সুনামগঞ্জে চাঁদাবাজ কর্তৃক সাংবাদিকের প্রাণনাসের হুমকি

    0
    315

    আমারসিলেট টুয়েন্টিফোর ডটকম,২৭জুলাই,মোজাম্মেল আলম ভূঁইয়াঃ সুনামগঞ্জে সংবাদ প্রকাশের জের ধরে দৈনিক আলোকিত বাংলাদেশ পত্রিকার জেলা প্রতিনিধি ও মানবাধিকার কমিশনের জেলা সাধারণ সম্পাদক আল-হেলালকে প্রাণে মারার হুমকি দিয়েছে ধোপাজান ও যাদুকাটা নদীর ফাজিলপুর বালিপাথর মহালের চিহ্নত চাঁদাবাজ তোফাজ্জল হোসেন ও তার সন্ত্রাসীরা। এঘটনার প্রেক্ষিতে গতকাল সোমবার সকাল ১০টায় সাংবাদিক আল-হেলাল পৌরশহরের মহিলা কলেজ রোড এলাকার আবুল হোসেনের ছেলে চাঁদাবাজ তোফাজ্জল হোসেন ও তার ছেলে জাকির হোসেনের বিরুদ্ধে থানায় জিডি নং-১১৬৭ দায়ের করেছেন।

    এর আগে গত রোববার সকাল ১১টায় জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে তথ্য সংগ্রহ করতে গেলে চাঁদাবাজ তোফাজ্জল ও তার বাহিনী সাংবাদিক আল-হেলালের ওপর হামলা চালানোর চেষ্টা করলে ওই কার্যালয়ে কর্মরত কর্মকর্তা,কর্মচারী ও উপস্থিত লোকজনের সহায়তায় তিনি রক্ষা পান। কিন্তু ওই সময় চাঁদাবাজারা সকলের সামনেই ওই সাংবাদিকের হাত-পা ভেঙ্গে প্রাণে মারার হুমিক দেয়।

    থানায় দায়েরকৃত জিডি ও একাধিক অভিযোগ সূত্রে জানাযায়, সরকারের কোটি কোটি টাকা রাজস্ব আদায়ের অন্যতম ক্ষেত্র জেলার তাহিরপুর উপজেলার যাদুকাটা,ফাজিলপুর ও সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার ধোপাজান নদীর বালিপাথর মহাল। কিন্তু সিন্ডিকেডের মাধ্যমে চাঁদাবাজ তোফাজ্জল হোসেন তার সন্ত্রাসী বাহিনী নিয়ে ড্রেজার ও বোমা মেশিন দিয়ে ধোপাজান নদীর তীর কেটে বালি-পাথর উত্তোলন করে বিক্রি করাসহ তাদের উত্তোলিত বালি ও পাথর পরিবহণকারী ইঞ্জিনের নৌকা,ভলগেট ও কার্গো থেকে টোলটেক্সের নামে ফাজিলপুর ও ধোপাজানসহ বিভিন্নস্থানে আবার তারাই অবৈধভাবে প্রতিদিন প্রায় ১৫লক্ষ টাকা চাঁদা উত্তোলন করেছে। অন্যদিকে যাদুকাটা নদীর তীর কেটে লক্ষ লক্ষ বালি ও পাথর বিক্রি করেছে তাহিরপুরের বাদাঘাট ইউনিয়ন চেয়ারম্যান নিজাম উদ্দিনের ভাই রিপন মিয়া ও বোরহান মিয়া।

    আর বাদাঘাট পুলিশ ক্যাম্পের নামে প্রতিনৌকা থেকে ৩থেকে ৫হাজার টাকা চাঁদা নিয়েছে এএসআই ফরহাদ। এছাড়া যাদুকাটা নদীর তীর দখল নিয়ে নিজাম বাহিনী ও এলাকাবাসীর মধ্যে হয়েছে একাধিক সংঘর্ষ ও মামলা-মোকদ্দমার ঘটনা। আর চাঁদাবাজদের কথা মতো চাঁদার টাকা না দিলে ব্যবসায়ী ও শ্রমিকদের মারপিট করাসহ নৌকা আটক করে পুলিশ দিয়ে করা হতো হয়রানী। এসব কারণে ধোপাজান ও ফাজিলপুর বালিপাথর মহালের চাঁদাবাজ তোফাজ্জল হোসেনসহ যাদুকাটা নদীর সন্ত্রাসী বাহিনীর বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রী,স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী,ভূমিমন্ত্রী,জেলা প্রশাসক ও জেলা পুলিশ সুপার বরাবরে একাধিক লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়েছে।

    সুনামগঞ্জ পৌরশহরের ট্রাফিক পয়েন্ট,যাদুকাটা ও ধোপাজান নদীর তীরে মানববন্ধন করেছে মানবাধিকার কমিশন,বালি-পাথর ব্যবসায়ী, শ্রমিক ও এলাকার ভূক্তভোগী অসহায় মানুষ। পরে দায়েরকৃত অভিযোগের প্রেক্ষিতে সাংবাদিকরা পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশিত করলে জেলা প্রশাসকের নির্দেশে র‌্যাব,বিজিবি ও পুলিশ নিয়ে টিম গঠন করে ম্যাজিস্ট্রেটের মাধ্যমে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে যাদুকাটা ও ধোপাজান নদীর তীর কাটাসহ চাঁদাবাজি বন্ধ করে দেয়। একারণে চাঁদাবাজ তোফাজ্জল হোসেন ও বালিপাথর খেকো সন্ত্রাসীরা সাংবাদিকদের ওপর ক্ষেপে যায়।

    এব্যাপারে সাংবাদিক আল-হেলাল বলেন,আমি সড়ক দূর্ঘটনায় পা ভেঙ্গে বর্তমানে অসুস্থ। কিন্তু সংবাদ প্রকাশের জেরে চাঁদাবাজ তোফাজ্জল হোসেন ও তার সন্ত্রাসী বাহিনী আমাকে অব্যাহত হুমকি দেওয়ায় আইনের আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়েছি,আমি এর সুবিচার চাই। সুনামগঞ্জ সদর থানার ওসি আব্দুল হাই বলেন,এব্যাপারে তদন্তপূর্বক আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।