আজ থেকে সুনামগঞ্জে শাহ আরেফিনের ওরস শুরু

    0
    222

    আমারসিলেট24ডটকম,২৮মার্চঃ বৃহত্তর সিলেটের সুনামগঞ্জ জেলার  তাহিরপুর উপজেলার ‘গঙ্গারূপী’ যাদুকাটা নদীতে পূণ্যস্নানের আশায় এবং শাহ আরেফিনের মোকামে নিজ নিজ  ধর্মগুরু  ভজনের জন্য হাজার হাজার হিন্দু ও মুসলিম এসে জড়ো হয়েছেন প্রাচীন বাংলার প্রথম রাজধানী লাউড়েগড় এলাকায়। হিন্দু ধর্মাবলম্বী হাজারো নারী-পুরুষ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে দুর্গম পথ পাড়ি দিয়ে গঙ্গারূপী এই নদীতে আজ শুক্রবার সকাল ৬টা থেকে রাত ৪টা পর্যন্ত পূণ্যস্নান সম্পন্ন করবেন বলে জানা গেছে।অপরদিকে একই স্থানে মুসলমান সাধক  হজরত শাহ আরেফিন(রাঃ)’র মোকাম। আজ রাত থেকে আরম্ভ হবে তিন দিনব্যাপী এ মহান অলির ওরস মোবারক। হিন্দু-মুসলিমের এই মিলন উৎসবে মুখরিত এখন সীমান্ত নদী যাদুকাটা তীর। ঐতিহাসিকদের মতে বৃহত্তর সিলেটের সীমান্ত এলাকায় হিন্দু-মুসলিমের এটি বৃহত্তম মিলন উৎসব। এবারো শাহ আরেফিন(রাঃ)’র মোকাম ও যাদুকাটা নদীর তীরে অন্তত পাঁচ  সহস্রাধিক নানা পণ্যের দোকান বসছে।
    হিন্দুধর্মের মতে জানা যায়,হিন্দুধর্মের সাধকপুরুষ শ্রী অদ্বৈত আচার্য প্রাচীন বাংলার প্রথম রাজধানী গৌড়ের নবগ্রামে ১৪৩৪ খৃষ্টাব্দে জন্মগ্রহণ করেন। নবগ্রাম তাহিরপুর উপজেলার যাদুকাটা নদীতীরে অবস্থিত। তার পিতা কুবেরাচার্য্য ও মাতা নাভা দেবি। এ পূণ্যস্নান সম্পর্কে জানা যায়, শ্রী অদ্বৈত আচার্যের আট বছর বয়সে মা নাভা দেবী স্বপ্ন দেখেন তার শিশুপুত্র শঙ্খচক্র গদা পদ্ধধারী মহাবিষ্ণু। সন্তানের দ্যুতিময় মুখশ্রি প্রত্যক্ষ করে হতবিহ্বল নাভা দেবী পুত্রের স্বর্গীয় মুর্তির সম্মুখে আনত হয়ে শ্রী চরনোদক প্রার্থনা করেন। মাতা কর্তৃক সন্তানের লগুস্থানে পাদোদক প্রার্থনা করা অনুচিত।
    মায়ের স্বপ্নকথা শুনে অদ্বৈত প্রভু পৃথিবীর সপ্ততীর্থ (গঙ্গা, যমুনা, নর্দমা, স্বরস্বতি, গোদাবরি, কাবেরি ও সিন্ধু) জল একত্রিত করেন যাদুকাটা নদীতে। ওই জলে স্নান করে পূণ্যলাভ করেন মা নাভাদেবী। প্রায় ৭ শ বছর আগ থেকে এই বিশ্বাসেই নির্দিষ্ট দিনে যাদুকাটা নদীতে সনাতন ধর্মাবলম্বীরা পূণ্যস্নান সম্পন্ন করেন। এখন এই ধর্মীয় পার্বণ সার্বজনীন উৎসবে পরিণত হয়েছে।
    অন্যদিকে, আজ রাত থেকে যাদুকাটা নদীর অন্য পাড়ে  হজরত শাহ আরেফিনের মোকামে তিন দিনব্যাপী ওরশ  শুরু হবে।এখানে দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে   শাহ আরেফিন  (রাঃ) এর লাখো ভক্ত জড়ো হচ্ছেন সেখানে।
    উৎসব উপলক্ষে  হিন্দু ভক্তদের দক্ষিণায় নবগ্রাম মন্দির প্রাঙ্গণে তিথি থাকাকালীন সময়ে পাতলা সবজি খিচুরি সকলের জন্য প্রসাদ হিসেবে বিতরণ করা হয়। মেলায় শ্রাদ্ধ তর্পণ, মানত, অস্থি বিসর্জন দেওয়া হয় বলে নদীর তীরে নরসুন্দর দোকানের ভিড় জমে।নদীর জলের কাছে পূজা-তর্পণ-শ্রাদ্ধের পসরা নিয়ে বসেন বাঙালি পুরুষ পুরোহিতরা।

    অপরদিকে মুসলিম ভক্তদের মাজার জিয়ারত ও শিরনী বিতরণের এর মাধ্যমে শাহ আরেফিনের মোকামে সময় কাটবে।এখানে  নানা পণ্যের দোকান বসতে শুরু করেছে।

    কিভাবে যাওয়া যায়: বাদাঘাট বাজার হইতে ১০০/১২০ টাকায় মটরসাইকেল লাউড়ের গড় বাজার হইয়া ৫ নং বাদাঘাট ইউনিয়ন শাহ আরেফিন(রাঃ)  মাজারে যেতে হয় ।