সুরমা নদীর ভাঙ্গনে বিলীন হচ্ছে লামাকাজী লালারগাঁও

    0
    386

     ঈদের পরেই লামাকাজীতে মানবব্ধন করা হবে

    আমারসিলেট টুয়েন্টিফোর ডটকম,২৩সেপ্টেম্বর: সিলেট সদর  উপজেলার বুক চিড়ে বয়ে যাওয়া সুরমা নদীর লাগামহীন ভাঙ্গনে বিলীন হচ্ছে লালারগাঁও গ্রামের বি¯তৃন জনপদ। বিরামহীন নদী ভাঙ্গনে বিনষ্ট হচ্ছে রাস্তাঘাট, স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা ,মসজিদ, খেয়াঘাট, ল ণঘাট, খেলার মাঠ, ফসলী জমি, বাজার, গাছপালা, বসতভিটা, কালভার্টসহ প্রভূতি।

    সিলেট এক আসনের অন্তর্ভূক্ত সদর উপজেলার মোগলগাঁও ইউনিয়নের প্রায় ২ কি.মি. এলাকার ভয়াবহ ভাঙ্গন বিগত ৩০ বছরেও কমেনি, বরং দিনের পর দিন বেড়েই চলেছে। বিশেষ করে বিগত বন্যায় অত্র এলাকায় ভাঙ্গনের চিত্র খুবই করুণ। পানি কমে যাবার সাথে সাথে নদীর ভাঙ্গন গ্রামের ১৬টি পরিবারকে নিঃস্ব করে দিয়েছে। বর্তমানে এসব পরিবার রাস্তার ধারে বসবাস করছে।  ইতিপূর্বে এ নদীর ভাঙ্গনে শতাধিক পরিবার গ্রাম ছাড়া হয়ে বর্তমানে যাযাবর জীবন কাটাচ্ছে।

    সিলেট- সুনামগঞ্জ সড়কের লামাকাজী এম এ খান সেতু সংলগ্ন এলাকায় সুরমা নদীর ভাঙ্গনের কবলে পড়ে অনেক অসহায় দরিদ্র পরিবার নিঃস্ব হচ্ছে। এখন থেকে নদী ভাঙ্গন রোধে ব্লকবাধঁ নির্মাণ করা না হলে পরবর্তীতে নদী ভাঙ্গন রোধ করা সম্ভব হবে না। বর্ষা মৌসূমে নদীর স্রোতের ঘূর্ণায়ন আর শূকনো মৌসূমে নদীর পানি কমে যাওয়ার ফলে নদী ভাঙ্গন আরো প্রকট আকার ধারণ করছে।

    গ্রামের প্রবীণ মুরব্বী আশক আলী জানান, লালারগাঁও গ্রামের নদী ভাঙ্গন রোধে এখন পর্যন্ত কার্যকর কোন প্রদক্ষেপ গ্রহণ করা হয় নি। তিনি এ ব্যাপারে মাননীয় অর্থমন্ত্রীসহ সংশ্লিষ্টদের সুদৃষ্টি কামনা করেন।

    লালারগাঁও গ্রামে সুরমা নদীর ভাঙ্গন স্থানীয় জনগণের অনিশ্চিত জীবনের দিকে নিয়ে যাচেছ। বিগত ৩০ বছরের ভাঙ্গন নিয়ে গ্রামবাসী আজ বেচেঁ থাকার স্বপ্ন দেখে বলে জানালেন গ্রামের অধিবাসী ফখর উদ্দিন।

    লালারগাঁও গ্রামের স্থায়ী বাসিন্দা ও ৪নং ওয়ার্ডের মেম্বার পদপ্রার্থী ব্যবসায়ী জুনেদ আহমদ জানান, এখানকার প্রায় কয়েক একর ফসলি জমির সুরমার অতল থলে হারিয়ে গেছে। দেখতে দেখতে নদীর তীরবর্তী অবশিষ্ট ফসলি জমির হারিয়ে যাচ্ছে। মাটির টুকরো পড়ার দৃশ্যটি দেখলে গা শিউরে উঠে। এখানকার জনসাধারনের যাতায়াতের একমাত্র মাধ্যম সুরমা ডাইক দিয়ে প্রতিদিন জীবনের ঝুকি নিয়ে চলাচল করছে বিপুল সংখ্যক মানুষ। এতে আবাল বৃদ্ধ বনিতা সহ জনসাধারনের চলাচলের ক্ষেত্রে সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। এখান কার ভাঙ্গন রোধ করতে কমপক্ষে ১শ মিটার অংশ ডাইকে ব্লক নির্মাণ অথবা পাথর ফেলা হলে সুফল পাওয়া যেতো। একই ভাবে অভিমত দিলেন তিনি আরো বলেন, সারা বছরই এখানকার মানুষ নদী ভাঙ্গনের হুমকির মুখে দিবারাত্রি যাপন করছেন।

    একই ভাবে লালারগাও প্রায় ২০-২৫টি বাড়ী ভাংতে শুরু করছে। এপর্যন্ত তাদের বাড়ীর আংশিক ও অসংখ্য গাছপালা সুরমা নদীতে বিলিন হয়েছে। এভাবে ভাঙ্গন অব্যাহত থাকলে কয়েকদিনের মধ্যে এ এলাকার গ্রামের অধিকাংশ বাড়ী ঘর বিলুপ্ত হওয়ার আশংকা করছেন এলাকাবাসী। এদিকে জরুরী ভিত্তিতে লালারগাঁও ২০-২৫টি বাড়ী গ্রামে সুরমা নদী ভাঙ্গন রোধে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে বর্তমান সিলেট-১ সদর আসনের মাননীয় সংসদ সদস্য অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত, সিলেট সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আশফাক আহমদসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি জোর দাবী জানিয়েছেন এলাকার সচেতন মহল। এমনকি এই এলাকাকে রক্ষার জন্য সিলেট-১ আসনের সাবেক এমপি মরহুম স্পিকার হুমায়ুন রশিদ চৌধুরী ও অর্থমন্ত্রী মরহুম এম. সাইফুর রহমানের আমলেই লালারগাঁও গ্রামবাসীকে সুরমা নদীর ভাঙ্গন থেকে রক্ষা করার জন্য প্রদক্ষে নিয়েছিল। কিন্তু এখন পর্যন্ত কোন প্রদক্ষেপ বাস্তবায়ন হয়নি।