসী ময়না মিয়া ও পারুল বেগমের মেয়ে মোছা: সুমি বেগম।
    এ ব্যাপারে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শামিম আহমদ বলেন, এই বাল্য বিবাহ বন্ধ করতে উপজেলা প্রশাসনসহ সকল মহলের সহযোগিতা কামনা করেন এবং যৌতুক লাভের আশায় মাকে থানায় এনে যৌতুক আইনে মামলা দেওয়ার জন্য উপজেলা প্রশাসনের প্রতি জোর দাবী জানান।
    এব্যাপারে কন্যার চাচা মোঃ আশিক মিয়া জানান, আমার বাড়ীর এই ভাতীজি খুবই মেধাবী, আমার জানা মতে কন্যার মাত্র ১৫-১৬ বৎসর বয়স, কিন্তু‘ বাবা প্রবাসে থাকে বিদায় ৫৫ বছর বয়সের বরের সাথে ৫ লক্ষ টাকার বিনিময়ে নিজ মেয়েকে জোর করে বিয়ে দিচ্ছে। এই বিয়ের বিষয়ে আমার কোন সম্পৃক্ততা নাই। আমি প্রশাসনের সহযোগিতা  চাই, এবং এই বাল্য বিবাহ বন্ধের জন্য সহযোগিতা চাচ্ছি।

    কোম্পানীগঞ্জ উপজলা আওয়ামীলীগরে সাধারণ সম্পাদক ও তেলিখাল ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আপ্তাব আলী কালা মিয়া জানান, আমাকে কে ফোন দিয়ে বলেছে যে নানাভাই আমাকে কম বয়সে বিয়ে দিচ্ছে আমার মা, আমাকে রক্ষা করুন। তাই আমি অত্র এলাকার কিছু মুরব্বীদের সাথে যোগাযোগ করে জানতে পারলাম যে, এই মেয়েটি খুবই মেধাবী ও জন্ম সনদ অনুযায়ী বয়স খুবই কম, কিন্তু মায় জোর পূর্বক ৫৫ বছরের বেটার সাথে বিয়ে দিচ্ছে বাড়ী বা এলাকার কেউ এই বিয়ের পক্ষে নায়। কিন্তু তাদের লজিং মাষ্টার ডাঃ মস্তফা এই বিয়ের মূল কারিগর বলে এলাকাবাসী জানান। এই মেয়ের মার সাথে এই মোস্তফা ডাক্তারের সম্পর্ক বেশি। তাই আমি উপজেলা প্রশাসন ও সাংবাদিক ভাইদের প্রতি জোর দাবী জানাচ্ছি এই ধরনের বাল্য বিবাহ বন্ধ করতে সহযোগিতা করুন।
    ছাতকের জালালিয়া দাখিল মাদ্রাসার সহকারী শিক্ষক মাওঃ মনির আহমদ জানান, আমাদের রেজিষ্টার খাতা অনুযায়ী এই মেধাবী ছাত্রী সুমি বেগমের খুবই কম বয়স মাত্র ১৫ বছর। কিন্তু আমরা জানতে পারি আমাদের অনেক ছাত্রীদের কাছ থেকে যে মা আর তাদের লজিং মাষ্টার ডাঃ মোস্তার নেতৃত্বে যৌতুকের লোভে এই কম বয়সে বিয়ে দিচ্ছে মা। আমরা এই বাল্য বিবাহ বন্ধের আহবান জানাচ্ছি।