স্ত্রীর যে কাজে সংসারের প্রতি স্বামীর মন ভেঙ্গে যায়

    0
    834

    দাম্পত্য জীবন মানে স্বামী স্ত্রীর সংসার।এই জীবনে শুধু ধৈর্য ও সহমর্মিতাই শান্তি ও উন্নতির চাবিকাটি।দুটি দেহের একটি রূপ হচ্ছে স্বামী-স্ত্রী যা ধর্মিয় আকদের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠা লাভ করে।আক্দ এমন একটি অর্থ বোধক শব্দ যা বিশ্লেষণ করলেই বিবাহের মর্ম কথা ফুটে উঠে সংক্ষেপে যাকে একে অপরের জন্য বেষ্টনী বা প্রাচীর বলা যায় অর্থাৎ যে কোন সংকট থেকে মুক্ত থাকতে এবং মুক্ত রাখতেই আকদের প্রয়োজনীয়তা।আসুন দেখি যে প্রধান কারণ গুলো একজন স্বামীকে তার ভালোবাসার সংসারের প্রতি ঘৃণা জন্ম দেয় আবার একই বিপরীত কার্যকলাপে স্ত্রীর ও মন ভেঙ্গে যেতে পারে।তবে সংসারে সুখ ধরে রাখতে স্ত্রীর ভূমিকা অনস্বীকার্য।আমরা আজ স্বামীর মন ভেঙ্গে যাওয়ার বিষয়ের প্রতি আলোকপাত করছি। স্ত্রীর যে কাজে সংসারের প্রতি স্বামীর মন ভেঙ্গে যায়

    স্বামীকে অবহেলা করলেঃ স্ত্রী যদি স্বামীকে অবহেলা করে তাহলে স্বামীর অন্তরে অনেক বড় আঘাত লাগে অর্থাৎ স্বামী কোন আদেশ করলে যদি স্ত্রী শুনেও না শোনার ভান করে বা বিনাকারনে কোন বাহানা করে অথবা একই সময়ে অন্যের আদেশ নিষেধ কে প্রাধান্য দেয় এতে স্বামীর অন্তর মারাক্তক আহত হয়।
    স্বামীকে ঘৃণা করা: পুরুষরা সাধারণত নারীদের প্রতি আবেগ দেখায় যা লক্ষনিয়,আর স্বামীরা অনেক সময় নিজের মুখের খাবার স্ত্রীদের মুখে আদর করে তুলে দেন ওই সময় যদি কোন স্ত্রী তার দেওয়া খাবার ঘৃণা করে তখন স্বামীর অন্তর আহত হয়, এছাড়া স্বামীর ব্যবহারের কাপর চোপর জিনিস পত্র নিয়েও যদি ঘৃণা প্রদর্শন করা হয় আর তা বেচারা স্বামীর নজরে আসে তখনই তার মন মারাক্তক আহত হয়।
    স্বামীকে পরপুরুষের সাথে তুলনা করে খোঁটাঃ
    স্বামীর সামনে পর পুরুষের সুনাম ও রোজী রোজগারের প্রশংসা করে থাকেন অনেক স্ত্রীরা। কোন কোন স্ত্রীরা বলে থাকেন দেখো সে কত ভালো,সে কত স্মার্ট,সে কত সুন্দর, সে কত ইনকাম করে, তার স্ত্রীকে কত দামের গহনা,মোবাইল এই দিয়েছে সেই দিয়েছে, সন্তানদের দামী স্কুলে পড়াচ্ছে। ভালো ভালো খাওয়াচ্ছে, তোমাকে বিয়ে করে আমার জীবনের স্বাদ আহ্লাদ সব শেষ করেছি।তোমার সঙ্গে ঘর সংসার করে আমি কোন শান্তি পাইলাম না। যা করলো আমার বাবা,মামা,উকিল অর্থাৎ বিয়ের আয়োজকদের গাল মন্দ করে খোটা, খোঁচা ইত্যাদিতে স্বামীর মন ভেঙ্গে যায় এবং স্বামী সংসারের হাল ছেড়ে দেয় এক সময় সব কিছু অনর্থক মনে করে।
    পর-পুরুষের সাথে অনৈতিক সম্পর্কঃ
    আত্বনির্ভরশীল ও ব্যাক্তিত্তের অধিকারী কোন স্বামী কখনও চান না যে তার স্ত্রী অন্য কোন পুরুষের সঙ্গে অনৈতিক সম্পর্ক রাখুক প্রতিদিন তার সঙ্গে ফোনে কথা বলুক, তাকে বাড়িতে ডেকে আতিথিয়তা করুক, তার সঙ্গে বসে আড্ডা মেরে হাসাহাসি করুক,একজন স্বামী সর্বদাই চাই তার স্ত্রী শুধুমাত্র তার সঙ্গেই সর্বদাই হাসাহাসি করবে আনন্দ ফুর্তি করবে কেবল তার সঙ্গেই একান্ত সময় কাটাবে। পর পুরুষের সঙ্গে কথা বলা হাসাহাসি করা ফোনে ব্যস্ত থাকা একজন স্বামী কখনোই পছন্দ করেন না। আর তা আড়ালে হয় তাহলে তো মোটেও না।
    স্বামীর আপনজনদের প্রতি অনীহাঃ কোন স্ত্রী যদি স্বামীর মা-বাবার সঙ্গে তর্কবিতর্ক করে, গালিগালাজ করে, তাদের আদেশ অমান্য করে,ভাই বোনদের অবহেলা করে কখনো কখনো স্বামীর স্বজনদের পাত্তা না দিয়ে শুধু বাবার বাড়ির আত্মীয়স্বজনদের খেয়াল রাখে এরূপ করলে স্বামী কষ্ট পাই যার পরিণামে ভয়াবহ পারিবারিক অশান্তির সৃষ্টি হয়।
    স্বামীর পছন্দের প্রতি অনাগ্রহঃ স্বামী যা পছন্দ করে তার অনাগ্রহ দেখানোও একজন স্ত্রীর জন্য স্বামীর প্রতি অসম্মান তা যদি হালাল হয়।হারাম খাবারের প্রতি কেবল ভালোবাসা আর কৌশল দিয়েই তা জয় করা সম্ভব হয় যদি স্বদিচ্ছা থাকে।
    পরিশেষে বলতে হয়, স্বামীকে খুশি রাখা একজন চরিত্রবান স্ত্রীর যেমন কর্তব্য সেই সাথে স্বামীকে ও লক্ষ্য রাখতে হবে স্ত্রীর যেন কোন বৈধ ও সম্ভাব্য অধিকার খর্ব না হয়। যে কোন কঠিন সময়ে স্ত্রীর পাশে থাকা একজন আদর্শ স্বামীর কর্তব্য ও দায়িত্ব। কেননা নারীরা মা বাবার আদর স্নেহে বড় হয়ে একটি সময় পরকে আপন করতে হয় আর সেই সময় ও পরিবেশ তার অনুকূলে না ও থাকতে পারে তখন কেবল একমাত্র স্বামীই পারে সেই মহা সংকটকালে বুদ্ধি সাহস বিবেচনা দিয়ে তাকে আগলে রেখে প্রতিকুল পরিবেশে প্রতিষ্ঠা করতে।প্রত্যেক স্বামীকে স্মরণ রাখতে হবে শ্বশুর বাড়ীর কোন ট্রেনিং পুর্বে দেওয়া হয়না সময়ের সাথে সাথে তা নারীরা রপ্ত করে নেই যদি অনুকূল পরিবেশ থাকে।যদিও আমার মতে প্রত্যেক কিশোর কিশোরীর পারিবারিক ও সামাজিক শৃঙ্খলা রক্ষা সংক্রান্ত ট্রেনিং মা বাবা বা নিজ নিজ ধর্মানুযায়ী অতি জরুরী।
    লেখক ও গবেষক, মুহাম্মদ আনিছুল ইসলাম আশরাফী, প্রধান সম্পাদক “আমার সিলেট টুয়েন্টি ফোর ডটকম”