সুনামগঞ্জে হোটেল শ্রমিক ফেডারেশনের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালন

    0
    242

    বাজারদরের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ নিম্নতম মূল মজুরি ১০ হাজার টাকা ঘোষণার দাবি

    আমারসিলেট টুয়েন্টিফোর ডটকম,২৬মেঃবাংলাদেশ হোটেল রেস্টুরেন্ট সুইটমিট শ্রমিক ফেডারেশন রেজিঃ নং বিঃ২০৩৭-এর ১৬-তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী  উপলক্ষে ২৫ মে বাংলাদেশ হোটেল রেস্টুরেন্ট মিস্টি বেকারী শ্রমিক ইউনিয়ন রেজিঃ নং বিঃ-২১২৬-এর সুনামগঞ্জ জেলা শাখার উদ্যোগে এক  আলোচনা সভা অনুষ্টিত হয়। শুক্রবার সন্ধ্যায় বাজার এলাকাস্থ কার্যালয়ে ইউনিয়নের সভাপতি মোঃ মইনুল হক রনির সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ হোটেল রেস্টুরেন্ট সুইটমিট শ্রমিক ফেডারেশন রেজিঃ নং বিঃ২০৩৭-এর কেন্দ্রীয় সদস্য ও সিলেট জেলা হোটেল শ্রমিক ইউনিয়ন রেজিঃ নং১৯৬৬-এর সাধারণ সম্পাদক সাদেক মিয়া, বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন সংঘ সুনামগঞ্জ জেলা কমিটির সভাপতি বাদল সরকার, ইউনিয়নের উপদেষ্ঠা চিত্তরঞ্জন তালুকদার এবং ছাত্র ইউনিয়ন সুনামগঞ্জ জেলা কমিটির সভাপতি মোঃ রইছ উদ্দিন ।

    হোটেল শ্রমিক ইউনিয়নের কোষাধ্যক্ষ আশরাফ শেখ মাকুলের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত আলোচনা  সভায় বক্তব্য রাখেন হোটেল শ্রমিক ইউনিয়ন সুনামগঞ্জ জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক মোঃ লিলু মিয়া, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মানিক মিয়া কাদেরী,  আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক মোঃ সাজিদুর রহমান, সদস্য জামিল হোসেন প্রমূখ।

    সভায় বক্তারা বলেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার ২০০৯ সালের ২৪ নভেম্বর হোটেল সেক্টরে কর্মরত শ্রমিক-কর্মচারীদের জন্য নি¤œতম মজুরীর গেজেট প্রকাশ করলেও অদ্যাবধি তা কার্যকর করা হয়নি। নি¤œতম মজুরির গেজেট ঘোষণার ৬ বছর অতিক্রান্ত হয়ে যাওয়ায় আজ নতুন মজুরি কাঠানো ঘোষণা জরুরী। তাছাড়া আগামী জুলাই মাস থেকে সরকারি কর্মচারী-কর্মতাদের বেতন দ্বিগুণ বৃদ্ধি করে পে-স্কেল কার্যকর করতে যাচ্ছে। যার অবশ্যাম্ভী প্রভাব বাজারে পড়বে। এমতবস্থায় বর্তমান বাজারদরের সাথে সংগতি রেখে হোটেল শ্রমিকদের জন্য ন্যূনতম মূল মজুরি ১০ হাজার টাকা ঘোষণা করতে হবে।

    বক্তারা আরও বলেন বাংলাদেশ শ্রম আইন-এর ৫ ধারায় নিয়োগপত্র ও পরিচয়পত্র, ৬ ধারায় সার্ভিস বই, ২(১০) ধারায় চাকুরীচ্যূতি জনিত ৪ মাসের নোটিশ পে, প্রতিবছর চাকুরীর জন্য ৪৫ দিনের গ্রাচ্যুয়েটি, ১০৩ ধারায় সপ্তাহে দেড়দিন সাপ্তাহিক ছুটি, ১০৮ ধারায় দৈনিক ৮ ঘন্টা সপ্তাহে ৪৮ ঘন্টা কাজ, অতিরিক্ত কাজের জন্য দ্বিগুণ মজুরী প্রদান, ১১৫ ধারায় বছরে ১০ দিন নৈমিত্তিক ছুটি, ১১৬ ধারায় ১৪ দিন অসুস্থাতার ছুটি, ১১৭ ধারায় প্রতি ১৮ দিন কাজের জন্য ১ দিন অর্জিত ছুটি, ১১৮ ধারায় ১১ দিন উৎসব ছুটি প্রদানের আইন থাকলেও হোটেল শ্রমিকদেরকে এই সকল আইনগত অধিকার হতে বি ত করা হচ্ছে। শ্রম আইনে স্বাস্থ্যকর পরিবেশে কাজ ও বাসস্থানের বিধান থাকলেও শ্রমিকরা অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে কাজ করতে ও থাকতে বাধ্য হন। হোটেল শ্রমিকরা দৈনিক ১০/১২ ঘন্টা অমানবিক পরিশ্রম করে অর্ধাহারে-অনাহারে পরিবার পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করতে বাধ্য হন, যার কারণে হোটেল শ্রমিকদের  মধ্যে চরম ক্ষোভ ও অসন্তোষ বিরাজ করছে।

    সভা থেকে, বাজারদরের সাথে সংগতিপূর্ণ নি¤œতম মূল মজুরি ১০ হাজার টাকা ঘোষণা, সরকার ঘোষিত নিম্নতম মজুরির গেজেট কার্যকর, শ্রমিকদের জন্য রেশনিং চালু, ৮ ঘন্টা কর্ম দিবস, নিয়োগ পত্র, পরিচয় পত্রসহ শ্রম আইন বাস্তবায়ন, সিলেটে স্থায়ী শ্রম আদালত ও যুগ্ম-শ্রম পরিচালকের কার্যালয় স্থাপন করার দাবি জানানো হয়। আলোচনা সভা শেষে এক বিক্ষোভ মিছিল শহর প্রদক্ষিণ করে ট্রাফিক পয়েন্টে এস সমাপ্ত হয়।