সৌদি কূটনীতিকের বিরুদ্ধে ২ নেপালী নারীকে ধর্ষণের অভিযোগ

    0
    364

    আমারসিলেট টুয়েন্টিফোর ডটকম,১১সেপ্টেম্বরঃ দিল্লিতে এক সৌদি কূটনীতিকের বিরুদ্ধে দুই নেপালী নারীকে ধর্ষণের যে অভিযোগ উঠেছে – তার তদন্তের জন্য তার কূটনৈতিক সুরক্ষা তুলে নিতে সৌদি আরবের কাছে আহ্বান জানিয়েছে ভারত। এই সুরক্ষা থাকা অবস্থায় আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী পুলিশ কূটনীতিকের বিরুদ্ধে কিছুই করতে পারবে না।

    অভিযোগ উঠেছে যে সেই সৌদি কূটনীতিক দুই নেপালী নারীকে তার বাড়িতে বেশ কয়েকমাস বন্দী করে রেখে তাদের নিয়মিত ধর্ষণ ও অত্যাচার করেছেন। সৌদি দূতাবাস গোটা ঘটনাটিকেই অসত্য বলে দাবী করেছে। ওই কূটনীতিক এবং তার পরিবার এখন দিল্লির সৌদি দূতাবাসে কূটনৈতিক সুরক্ষার আড়ালে রয়েছেন।

    অভিযুক্ত সৌদি কূটনীতিক যাতে তদন্তে সহযোগিতা করেন, তার জন্য ভারত সৌদি দূতাবাসের কাছে আবেদন করেছে।

    বিদেশ মন্ত্রকের প্রধান প্রোটোকল অফিসার সৌদি রাষ্ট্রদূতকে ডেকে পাঠিয়ে আনুষ্ঠানিক ভাবে জানিয়েছেন যে যাতে ওই কূটনীতিকের সুরক্ষাকবচ সরিয়ে নিয়ে পুলিশের সঙ্গে সহযোগিতা করতে দেওয়া হয়। এই ব্যাপারে দিল্লির লাগোয়া গুরগাঁও শহরের পুলিশ যে অনুরোধ জানিয়েছিল বিদেশ মন্ত্রকের কাছে, সেটাও সৌদি রাষ্ট্রদূতের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র ভিকাশ সওয়ারুপ।

    ভারতের প্রাক্তন রাষ্ট্রদূত পিনাকরঞ্জন চক্রবর্তী বিবিসি বাংলাকে বলছিলেন, “বিদেশ মন্ত্রকের কাছে যে পুলিশী তদন্ত রিপোর্ট পৌঁছিয়েছে, তাতে সম্ভবত ঘটনার সত্যতা সম্বন্ধে মন্ত্রক অনেকটাই নিশ্চিত। সেজন্যই সৌদি রাষ্ট্রদূতকে ডেকে পাঠানো হয়েছিল।”

    ধর্ষণের মতো গুরুতর অভিযোগ ওঠার পরেও নিজেদের কূটনীতিককে সুরক্ষাকবচের আড়াল দেওয়াতে সৌদি দূতাবাসের সমালোচনা হচ্ছে ভারতে।

    সৌদি দূতাবাস গোটা ঘটনাটিকেই অসত্য বলে দাবী করার পাশাপাশি এই প্রশ্নও তুলেছে যে কূটনীতিক সুরক্ষাকবচের আড়ালে আছেন এমন এক ব্যক্তির বাড়িতে পুলিশ তল্লাশি চালাতে গেল কীভাবে।

    গুরগাঁও পুলিশ অবশ্য বলছে, তারা জানতো না যে ওই ব্যক্তি কূটনীতিক। ওই বাড়িতে দুই নারী আটক রয়েছেন, এমন খবর পাওয়ার পরেই তারা হানা দেয় ওই দুজনকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে আনে।

    আরেক প্রাক্তন রাষ্ট্রদূত দেব মূখার্জি বলছিলেন “যতই ভারতের বিদেশ মন্ত্রক সহযোগিতার অনুরোধ জানাক, ভিয়েনা কনভেনশন অনুযায়ী ওই সৌদি কূটনীতিক সুরক্ষাকবচের আড়ালে যতক্ষন আছেন, ততক্ষণ পুলিশ কিছুই করতে পারবে না।“

    কোনও দেশই সাধারনত নিজের কূটনীতিকদের ওপর থেকে সুরক্ষাকবচ সরিয়ে নেয় না। তাই এত বড় একটা অপরাধের হয়তো কোনও বিচারই হবে না। তবে কূটনীতিক রক্ষাকবচের আড়াল নিয়ে এধরণের অপরাধ নতুন নয়, অন্য দেশেও এমন ঘটনার নজির রয়েছে।

    সৌদি আরব দূতাবাস যদি ওই কূটনীতিকের ওপর থেকে সুরক্ষাকবচ সরিয়ে না নেয়, তাহলে ভারতের কাছে একটা পদক্ষেপ হতে পারে তাঁকে ‘অবাঞ্ছিত ব্যক্তি’ হিসাবে ঘোষণা করা – যার অর্থ ভারতে তিনি আর থাকতে পারবেন না। কিন্তু সেক্ষেত্রেও ভারতের পুলিশ তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ যেমন করতে পারবে না, তেমনই কোনও আদালতেও ধর্ষণ আর অত্যাচারের মতো অপরাধের বিচার হবে না।

    অন্যদিকে সৌদি আরবেও সম্ভবত ওই কূটনীতিকের বিচার হবে না, কারণ অপরাধটা সেদেশে সংঘটিতই হয় নি।বিবিসি