সৈয়দ মুহাম্মদ তৈয়্যব শাহ (রা.)’র ২৩তম ওরশ মুবারক

    0
    295

    চট্টগ্রাম ষোলশহরস্থ  জামেয়া ময়দানে বার্ষিক ওরশ মাহফিলে বক্তারা:হযরত তৈয়্যব শাহ (র.) শরীয়ত ও তরীকতের মহান দিকপাল

    আমারসিলেট টুয়েন্টিফোর ডটকম,০১অক্টোবর,মুহাম্মদ ফয়সাল শরীফ: আনজুমান-এ-রহমানিয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া ট্রাস্টের ব্যবস্থাপনায় ও গাউসিয়া কমিটি বাংলাদেশ’র সহযোগিতায় আওলাদে রাসুল (দ.) গাউসে জামান হযরতুলহাজ্ব আল্লামা শাহসূফি হাফেজ ক্বারী সৈয়দ মুহাম্মদ তৈয়্যব শাহ (রা.)’র ২৩ তম সালানা ওরশ মুবারক গতকাল বুধবার আনজুমান ট্রাস্ট এর সহ-সভাপতি আলহাজ্ব আবু মুহাম্মদ তবিবুল আলমের সভাপতিত্বে চট্টগ্রাম ষোলশহরস্থ জামেয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া আলিয়া মাদরাসা ময়দানে অনুষ্ঠিত হয়।

    ট্রাস্টের সেক্রেটারি জেনারেল আলহাজ্ব মুহাম্মদ আনোয়ার হোসেন স্বাগত বক্তব্যে বলেন, যুগশ্রেষ্ঠ আধ্যাত্মিক সাধক সিলসিলায়ে আলিয়া কাদেরিয়ার মহান মুর্শিদ দ্বীন মাযহাব-মিল্লাত ও ইসলামের সঠিক পথ ও মত আহলে সুন্নাত ওয়াল জমা’আতের প্রচার প্রসারে নবী-অলী প্রেমিকদের ইহ ও পরকালীন মুক্তির লক্ষ্যে যে সকল পদক্ষেপ গ্রহণ করেছিলেন তারই ভিত্তিতে আনজুমান ট্রাস্ট মসজিদ মাদ্রাসা খানকাহ সহ প্রকাশনা ও সাংগঠনিক অবকাঠামো (ধর্মীয়) প্রতিষ্ঠা ও খেদমত আনজাম দিয়ে যাচ্ছে। আনজুমান ট্রাস্টও এর একমাত্র অংগ সংগঠন গাউসিয়া কমিটি বাংলাদেশ এবং জামেয়াসহ আনজুমান প্রতিষ্ঠিত সকল প্রতিষ্ঠান সমূহ সম্পূর্ণ অরাজনৈতিক, উগ্র মৌলবাদ ও জঙ্গিবাদ বিরোধী।

    মাহফিলে সংসদ সদস্য আলহাজ্ব মুহাম্মদ মঈনুদ্দিন খান বাদল এমপি, দৈনিক আজাদী’র সম্পাদক আলহাজ্ব এম.এ. মালেক ও জমিয়তুল ফালাহ জাতীয় মসজিদের খতীব এবং ইসলামিক ফাউন্ডেশনের বোর্ড অব গভর্নরস এর গভর্নর আলহাজ্ব আল্লামা মুহাম্মদ জালাল উদ্দীন আলকাদেরী বক্তব্য রাখেন। মাহফিলে বক্তারা বলেন, আওলাদে রাসূল (দ.) গাউসে জামান শাহসূফি সৈয়্যদ মুহাম্মদ তৈয়্যব শাহ (রা.)’র কালজয়ী সিদ্ধান্ত সমূহ মুসলিম জাতিকে দ্বীন ইসলামের সঠিক পথ ও মত আহলে সুন্নাত ওয়াল জমা’আতের ভিত্তিকে সুদৃঢ় করতে এক ঐতিহাসিক ভূমিকা রেখে যাচ্ছে।

    হানাহানির এ বিশ্বে সৈয়্যদ মুহাম্মদ তৈয়্যব শাহ (র.)’র যুগান্তকারী সংস্কার সমূহ মুসলমানদের জন্য এক আলোকবর্তিকা হিসেবে প্রতিভাত হয়েছে। যিনি একাধারে মুজাদ্দিদে জামান ও মাতৃগর্ভের ওলী ছিলেন অপরদিকে দিকভ্রান্ত মুসলমানদের সঠিক আক্বিদা অনুসরণে উদ্বুদ্ধ করার লক্ষ্যে মাদ্রাসা, খানকাহ, মসজিদ প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। প্রিয় নবীর শান-মান বুলন্দ করার অভিপ্রায়ে প্রিয় নবীর শুভাগমনের ১২ রবিউল আউয়াল জশনে জুলুছে ঈদে-এ মিলাদুন্নবী (দ.) উদযাপনের জন্য ভক্ত অনুরক্ত সুন্নী জনতাকে নির্দেশ প্রদান করেন (১৯৭৪ খ্রী.)।

    ভ্রান্ত মতবাদী নবী বিদ্বেষীদের বক্তব্য ও লেখনীর বিরুদ্ধে নির্ভীক চিত্তে কোরআন-সুন্নাহর আলোকে বাতিলদের সমুচিত যৌক্তিক জবাব দেয়ার লক্ষ্যে এ মহান মুজাদ্দিদ ‘তরজুমান-এ আহলে সুন্নাত ওয়াল জমা’আত’ নামে একটি মাসিক ধর্মীয় পত্রিকা বের করার জন্য আনজুমান ট্রাস্ট কে নির্দেশ প্রদান করেন। দেশ বিদেশে একমাত্র সুন্নী জনতার মুখপাত্র হিসেবে ১৯৭৬ সাল হতে অদ্যাবধি জনপ্রিয় পত্রিকা হিসেবে আনজুমান ট্রাস্ট ব্যবস্থাপনায় মাসিক তরজুমান প্রকাশিত হয়ে আসছে। এর উদ্বোধনকালে হুজুর ক্বিবলা বলেছিলেন, “ইয়ে তরজুমান বাতিল কে লিয়ে মউত হ্যাঁয়”। বাস্তবে ইহার সঠিক প্রতিফলন হয়েছে।

    বাতিল পন্থীদের সকল ষড়যন্ত্র ও গোমরাহীর বিরুদ্ধে মোকাবেলা করে মুসলিম মিল্লাতের সঠিক পথ প্রদর্শক হিসেবে তরজুমানের পথচলা দুর্বার গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে। গাউসে পাক হযরত সৈয়্যদ আবদুল কাদের জিলানী (রা.) ভক্ত অনুরক্ত সুন্নী জনতাকে ঐক্যবদ্ধ করে দ্বীন মাযহাব মিল্লাতের খেদমত আনজাম দেয়ার লক্ষ্যে কাদেরিয়া তরীকার পতাকাতলে ঐক্যবদ্ধ হয়ে বাতিলদের মোকাবিলা করা ও আনজুমান ট্রাস্টের একমাত্র অংগ সংগঠন হিসেবে গাউসিয়া কমিটি বাংলাদেশ আনজুমানের যাবতীয় কার্যাদি মাঠে ময়দানে সম্পাদন করেন।

    উল্লেখ্য, এ সকল সাংগঠনিক ও  প্রাতিষ্ঠানিক কর্মকাণ্ড সম্পূর্ণ অরাজনৈতিকভাবে পরিচালিত হয়ে আসছে। আনজুমান-এ রহমানিয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া ট্রাস্ট একটি অরাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান। আনজুমান ট্রাস্ট ও এর একমাত্র অংগ সংগঠন গাউসিয়া কমিটি বাংলাদেশ এবং জামেয়া সহ আনজুমান ট্রাস্ট পরিচালিত মাদ্রাসা সমূহ সম্পূর্ণ  অরাজনৈতিক, উগ্র মৌলবাদ ও জঙ্গি বিরোধী। সৈয়্যদ মুহাম্মদ তৈয়্যব শাহ (রা.) শরীয়ত তরীক্বত এর মহান সিপাহশালার। লক্ষ লক্ষ পীর ভাই বোন তার হাতে রাইয়াত গ্রহণ করেছেন।

    সিলসিলায়ে আলিয়া কাদেরিয়ার বর্তমান সাজ্জাদানশীন পীর ছাহেব ক্বিবলা আওলাদে রাসূল (দ.) গাউসে জামান শাহসূফি সৈয়্যদ মুহাম্মদ তাহের শাহ মাদ্দাজিল্লুহুল আলী’র নেতৃত্বে আনজুমান ও সিলসিলার যাবতীয় কার্যক্রম পরিচালিত হয়ে আসছে। ধর্মপ্রাণ সকল মুসলিম মিল্লাত কে ভ্রান্ত মতবাদীদের খপ্পর থেকে উদ্ধার করে সঠিক ঈমান আক্বীদা রক্ষাকল্পে যে সকল যুগান্তকারী পদক্ষেপ ও কর্মসূচী গ্রহণ করেছে তা অদ্বিতীয় ও অলৌকিক। অতিথিদের ফুলের তোড়া দিয়ে অভ্যর্থনা জ্ঞাপন করে কার্যক্রমে আনজুমান-এ-রহমানিয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া ট্রাস্ট’র এডিশনাল সেক্রেটারী জেনারেল আলহাজ্ব মুহাম্মদ সামশুদ্দীন, প্রেস এন্ড পাবলিকেশন সেক্রেটারী প্রফেসর কাজী মুহাম্মদ সামশুর রহমান, গাউসিয়া কমিটি বাংলাদেশ’র কেন্দ্রীয় চেয়ারম্যান আলহাজ্ব পেয়ার মুহাম্মদ ও সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান আলহাজ্ব মুহাম্মদ আনোয়ারুল হক।

    আনজুমান ট্রাস্ট’র জয়েন্ট সেক্রেটারী জেনারেল আলহাজ্ব মুহাম্মদ সিরাজুল হক ও জামেয়ার আরবী প্রভাষক হাফেজ মুহাম্মদ আনিসুজ্জামান’র যৌথ সঞ্চালনে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন ছোবহানীয়া আলিয়া কামিল মাদরাসার অধ্যক্ষ আলহাজ্ব আল্লামা মুহাম্মদ হারুনুর রশীদ, মুফতি আল্লামা মুহাম্মদ আবদুল ওয়াজেদ, অধ্যাপক নূ.ক.ম আকবর হোসেন, আল্লামা এম.এ মান্নান, মুফতি আল্লামা মুহাম্মদ অছিয়র রহমান, আল্লামা মুহাম্মদ আশরাফুজ্জামান আলকাদেরী প্রমুখ। অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন আনজুমান ট্রাস্ট’র ফাইনেন্স সেক্রেটারি আলহাজ্ব মুহাম্মদ সিরাজুল হক, এসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি আলহাজ্ব মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দীন সাকের, জামেয়ার চেয়ারম্যান আলহাজ্ব মুহাম্মদ দিদারুল ইসলাম, সদস্য আলহাজ্ব মুহাম্মদ নুরুল আমিন, মুহাম্মদ কামাল উদ্দীন চৌধুরী, শেখ মুহাম্মদ নাসির, নুর মুহাম্মদ কন্ট্রাক্টর, মুহাম্মদ তসকির আহমদ, মুহাম্মদ আব্দুল হাই মাসুম, প্রফেসর মুহাম্মদ জসিম উদ্দীন, মুহাম্মদ কমরুদ্দীন সবুর, মুহাম্মদ আব্দুল মোনাফ সিকদার, গাউসিয়া কমিটি বাংলাদেশ’র কেন্দ্রীয় মহাসচিব শাহজাদ ইবনে দিদার, কেন্দ্রীয় যুগ্ম-মহাসচিব এড. মুহাম্মদ মোছাহেব উদ্দীন বখতেয়ার, অধ্যক্ষ মুহাম্মদ বদিউল আলম রিজভী, অধ্যক্ষ মুহাম্মদ রফিক আহমদ ওসমানি, অধ্যক্ষ মুহাম্মদ আবু তৈয়ব, অধ্যক্ষ ড. মুহাম্মদ সরওয়ার, প্রফেসর মুহাম্মদ কামাল উদ্দীন, মুহাম্মদ সাদেক হোসেন পাপ্পু, মীর মুহাম্মদ সেকান্দর হোসেন, মাওলানা মুহাম্মদ সালেকুর রহমান এবং সাবের আহমেদ।

    সালাত ও সালাম পরিচালনা করেন ক্বারী মুহাম্মদ মুহাম্মদ ইব্রাহিম। মিনায় শহীদ হাজীগণের মাগফেরাত ও বাংলাদেশ সহ বিশ্বের সকল মুসলিম রাষ্ট্রের ঐক্য সংহতি, সমৃদ্ধি ও আল্লাহর রহমত কামনা করে আখেরী মুনাজাত পরিচালনা করেন জামেয়ার শাইখূল হাদীস শেরে মিল্লাত মুফতি আলহাজ্ব আল্লামা মুহাম্মদ ওবাইদুল হক নঈমী মাদ্দাজিল্লুহুল আলী।